ডিমকে বলা হয় সুপারফুড। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদানই এতে আছে। বিশেষত প্রোটিনের সবচেয়ে ভালো উৎস এটি। প্রায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম থাকে। পোচ, সেদ্ধ, ভুনা, ওমলেট নানা উপায়ে এটি খাওয়া হয়। আবার ডিম দিয়েই তৈরি হয় কেক, পুডিং, বিস্কুটের মতো বেকারি পদগুলো।
একটি সেদ্ধ ডিমে ৭৭ ক্যালরির থাকে। সঙ্গে থাকে ৬ দশমিক ৩ গ্রাম উচ্চমানের প্রোটিন। ডায়েটের ক্ষেত্রে এটি উৎকৃষ্ট খাবার। কেননা ডিম খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে। তাই বারবার ক্ষুধা লাগা এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ভয় থাকে না।
অনেকসময় ডিমের দাম বেশি হয়ে যায়। তখন অনেকের পক্ষে প্রতিদিনের জন্য এটি কেনা সম্ভব হয় না। চাইলে বাজারদর কম থাকার সময় ডিম কিনে সেদ্ধ করে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। তবে তা করতে হবে সঠিক নিয়মে। সেদ্ধ ডিম কতক্ষণ পর্যন্ত রেখে খাওয়া যাবে তা জানেন না অনেকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিপ ফ্রিজে সাত দিনের বেশি সেদ্ধ ডিম সংরক্ষণ করা উচিত নয়। এতে ডিমের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে ফ্রিজে ডিম রাখলে তা শক্ত হয়ে যায়। তাই স্বাদও আগের মতো পাওয়া যায় না।
আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর তথ্যমতে, সেদ্ধ করার পর সাধারণত দুই ঘণ্টার মধ্যে ডিম খেয়ে ফেলা উচিত। তবে সেদ্ধ করা ডিম চাইলে ডিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যাবে। তবে তা রাখতে হবে খোসাসহ। খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখা যাবে না।
ফ্রিজে সেদ্ধ ডিম সংরক্ষণ করতে চাইলে এয়ার টাইট (বায়ুরোধী) পাত্র ব্যবহার করুন। অনেক সময় সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখলে দুর্গন্ধ হতে পারে। কারণ, সেদ্ধ করা ডিম ফ্রিজে রাখলে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। তবে এটি ক্ষতিকর নয়। ফ্রিজে সেদ্ধ ডিম রাখলে স্বাদে কিছুটা পরিবর্তন ঘটতে পারে।
সাধারণত ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় ডিম সংরক্ষণ করা উচিত। অন্যদিকে, ডিম সেদ্ধ করার পর তা সাধারণ তাপমাত্রায় দুই ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে।
ডিম সংরক্ষণের আরও কিছু উপায়
সেদ্ধ করে ফ্রিজে রাখা ছাড়াও দীর্ঘদিন ডিম সংরক্ষণের আরও কিছু উপায় আছে। চলুন জেনে নিই সেগুলো কী-
সোডিয়াম সিলিকেট দ্বারা সংরক্ষণ
এই পদ্ধতিতে ভালো ডিম বাছাই করে তরল সোডিয়াম সিলিকেটে সংরক্ষণ করা হয়। ১ কেজি সোডিয়াম সিলিকেট ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে গুলিয়ে তরল করা হয়। এই পরিমাণ তরলে ১৫ ডজন ডিম সংরক্ষণ করা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় আড়াই মাস পর্যন্ত এই পদ্ধতিতে ডিম ভালো থাকে।
চুনের পানি দ্বারা সংরক্ষণ
এ পদ্ধতিতে ২০ লিটার পানিতে ১ কেজি চুন গুলিয়ে ১০ মিনিট থিতাল হয়। এরপর চুনের পানিতে ডিম ডুবিয়ে রাখা হয়। এ উপায়ে ২ মাস পর্যন্ত ডিম সংরক্ষণ করা যায়।
তেল দ্বারা সংরক্ষণ
এ পদ্ধতিতে বর্ণ, স্বাদ ও গন্ধহীন নারিকেল বা সয়াবিন তেল ব্যবহার করা হয়। তেলে ডিমগুলো ডুবিয়ে পরে অন্য পাত্রে উঠিয়ে রাখা হয়। ডিম পাড়ার পর পরই এ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হয়। এভাবে প্রায় এক মাস পর্যন্ত ডিমের গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব।
তথ্যসূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস), ইন্টারনেট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।