জুমবাংলা ডেস্ক : প্রতি বছর শীত মৌসুম শুরুর আগে থেকেই পর্যটকে মুখরিত হয় সৌন্দর্য্যে ভরা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক ও শুভলং ঝর্নাসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পর্টগুলো। কিন্তু এবছর রাজনৈতিক অস্থিরতায় মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে রাঙামাটি।
প্রতি বছর অক্টোবর-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীত মৌসুমে হ্রদ-পাহাড়ের শহর প্রতিদিন হাজারো পর্যটকের সমাগম হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর মৌসুমের শুরুতেই সারাদেশে বিএনপি-জামাতের অবরোধ-হরতালের কারণে পর্যটন শহর রাঙামাটিতে টুরিস্ট নেই বললেই চলে।
এদিকে, রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসার সাথে জড়িত হোটেল-মোটেল ও টুরিস্ট বোট মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সরকার বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দফায় দফায় ডাকা হরতাল ও অবরোধের কারণেই প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীসহ এ খাতের সঙ্গে জড়িতরা।
রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, শীত মৌসুমে এলে রাঙামাটি পর্যটনে প্রচুর টুরিস্ট এর সমাগম হয়। প্রতিদিন শত শত পর্যটক টুরিস্ট বোট নিয়ে কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ করেন। কিন্তু এ বছর রাজনৈতিক দলগুলোর অবরোধ-হরতালের কারনে টুরিস্ট নাই। পর্যটক না আসার ফলে আমাদের প্রতি মাসে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হচ্ছে।
রাঙামাটি শহরের হোটেল নীডস হিল ভিউ’র ম্যানেজার মো. রাসেল বলেন, টুরিস্ট না থাকার কারণে হোটেলে রুম সব খালি পড়ে আছে। আমরা কর্মচারীদের বেতন দিতেও পারছি না।
রাঙামাটি শহরের সিএনজি অটোরিকশাচালক মো. জসীম ও সুজন জানান, দফায় দফায় হরতালের কারণে রাঙামাটিতে টুরিস্ট আসছে না। এতে আমাদের আয় কমে গেছে। আমাদের দৈনিক মালিককে ৪শ টাকা করে দিতে হয়। বর্তমানে পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে দিন যাপন করছি।
এদিকে, হরতালের কারণে মেঘের বাড়ি থ্যাত সাজেকেও টুরিস্টদের আনাগোনা অনেকটা কম বলে জানিয়েছেন রিসোর্ট মালিকরা। সাজেকের কুড়েঘর রিসোর্টের মালিক মো. মামুন বলেন, সাজেকে বর্তমানে প্রাায় ৪০ ভাগ টুরিস্ট ভ্রমণ করছেন। এ সময় কিন্তু টুরিস্টদের পর্যাপ্ত ভিড় থাকার কথা কিন্তু দেশের পরিস্থিতির কারণে পর্যটকরা আসতেছে না তেমন।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, রাঙামাটি পর্যটনে টুরিস্ট কম আসছে। বর্তমানে রাঙামাটিতে শতকরা ২০ ভাগ টুরিস্ট রাঙামাটি ভ্রমণ করছেন। হরতাল-অবরোধের কারণে পর্যটক সমাগম কম হচ্ছে।
রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশ এর পরিদর্শক মোঃ জহিরুল আনোয়ার বলেন, স্থানীয় এবং রাঙামাটির পাশের জেলা থেকে যেসকল টুরিস্টরা বেড়াতে আসছেন তাদেরকে নিরাপত্তা দিতে আমরা সার্বক্ষনিক প্রস্তুত আছি। জেলা পুলিশ এবং টুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে আমরা নিরাপত্তার কাজ করছি। আমাদের পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকেও ও টহল পুলিশরা পর্যটন স্পটগুলোতে সবসবময় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আছে।
পরিদর্শক মো. জহিরুল আনোয়ার আরো বলেন, আমরা টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা টুরিস্টদের রাঙামাটি ভ্রমণের জন্য আহবান জানাই। টুরিস্টদের নিরাপত্তা দিতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি।
তবে নির্বাচনের পরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জেলায় পর্যটক আরো বাড়বে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হবে মনে করছেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।