আরএম সেলিম শাহী: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের সীমান্তে সোমেশ্বরী নদীতে ৫৪ বছরেও নির্মিত হয়নি সেতু। ফলে সীমান্তের ১২টি গ্রামের হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, এ নদীর উপর দিয়ে খাড়ামুড়া, রাঙ্গাজান, বালিজুরি, তাওয়ায়াকোচা, জুকাকুড়া, গুরুচরনদুধনই, হালুয়াহাটি, কালিবাড়ি, মালাকোচা, বিলভরট ও বিষ্ণুপুরসহ ১২টি গ্রামের হাজারো মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু এ নদীর উপর একটি সেতু না থাকায় বছরের পর বছর ১২টি গ্রামের হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হকসহ গ্রামবাসীরা জানান, সোমেশ্বরী নদীর বালিজুরিতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি উঠে দেশ স্বাধীনের পর থেকেই। বিভিন্ন সময় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে আশ্বাস ও পাওয়া গেছে। কিন্তু ৫৪ বছরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। শ্রীবরদী উপজেলা সদর থেকে বালিজুরি বাজারের দুরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। বালিজুরি বাজারের উত্তর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সোমেশ্বরী নদী। সীমান্ত থেকে নেমে আসা এ নদীটি খাড়ামুড়া গ্রামের দুপাশ দিয়ে বয়ে গেছে। ফলে খাড়ামুড়া গ্রামটি বিচ্ছিন্ন একটি গ্রামে পরিণত হয়েছে।
বালিজুরি গ্রামের গোলাপ হোসেন, আব্বাস আলী, কুদ্দুস মিয়াসহ গ্রামবাসীরা জানান, এ গ্রামে নারী পুরুষ ও শিশুসহ প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস। এ গ্রামের রাস্তা-ঘাটের করুণ অবস্থা। এ গ্রামের বাসিন্দাদের সোমেশ্বরী নদী পাড়ি দিয়ে হাট-বাজার, স্কুল কলেজে যাতায়াত করতে হয়। নদী পার হতে বর্ষা মৌসুমে নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমী বাঁশের সাকোই একমাত্র ভরসা।
বালিজুরি বাজার থেকে খাড়ামুড়া ও রাঙ্গাজান গ্রামের ভারত সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ। গ্রামবাসীরা জানান, রাস্তাঘাটের করুণ অবস্থার কারণে এ পথে কোন যানবাহন চলাচল করেনা। বালিজুরি এলাকাটি সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এখানে রয়েছে তাওয়াকোচা বিজিবি ক্যাম্প, বালিজুরি ফরেস্ট রেঞ্জ অফিস, বালিজুরি উচ্চ বিদ্যালয়, খারামুড়া দাখিল মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। সোমেশ্বরী নদীর উপর একটি সেতুর অভাবে এ পথে যাতায়াতকারী মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তাওয়াকোচা গ্রামের রহমত আলী, মহসিন আলী, মোরশেদ আলমসহ গ্রামবাসীরা জানান, পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন আসে। সে সময় জনপ্রতিনিধিরা সোমেশ্বরী নদীর বালিজুরি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে আমাদের কাছে ভোট নেন। কিন্তু নির্বাচনের পর কোন জনপ্রতিনিধি আমাদের আর খোঁজখবর নেয় না।
তারা বলেন, এখানে একটি সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। স্কুল কলেজর ছাত্র-ছাত্রীরা সময়মত স্কুল- কলেজে যেতে পারছে না। জরুরী ভিত্তিতে কোন রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে পারছে না গ্রামবাসীরা। উৎপাদিত কৃষি পণ্য সময়মতো বাজারজাত করতে পারছেন না কৃষকরা। গবাদি পশু পারাপারে চরম বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে কৃষকদের। সোমেশ্বরী নদীর বালিজুরিতে জরুরি ভিত্তিতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তারা।
শেরপুরের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখানে একটি সেতু প্রকল্প প্রনয়ণ করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।