লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাজার থেকে একটু ধনেপাতা বা পুদিনা পাতা কিনে এনেছেন রান্নায় দেওয়ার জন্য। রান্নায় যে-টুকু লাগবে, সে টুকু দেওয়ার পর বাকিটা তুলে রেখেছিলেন ফ্রিজে। কিন্তু দিন দুয়েক পরে বার করেই মাথায় হাত! দেখলেন, ধনেপাতার গোটা বান্ডিলটাই গিয়েছে পচে!
এমনিতেই শীতকাল ছাড়া ধনেপাতা, পুদিনা পাতা সাধারণত খুব একটা ভাল পাওয়া যায় না, বা পাওয়া গেলেও তার খুব দাম হয়। তাই সেগুলি পচে গেলে খুবই গায়ে লাগে। তার উপর বর্ষাকালে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় সহজেই ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা পচে যায়। তাই ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা কীভাবে বেশিদিন টাটকা রাখবেন ও রান্নায় ব্যবহার করতে পারবেন, আজ আমরা সে নিয়ে আলোচনা করব।
১. ফ্রিজে কীভাবে রাখবেন?
যতই ফ্রিজে এয়ারটাইট পাত্রে করে ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা রাখুন, দিন দুয়েক পরেই দেখবেন সেগুলি পচে যাচ্ছে। বাজার থেকে ধনেপাতা বা পুদিনা পাতা কিনে আনার পরে সেগুলির শিকড়গুলি কেটে ফেলুন। এরপর ডাঁটি থেকে পাতাগুলিকে ছাড়িয়ে নিন। শুকনো বা পচা পাতা বেছে ফেলে দিন।
এরপর একটি পাত্রে জল নিয়ে তার মধ্যে অল্প একটু হলুদগুঁড়ো দিয়ে আধঘণ্টাখানেক পাতাগুলিকে সেই জলে ভিজিয়ে রাখুন, তারপর জল থেকে তুলে নিয়ে ভাল করে জল ঝরিয়ে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন। এরপর একটি এয়ারটাইট পাত্রে প্রথমে একটি পেপার টাওয়েল বা ন্যাপকিন দিয়ে তার উপরে ধনেপাতা ও পুদিনাপাতাগুলিকে রাখুন।
এবার তার উপরে আর একটি পেপার টাওয়েল দিয়ে কৌটোর ঢাকা বন্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিন। পেপার টাওয়েল ধনেপাতা বা পুদিনা পাতা থেকে বেরনো বাড়তি জল বের করে দিয়ে পাতাগুলিকে বেশিদিন টাটকা রাখতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে আপনি শুকনো সুতির কাপড়ও ব্যবহার করতে পারেন। এইভাবে রাখার ক্ষেত্রে দেখবেন, ধনেপাতা ও পুদিনা পাতার মধ্যে যেন জল না থাকে।
২. জলে ডুবিয়ে টাটকা রাখুন
বাজার থেকে টাটকা ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা কিনে সেগুলিকে ভাল করে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। শুকনো পাতা ফেলে দিন। এরপর কাঁচি দিয়ে পুদিনা পাতার তলার ডাঁটিগুলিকে কেটে নিন। এবার সেগুলিকে জল ভর্তি একটি পাত্রে অর্ধেক ডুবিয়ে রেখে দিন।
একদিন ছাড়া ছাড়া জল পালটে দিন। দেখবেন দীর্ঘদিন পর্যন্ত পুদিনা পাতা টাটকা থাকছে। আপনি এক্ষেত্রে মিনারেল ওয়াটারও ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই পদ্ধতির চেয়ে ফ্রিজেই ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা সংরক্ষণ করা বেশি কার্যকরী।
৩. পেপার টাওয়েলের সাহায্য নিন
একগুচ্ছ মোটা পেপার টাওয়েল নিয়ে সেটিকে জলে ভাল করে ভিজিয়ে নিন। এরপর সেগুলিকে একটি পরিষ্কার জায়গায় রেখে তার উপরে আগে থেকে পরিষ্কার করে রাখা ধনেপাতা ও পুদিনা পাতাগুলিকে রাখুন। এবার সব সুদ্ধ মুড়ে নিন।
খেয়াল রাখবেন কোনও পাতা যেন পেপার টাওয়েলের বাইরে না থাকে। তাহলেই কিন্তু সেগুলি দ্রুত শুকিয়ে যেতে থাকবে। এই অবস্থায় পেপার টাওয়েলটিকে একটি এয়ারটাইট প্লাস্টিকের পাত্রে রেখে ঢাকনা বন্ধ করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিন। পেপার টাওয়েল যতক্ষণ ভিজে থাকবে, ততক্ষণ পাতাগুলিও টাটকা থাকবে। ফলে টাওয়েলটি শুকিয়ে গেলেই সেটিকে ভেজাবার ব্যবস্থা করতে ভুলবেন না।
তবে এইভাবে রাখলে পাতাগুলিকে খুব একটা চেপে-চেপে না ঢোকানোই ভাল। তাহলে সেগুলি দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৪. আইস কিউবে টাটকা পাতা
এছাড়া অনেকে আইস কিউবে করেও ধনেপাতা বা পুদিনা পাতা টাটকা রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন। তবে এই পদ্ধতির ঝামেলা বেশি, এবং ধনেপাতার চেয়ে পুদিনা পাতা টাটকা রাখতেই এই পদ্ধতি বেশি অবলম্বন করা হয়।
আইস ট্রে-তে কিউবগুলির মধ্যে পুদিনা পাতাগুলি ডাঁটি থেকে ছাড়িয়ে রাখুন। তার উপর জল দিয়ে ফ্রিজে ঢুকিয়ে পাতাগুলিকে আইস কিউবের মতো করে জমতে দিন। এরপর রান্নায় ব্যবহার করার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পাতা বের করে ব্যবহার করুন। দেখবেন, এইভাবে পুদিনা পাতা দীর্ঘদিন পর্যন্ত টাটকা থাকছে।
তাহলে আর চিন্তা কীসের? এবার বাজার থেকে আনা ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা আনার পর রান্নায় ব্যবহার করার পরও যদি বাড়তি থাকে, তাহলে সেগুলি আমাদের বলা উপায়গুলির মধ্যে থেকে যে-কোনও একটি বেছে নিয়ে সংরক্ষণ করুন।
দেখবেন, ধনেপাতা ও পুদিনা পাতা নষ্ট তো হচ্ছেই না, সেই সঙ্গে আপনার সংরক্ষণের গুণে অটুট থাকছে তার স্বাদ ও গন্ধও! আর আপনিও বেশ কিছুদিন সেগুলিকে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।