স্পোর্টস ডেস্ক : চলতি আইপিএলের নিলামের সময় শশাঙ্ক সিংয়ের নামটি আলোচনায় এসেছিল বেশ কয়েকবার। নিলাম থেকে নাম বিভ্রাটে পড়ে ভুল করে তাঁকে দলে টেনেছিল পাঞ্জাব সুপার কিংস – এমন খবর চাউর হয়। শোনা যায়, যে শশাঙ্ককে দলে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন প্রীতি জিনতারা, ভিত্তিমূল্য ২০ লাখ রুপিতে দলে টানার পরে বুঝতে পারে, তারা অন্য শশাঙ্ক সিংকে কিনেছে। এ নিয়ে সেসময় জলঘোলা কম হয়নি।
পরে অবশ্য পাঞ্জাব জানায়, তারা ভুল করেনি। এই শশাঙ্ককেই তারা কিনতে চেয়েছিল, নিলামে দুজনের নাম শশাঙ্ক সিং থাকায় তারা ওই মুহুর্তে ধন্দে পড়ে গিয়েছিল।
সে দাবি সত্যি হোক বা মান বাঁচানো, ৩২ বছর বয়সী ‘ভুল’ শশাঙ্ককেই দলে স্বাগত জানায় পাঞ্জাব। সেই শশাঙ্কই এখন পাঞ্জাবে ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছেন। গতকাল গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে শেষ দিকে জমে ওঠা ম্যাচে সেই শশাঙ্কের হাত ধরেই জিতেছে পাঞ্জাব সুপার কিংস।
গুজরাটের ১৯৯ রান তাড়া করতে নেমে ৭০ রান তুলতেই ৪ উইকেট নেই পাঞ্জাবের। এমন পরিস্থিতি থেকে ২৯ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ২১০ স্ট্রাইকরেটে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন শশাঙ্ক। শুধু তা-ই নয়, দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন ম্যাচের নায়ক হয়ে।
অবশ্য যতটা সহজে লেখা হলো, ম্যাচের শেষভাগটা এতটা সহজ ছিল না। জয়ের জন্য শেষ ২ ওভারে পাঞ্জাবের প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। মোহিতের করা ১৯তম ওভারে ১৮ রান পায় ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। শেষ ৬ বলে দরকার মাত্র ৭ রান। পাঞ্জাবের জয় তখন সময়ের ব্যাপার বলে ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ওই ওভারে দর্শন নালকান্দের হাতে বল তুলে দেন গুজরাট অধিনায়ক শুবমান গিল, যে দর্শন আগের ম্যাচে বোলিংই করেননি।
প্রথম বলেই ৩১ রান করা আশুতোষ শর্মাকে আউট করেন দর্শন। এরপর ওয়াইড দিয়ে পরের বল ডট। শেষ ৪ বলে ৬ রানের সমীকরণ। পরের বলে নতুন ব্যাটসম্যান হারপ্রীত ব্রার সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন শশাঙ্ককে। তখনো ৩ বলে ৫ রান দরকার পাঞ্জাবের। ম্যাচের পাল্লা তখন এদিক-ওদিক দুলছে। শঙ্কার মেঘও জমা হতে থাকে। কিন্তু চতুর্থ বলে দর্শনকে শর্ট থার্ড অঞ্চল দিয়ে চার মেরে সব মেঘ দূরে পাঠিয়ে দেন শশাঙ্ক। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পাঞ্জাবকে দ্বিতীয় জয় এনে দেন ভুল করে দলে ঢোকা ২০ লাখ রুপির এ ব্যাটসম্যান।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে গিলের ৪৮ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের কল্যাণে ১৯৯ রানের সংগ্রহ পায় গুজরাট। জবাবে পাঞ্জাবের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান মিলে নিতে পারলেন মোটে ৭৮ রান।
তবে শশাঙ্ক সিং মাঠে নামার পর পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। প্রথমে সিকান্দার রাজার সঙ্গে ২২ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন শশাঙ্ক, যেখানে রাজার অবদান ১১ বলে ১২ রান। রাজা আউট হলে জিতেশকে নিয়ে আবারও ১৯ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু ৮ বলে ১৬ রান করে জিতেশ আউট হলে আবারও ম্যাচ হেলে পড়ে গুজরাটের দিকে।
এমন পরিস্থিতিতেও হাল ছাড়েননি শশাঙ্ক। বদলি নামা আশুতোষ শর্মাকে নিয়ে আবারও ব্যাট চালাতে থাকেন তিনি। শেষে তো নাটকীয়ভাবে জিতিয়েই দিলেন পাঞ্জাবকে!
অবশ্য শশাঙ্কের নিলাম নাটকীয়তার কাছে এ তো কিছুই না!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।