লাইফস্টাইল ডেস্ক : শীত এলেই দেখা যায় অনেক শিশু বা বয়স্ক ব্যক্তি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আবার অনেকে পুরো শীতজুড়ে অসুস্থ থাকেন। এর বেশির ভাগ হয়ে থাকে বাতাসের অ্যালার্জি বা ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জির কারণে।
ঠান্ডা বাতাস, সিগারেটের ধোঁয়া, সুগন্ধি, তীব্র গন্ধ, পত্রিকা বা বই-খাতার ধুলা যাতে মাইট থাকে, ফুলের রেণু, মোল্ড ইত্যাদির উপস্থিতি অনেকেই একেবারে সহ্য করতে পারেন না। এসবের উপস্থিতিতে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি বা অ্যাজমা, সর্দি ইত্যাদির দেখা দেয়। এসব বিষয়কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এলারজেন বলা হয়। এসব এলারজেনজনিত উপসর্গকে আমরা অ্যালার্জি বলে থাকি। সুতরাং প্রচণ্ড শীতেও অনেকের জন্য এলারজেন হিসেবে কাজ করে এবং এ কারণে সৃষ্ট উপসর্গকে কোল্ড অ্যালার্জি বলা হয়।
যে কারণে হয় : আমাদের নাসারন্ধ ও শ্বাসনালিতে স্নায়ুকোষের কিছু রিসেপ্টর আছে। এ রিসেপ্টরগুলো আবার এক জোড়া নার্ভের সঙ্গে যুক্ত। যার কাজ হচ্ছে শ্বাসনালি ও কণ্ঠনালির মাংসপেশির সংকোচন ও প্রসারণে সাহায্য করা। এ জন্য এলারজেনগুলো যখন শ্বাসনালির রিসেপ্টর নার্ভকে উদ্দীপ্ত করে, তখন শ্বাসনালির মাংসপেশির সংকোচন ঘটে এবং শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি দেখা দেয়।
সাধারণত খুব কম বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে এর প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। তবে অ্যালার্জি যে কোনো বয়সেই হতে পারে।
উপসর্গ : নাক দিয়ে পানি পড়ে, নাক চুলকায়, কাশি, শ্বাসকষ্ট, বাঁশির মতো আওয়াজ বের হওয়া ইত্যাদি।
কী করণীয় : অ্যালার্জি টেস্ট করে কারণ নির্ণয় করে তা পরিহার করে চলা উচিত। ঠান্ডা বাতাস থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এক ধরনের মুখোশ (ফিল্টার মাস্ক) বা মুখবন্ধনী ব্যবহার করা যেতে পারে; যা ফ্লানেল কাপড়ের তৈরি এবং মুখের অর্ধাংশসহ মাথা, কান ঢেকে রাখে। ফলে ব্যবহারকারীরা উত্তপ্ত নিঃশ্বাস গ্রহণ করতে পারেন। সালবিউটামল ইনহেলার বা ওষুধ শ্বাসকষ্ট ভাব কমে আসতে সাহায্য করে।
দীর্ঘমেয়াদি ভালো থাকার জন্য স্টেরয়েড ইনহেলার নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ক্ষেত্রবিশেষে ভ্যাকসিন ব্যবহার করলে কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার অনেক কমে যায়। ফলে কর্টিকোস্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। শীতের শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে পারেন।
যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তারা এ সময় ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল বা বেশি ধোয়াধুয়ি করা এড়িয়ে যান। ঝাড়মোছ করার সময় মাস্ক পরে নিতে পারেন। সবসময় দরজা-জানালা বন্ধ না করে ঘরে আলো-বাতাস চলাচল করতে দিন।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও শিশু পালমনোলজিস্ট, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।