শিশুর মোবাইল ফোনের আসক্তি কমানোর উপায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক : আজকাল শিশু ও কিশোররা প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের অভূতপূর্ব ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। এটি যেমন আশীর্বাদ, তেমনি অভিশাপও। এতে পরিবারগুলো সন্তানের স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ও ফোন আসক্তি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

এমনকি শিশুরা কয়েক মাস বয়স থেকেই স্ক্রিনের সংস্পর্শে আসছে। পিতামাতা বা দাদী-নানীরা শিশুদের ব্যস্ত রাখতে বা উৎসাহ দিতে স্ক্রিন ব্যবহার করেন। পরীক্ষায় ভালো করার জন্য, খাবার খাওয়ার জন্য বা পড়াশোনা শেষ করার বিনিময়ে শিশুরা ফোন বা ট্যাব চায়। এর ফলে অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহারের কারণে আচরণগত ও মানসিক সমস্যা বাড়ছে, যা এখন গুরুতর রূপ নিচ্ছে।

অনেক সময় দেখা যায় শিশুরা ডিজিটাল ডিভাইসের জন্য রাগ করছে বা অশোভন আচরণ করছে। অনেক মা অভিযোগ করছেন, শিশুরা ফোন ছাড়া খেতেই চায় না। এই অভ্যাসের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি পিতামাতারা পরে টের পান।

ফোন আসক্তির চ্যালেঞ্জসমূহ
স্ক্রিন টাইমের প্রভাব: অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহারে শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি (মোটা হওয়া, ঘাড় ব্যথা, চোখের সমস্যা) মানসিক সমস্যাও বাড়ছে। এর ফলে ঘুমের ব্যাঘাত, মনোযোগের অভাব এবং অলস জীবনযাপন দেখা দেয়।

অনলাইনে ঝুঁকি: শিশুরা সাইবার বুলিং, অনুপযুক্ত কনটেন্ট, অনলাইন প্রতারক এবং গোপনীয়তার ঝুঁকিতে থাকে।

ডিজিটাল আসক্তি: অতিরিক্ত ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারে আসক্তির মতো আচরণ তৈরি হচ্ছে, যা শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক দক্ষতাকে প্রভাবিত করছে।

মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইনে তুলনা করার প্রবণতা শিশুদের মধ্যে উদ্বেগ, হতাশা এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব সৃষ্টি করছে।

কীভাবে ফোন আসক্তি প্রতিরোধ করবেন?
নিয়ম নির্ধারণ করুন: শিশুর স্ক্রিন টাইম এবং কী ধরনের কনটেন্ট ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করুন।

শিক্ষা দিন: শিশুকে সাইবার নিরাপত্তা, অনলাইন ঝুঁকি, এবং সঠিক ডিজিটাল ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করুন।

নিজের উদাহরণ তৈরি করুন: পিতামাতা নিজেদের স্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস ভালো রাখুন, কারণ শিশুরা তাদেরই অনুসরণ করে।

প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবহার করুন: ডিভাইস এবং অ্যাপে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচার ব্যবহার করে শিশুদের কার্যক্রম মনিটর করুন।

খোলামেলা কথা বলার পরিবেশ তৈরি করুন: শিশুরা যাতে তাদের অনলাইন অভিজ্ঞতা এবং সমস্যাগুলো নিয়ে সহজেই কথা বলতে পারে, এমন পরিবেশ গড়ে তুলুন।

অনলাইনে শিশুদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন: তাদের গেম খেলায় অংশ নিন বা অনলাইন কার্যক্রমে আগ্রহ দেখান।

সমালোচনামূলক চিন্তা শেখান: শিশুদের শেখান কীভাবে অনলাইনে তথ্য যাচাই করতে হয় এবং ভুল তথ্য এড়িয়ে চলতে হয়।

আপডেটেড থাকুন: নতুন অ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ড সম্পর্কে জানুন, যা শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয়।

অফলাইনে কার্যক্রম উৎসাহিত করুন: শিশুকে খেলাধুলা, পড়াশোনা, বা অন্যান্য শখে আগ্রহী করে তুলুন।

সহায়তা নিন: প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের বা অভিজ্ঞ পিতামাতাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিন।প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই তার নেতিবাচক প্রভাব এড়ানোও জরুরি।