জুমবাংলা ডেস্ক : জলজ প্রাণী ভোঁদর। মাছ তাড়া করে শিকার করতে পছন্দ করে এই প্রাণীটি। নড়াইলের সদর উপজেলার গোয়াইলবাড়ি, পংকবিলা এবং রতডাঙ্গা গ্রামে মাছ শিকারের প্রায় ৫০০ বছরের এই প্রাচীন প্রথা এখনো টিকে আছে। তবে, বর্তমানে নদীতে আগের মতো মাছ না থাকায় এখন ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার পদ্ধতি বিলুপ্তির পথে। যারা এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন তারাও এখন ভালো নেই। খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে তাদের দিন চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার সদর উপজেলার গোয়াইলবাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তপন বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি নদীতে ভোঁদড় দিয়ে মাছ ধরছেন। কথা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, তার বাপ-ঠাকুরদা ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার করতেন। এখন তিনি এ পদ্ধতিতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
তিনি বলেন, এখন নদীতে যে মাছ পাওয়া যায় তাতে কোনোদিন সংসার চলে, আবার কোনোদিন চলে না। শীত মৌসুমে একটু বেশি মাছ পাওয়া যায়। এ অঞ্চলে জেলেরা ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় তা কমতে থাকে। নদীতে মাছ কমে যাওয়া ও ভোঁদড় পালনে খরচের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় মাছ শিকারের প্রাচীন এই পদ্ধতিতে থেকে সরে যাচ্ছেন জেলেরা। অধিকাংশ জেলে তাদের ভোঁদড় বিক্রি করে দিয়েছেন। গোয়াইল বাড়ির ২০টি পরিবার এই পেশায় জড়িত। তাদের অধীনে ৫টি নৌকায় ১৬টি ভোঁদড় আছে।
নড়াইল সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, দীর্ঘদিন ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারে জেলেদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন তারা। মাছ ধরার পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কার্ডধারী জেলেদের দুইটি করে ছাগল ও খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ এম বদরুজ্জামান বলেন, ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারের পদ্ধতি টিকিয়ে রাখতে আলাদা কোনো কার্যক্রম নেই। মূলত জলাশয়ে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।