লাইফস্টাইল ডেস্ক : অরুনাভ সদ্য একটি চাকরি পেয়েছেন। সেল্সের চাকরি। সারা দিনে বহু ক্লায়েন্টের কাছে গিয়ে নানা রকম আলোচনা করতে হয়। মনের মতো কাজ হলেও এই গরমের মরসুমে মোটেই ভাল লাগছে না। বাইরে তাপমাত্রা ৪০ ছুঁইছুঁই। সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে বাস-মেট্রোর ভি়ড় ঠেলে অফিস যাওয়াই ঝক্কির। কিন্তু আরও বিপদ যখন ক্লায়েন্ট ভিজিটে যেতে হচ্ছে। এসির হাওয়া ছেড়ে বেরোতে হয় রোদে। বার বার আবহাওয়া বদলের ফলে তার প্রভাব পড়ে শরীরে। নানা রকম শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকে।
এই ধরনের কাজ অনেকেরই। যাঁরা সারা দিন এসির মধ্যে বসে থাকেন, তাঁদেরও মাঝেমাঝে বাইরে বেরোতে হয়। ঠান্ডা-গরমে বেশ অসুবিধা হয়। এই সময় ঝুঁকি এড়াতে কী ধরনের সুরক্ষা নেওয়া প্রয়োজন? কোন নিয়মগুলি মেনে চললে সুস্থ থাকবে শরীর? উত্তর খুঁজতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল চিকিৎসক অদ্রিজা রহমান মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
অদ্রিজা বলেন, ‘‘ক্রমাগত যে গরম চলছে তাতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। যাঁরা নিয়মিত বাইরে বেরোচ্ছেন, তাঁদের তো শরীর খারাপের ঝুঁকি থাকছেই। কিন্তু বাড়িতে যাঁরা থাকছেন, তাঁদের সুস্থ থাকার জন্য বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে। বিশেষ করে মহিলাদের দিনের একটা বেশি সময় হেঁশেলে কাটে। আগুনের তাপে প্রচণ্ড ঘেমেনেয়ে এসির ঘরে ঢুকছেন। আবার নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যাঁরা অফিসে কাজ করেন, কাজের প্রয়োজন ছাড়াও চা কিংবা সিগারেট খেতেও এসির আবহাওয়া থেকে বাইরে বেরোচ্ছেন। ঠান্ডা-গরমের ফলে সর্দি-কাশি, গলাব্যথা লেগেই রয়েছে।’’
জ্বর কিংবা ঠান্ডা লাগা ছাড়া আর কি কোনও শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি থাকে এর ফলে? চিকিৎসক বলেন, ‘‘হ্যাঁ থাকে। ইদানীং আমি দেখছি পেটের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। খাবার হজম হচ্ছে না। এমনকি ডায়েরিয়া, বমির মতো সমস্যা নিয়েও রোগীরা আসছেন। এ ছা়ড়া অফিসে বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে খান অনেকে। তারও প্রভাব পড়ছে শরীরে। রক্তচাপের মাত্রা কম থাকলে মাথাঘোরা, দুর্বল লাগার মতো সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।’’
এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ থাকার উপায় কী? কোন নিয়মগুলি মেনে চলা জরুরি? চিকিৎসকের জবাব, ‘‘গরমের হাত থেকে রেহাই পেতে এসির তাপমাত্রা অনেকেই ১৭-১৮ ডিগ্রিতে করে রাখেন। এতে সাময়িক স্বস্তি হয়তো পাওয়া যায়। কিন্তু এমন আবহাওয়া থেকে বাইরে বেরোলেই সমস্যা। তাই খুব ভাল হয় যদি বাতানুকূল যন্ত্রটি মাঝারি তাপমাত্রায় চালানো হয়। তবে এটা বাড়িতে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও অফিসে সম্ভব নয়। তাই অফিস থেকে অন্য কোনও প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার আগে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কিছু ক্ষণ কাটিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। ফেরার সময় একই পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।’’
আর কী কী সুরক্ষা নিলে রোগবালাই এড়ানো সম্ভব? অদ্রিজার কথায়, ‘‘এই সময় শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হয়। তাই জল আছে এমন খাবার এবং ফল বেশি করে খেতে হবে। সেই সঙ্গে জলও হাতের কাছে রাখতে হবে। এ ছাড়াও সম্ভব হলে শরীর ঢাকা পোশাক পরতে পারলে ভাল হয়। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে নুন খাওয়া একেবারে কমিয়ে দেওয়া জরুরি। এই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলে সুস্থ থাকা সম্ভব।’’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।