জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশিদের জন্য যেসব দেশে যেতে আগে থেকে ভিসার প্রয়োজন হয় না তারমধ্যে ভুটান একটি। বাংলাদেশ থেকে কম দূরত্বের জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলোর মধ্যেও অন্যতম ভুটান। শুধুমাত্র পাসপোর্ট থাকলেই বাংলাদেশিরা কিছু ফি পরিশোধ করে ভুটানে ভ্রমণের অনুমতি পান।
হিমালয় পর্বতমালার পূর্বাংশে অবস্থিত ভুটান। দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। পাশাপাশি সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যময় জীবনযাপনের এক অনন্য উদাহরণ। তাই পর্যটকদের কাছে ভুটান বহুল আকাঙ্ক্ষিত একটি জায়গা।
ভুটানের অন্যতম ৫টি পর্যটন স্থান
১. টাইগার্স নেস্ট মনাস্ট্রি
নামে টাইগার থাকলেও বাস্তবে এই জায়গা বাঘের দেখা মেলে না। নীল পাইন এবং রোদরঞ্জন বনের মধ্যে একটি উঁচু পাহাড়ের উপর ঝুলে আছে টাইগার্স নেস্ট মনাস্ট্রি।
এই ব্যতিক্রমী মাঠটিতে যেতে পর্যটকদের প্রায় ৯০০ মিটারের মত উঁচুতে উঠতে হয়। সেখান থেকে চাইলে হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে এটির ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে। তারপর আরও একটি সরু এবং খাড়া সিঁড়ি বেয়ে উঠলেই পৌঁছে যাবেন মনাস্ট্রিতে।
মঠটি থেকে পারো উপত্যকার দৃশ্য অত্যন্ত সুন্দর। স্থানীয়দের বিশ্বাস, গুরু রিনপোচে বাঘের পিঠে চড়ে প্রথম এখানে বৌদ্ধ ধর্ম নিয়ে এসেছিলেন। অত্যন্ত পবিত্র এবং আকর্ষণীয় এই জায়গায় প্রত্যেক ভুটানি জীবনে অন্তত একবার হলেও দর্শন করে যেতে চান।
২. পুনাখা জং
রাজধানী থিম্পু থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে এখানে পৌঁছানো যায়। ভুটানের এক সময়কার রাজধানী এই পুনাখা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ২০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত একটি উপত্যকা। ‘পুনাখা জং’কে অনেকে পুংথাং দেওয়াচেন ফোড্রং (মহান সুখের প্রাসাদ) বলেও ডাকেন। ভুটানের দ্বিতীয় প্রাচীনতম এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম এই জংয়ে ফো চু (পুরুষ) এবং মো চু (মহিলা) নামক দুটি নদী মিলিত হয়েছে। এক সাথে মিলিত হলেও এই নদীর পানির রঙে লক্ষণীয় পার্থক্য দেখা যায়।
পুনাখা জং একটি কাঠের সেতুর মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সাথে যুক্ত হয়েছে। আবহাওয়ার দিক দিয়ে নাতিশীতোষ্ণ এই অঞ্চলে প্রাচীন যুগের অনেক মূল্যবান ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। বছরব্যাপী পর্যটকদের জন্য ভুটানের অন্যতম সেরা জায়গা এই পুনাখা উপত্যকা।
৩. জুরি জং হাইক
পারো উপত্যকাকে উপর থেকে এক নজরে দেখার জন্য জুরি জং উপযুক্ত স্থান। গৌতম বুদ্ধ ৮ম শতাব্দীতে জুরি জংয়ে অবস্থিত গুহায় বসে ধ্যান করতেন। শান্তি এবং পবিত্রতায় মোড়ানো এই স্থানটি ভুটানি এবং বিদেশি পর্যটক- উভয়ের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।
জাদুঘরে অবস্থিত ওয়াচটাওয়ার থেকে হাঁটা শুরু করলে ৩০ মিনিট সময় লাগবে এখানে পৌঁছতে এবং উমার দিকে বের হতে অতিরিক্ত ১ ঘণ্টা লাগবে। পর্যটকরা চাইলে ট্র্যাকিং করার সময় এখানে বসে বিশ্রাম নিতে পারেন এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।
৪. উমা পারো হোটেল
পারো বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১০ মিনিটের নৈসর্গিক পথ পাড়ি দিলেই পৌঁছে যাবে উমা পারো হোটেল। চারপাশে পাহাড় এবং ঘন পাইন বনে ঘেরা এই হোটেল পর্যটকদের প্রিয় স্থান। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একমাত্র বুটিক হোটেলগুলোর মধ্যে এটি একটি।
এক বেডরুমের ভিলাসহ এই হোটেলে রয়েছে বন ভিউ রুম, ভ্যালি ভিউ রুম, ১৮০ ডিগ্রি ভিউসহ কোমো স্যুট।
৫. শীতের গ্যাংটে উপত্যকা
গ্যাংটে উপত্যকা হিমালয়ের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক উপত্যকাগুলির একটি। রাজধানী থিম্পু থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা দূরে অবস্থিত এই উপত্যকা। অনেকে এটিকে ভুটানের শাংরি-লা বলেন। ঠিক যেমন ভুটান ‘বিশ্বের অন্যতম সুখী দেশ’ হিসেবে পরিচিত; মানে ‘পৃথিবীর শেষ শাংগ্রি-লা’।
ভুটানে সব উপত্যকা ঘন গাছপালা দিয়ে আবৃত। তাই এমন বিশাল সমতল জায়গা খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত বিরল অভিজ্ঞতা। এই ট্র্যাকটিতে গোগোনা এবং খোটোখা নামক গ্রাম পার হয়ে তৃণভূমি এবং প্রশস্ত মাঠের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। উপত্যকাটি তুষারপাতের জন্য বিখ্যাত।
এই অঞ্চলে কালো গলার ক্রেনও দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া ব্ল্যাক মাউন্টেনসহ প্রচুর উদ্ভিদ এবং প্রাণী দেখতে পাওয়া যায়। প্রকৃতিপ্রেমী এবং ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি একটি সুন্দর ও মনোরম জায়গা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।