আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় ১৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। তবে দলটি আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টির কাছে বড় ব্যবধানে হারতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ, নীতিগত ব্যর্থতা, অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে প্রধানমন্ত্রী সুনাক ও কনজারভেটিভ পার্টি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সম্প্রতি এক প্রাক-নির্বাচনি সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
গত ৭ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে ১৮ হাজার ৭৬১ জন ব্রিটিশ নাগরিকের সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায় ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইউগভ। এতে দেখা যায়, আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টি ভূমিধস বিজয় অর্জন করবে। আর কনজারভেটিভ পার্টির টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান হবে।
ইউগভ আরও দাবি করেছে, ১৯৯৭ সালে টনি ব্লেয়ারের কাছে ভয়াবহভাবে হেরেছিলেন জন মেজর। এবার তার থেকেও খারাপ ফলাফল করতে পারে কনজারভেটিভরা। কারণ এবারের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির বহু নামিদামি নেতাও পরাজয়ের স্বাদ পাবেন, এই তালিকায় প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নামও রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে দলগুলোকে ৬৫০ আসনের মধ্যে ৩২৬টি আসন নিশ্চিত করতে হয়।
ইউগভ বলছে, আসন্ন নির্বাচনে লেবার পার্টি ৪০৩ আসন নিশ্চিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিপরীতে কনজারভেটিভরা ১৫৫টি আসন জিতবে বলে পূর্বাভাস পাওয়া গেছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে একই ধরনের ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো।
পলিটিকোর ‘পোল অব পোল’-এ দেখা যায়, ৪৪ শতাংশ ব্রিটিশ নাগরিক লেবার পার্টিকে ভোট দিতে ইচ্ছুক, যেখানে মাত্র ২৩ শতাংশ আবারও কনজারভেটিভ পার্টিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
আসন্ন নির্বাচনের প্রচারণায় সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির রূপরেখায়- মুদ্রাস্ফীতি অর্ধেক করা, জাতীয় ঋণ কমানো, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) উন্নত করা, অবৈধ অভিবাসী বন্ধ করা, অর্থনীতির উন্নতি এবং কর কমানোর ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
তা সত্ত্বেও, আগামী ২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া স্থানীয় কাউন্সিল এবং মেয়র নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয়ের আশঙ্কা করছে ইউগভ। এছাড়াও দলীয় এমপিদের মধ্যে তার নেতৃত্বের প্রতি ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের কারণে শিগগিরই অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে পারেন সুনাক। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মাত্র ৫৩ জন এমপির স্বাক্ষর প্রয়োজন।
এদিকে লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন- মূল্যস্ফীতি কমানো ও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে আবাসন, পরিবহন এবং অবকাঠামোর মতো খাতে ব্যয় বাড়িয়ে জাতীয় চাপ কমানোর পরিকল্পনা করেছে তার দল।
অন্যদিকে আইন অনুযায়ী- ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে একটি আগামী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সরকারের। তবে অবিলম্বেই আগামী নির্বাচনের জন্য একটি তারিখ ঘোষণার জন্য সুনাককে আহ্বান জানিয়েছে লেবার পার্টি। একই সঙ্গে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে গত ১৫ মার্চ বিক্ষোভও করেছে দলটি।
সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।