জুমবাংলা ডেস্ক : মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে ধলেশ্বরী নদীর তীরে ভোর হতেই শুরু হয় কেনাবেচার হাঁকডাক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পাইকারদের আনাগোনা। সন্ধ্যা পর্যন্ত আনাগোনার যবনিকাপাত শেষে বাড়ি ফেরে তারা। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত মজুদ। তরমুজ বেচাকেনার এমনই এক পাইকারি হাট বসে থাকে জেলা শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুর এলাকার ধলেশ্বরীর তীরে। আর এ হাটে কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন।
আজ শনিবার (২৩ মার্চ) পাইকারি হাটের ১৩টি আড়ত সরজমিন ঘুরে জমাজমাট বেচাকেনার চিত্র দেখা গেছে। ভোরের আলো ফুটতেই পাইকারদের পদচারণা চোখে পড়ে। বেলা ১১টার দিকে পাইকারদের ভিড়ে মুখর হয়ে ওঠে পুরো হাট। ধলেশ্বরী তীরের এ হাটে ট্রলার ছাড়াও সড়ক পথে ট্রাকে করে তরমুজ আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। হাটের একেকটি আড়তের সামনে থরে থরে সাজানো থাকে হাজারো পিস তরমুজ। এরপর ৫০ থেকে ১০০ পিস তরমুজের স্তূপ করে বিক্রির জন্য ডাক দেওয়া হয়। সেখানে অংশ নেয় আগত পাইকাররা।
হাট থেকে পাইকারদের কেনা একেকটি বড় সাইজের তরমুজের দাম পড়ে থাকে ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। মাঝারি সাইজের দাম পড়ে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা ও ছোট সাইজের একেকটি তরমুজের দাম পড়ে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা।
আড়তদাররা জানান, বরিশাল, ফরিদপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন উৎপাদনকারী অঞ্চল থেকে এ হাটে তরমুজ আসে। তবে এ হাটে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর জনপ্রিয় তরমুজের সমারোহ বেশি হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় এক লাখ পিস তরমুজ আসে এ হাটে। তাছাড়া মুন্সীগঞ্জ ছাড়াও দেশের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, দোহার ও গাজীপুর থেকে পাইকাররা এ হাটে তরমজু কিনতে এসে থাকেন।
মুক্তারপুর পাইকারি হাটের মায়ের দোয়া আড়তের স্বত্বাধিকারী মো. জনি গাজী জানান, তার নিজের আড়তে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রির কথা। তার মতোই প্রতিদিন আড়তে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি হয়ে থাকে। কাজেই সবগুলো আড়ত মিলিয়ে এ হাটে কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হয়।
পটুয়াখালী রাঙ্গাবালীর কৃষক গোবিন্দ চন্দ্র দাস জানান, সবেমাত্র জমি থেকে তরমুজ উত্তোলন শুরু হয়েছে। তাই মৌসুমের শুরুতে বিশেষ করে রোজায় চাহিদা বেশি থাকায় দাম একটু বেশি। তিনি বলেন, এবছর চারা আবাদের পরপরই ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় ২৫ ভাগের মতো চারা নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া তরমুজ আনতে পরিবহন খরচ অনেক। শ্রমিক-সার সবকিছুর দাম বেশি থাকায় আমাদের এবছর প্রতিটি তরমুজ উৎপাদনে খরচ বেশি পড়েছে। তবে এখন দাম বেশি হলেও সামনের দিকে দাম কমে যাবে।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও বাজারের পাইকার বিল্লাল হোসেন বলেন, আমি সপ্তাহে দুবার এ হাটে কিনতে আসি। এখানে প্রচুর পরিমাণে তরমুজ ওঠে। সারাদিনই তরমুজ পাওয়া যায়। সব সাইজের তরমুজ এখানে পাওয়া যায়। তাই দূরদূরান্তের পাইকাররা এখানে ছুটে এসে থাকেন। পছন্দ অনুযায়ী তরমুজ কেনার উপযুক্ত এ হাট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।