আক্তারুজ্জামান : জেমসের বিখ্যাত একটি গান আছে, ‘কিছুটা আশা তুমি রেখো যতন করে, কিছুটা স্বপন তুমি রেখো মুঠো ভরে। যার ভরসায় আবার নতুন করে, জীবন শুরু করা যায়।’ ঠিক এভাবেই যতন করে আশা আর মুঠো ভরে স্বপন রেখেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খেলে যাচ্ছেন অবিরাম। দিয়ে যাচ্ছেন নিজের সক্ষমতার প্রমাণ।
জেমসের ওই গানের মতো করে যদি বলি- তাহলে মাহমুদউল্লাহর আশা আর স্বপনের ভরসায় হয়তো বাংলাদেশের ক্রিকেট নতুন করে জীবন শুরু করে। নতুন ছন্দে ক্রিকেট উৎসবে মাতে ভক্তরা। যারা সপ্তাহব্যাপী ক্রিকেটার নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে আবারও বেহায়ার মতো খেলা দেখতে বসে, তারা হয়তো এই বুড়ো রিয়াদের আশা আর স্বপনের কারণেই দেখে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ১৫তম ম্যাচে এসে আসর শুরু করলো বাংলাদেশ। বোলারদের দাপুটে বোলিং ছিল। কিন্তু ১২৫ রানের ছোট্ট লক্ষ্য পেরোতে গিয়ে আশা-নিরাশার দোলাচল দেখাতে দেখাতে নখ কামড়ানো উত্তেজনা ছড়িয়ে শেষ পর্যন্ত জয় দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা করলো শান্তবাহিনী। কিন্তু রয়ে গেল সেই ব্যাটিং ব্যর্থতার দগদগে ক্ষত।
লিটন-হৃদয়ের ৬৩ রানের জুটি আর রিয়াদের ম্যাচজয়ী ইনিংস ছাড়া ব্যাটারদের আর কোনো প্রশংসা করার মতো চোখে পড়ছে না। ৯৯ রানে লিটন যখন ফিরে গেলেন তখন সাকিবকে সঙ্গ দিতে আসেন রিয়াদ। জয় থেকে ২৬ রান দূরে বাংলাদেশ। কিন্তু অল্প সময়েই ক্রিজে থেকে দেখলেন ৩টি উইকেটের পতন। গড়লেন ৪টি জুটি। হঠাৎ হারের শঙ্কা যখন উঁকি দিচ্ছে তখন ভরসার প্রতীক হয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে জয় ছিনিয়ে মাঠ ছাড়লেন সেই রিয়াদ।
এর আগে বিশ্বকাপের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচেও সবাই যখন লাইন দিয়ে ব্যর্থতার তালিকায় নাম ওঠাচ্ছিল, তখনও ব্যতিক্রম ছিলেন এই রিয়াদ। নিদাহাস ট্রফির সেই ফাইনালের স্মৃতি, গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বুক চিতিয়ে লড়াই করার স্মৃতি, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচের লড়াই মনে করিয়ে দেয় রিয়াদের প্রয়োজনীয়তা।
দেশের বিভিন্ন ক্রিকেটাররা যখন নানা কারণে সমালোচিত হন, ট্রলের শিকার হন কিংবা নেতিবাচক শিরোনাম হন, তখন রিয়াদ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। যিনি ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছিলেন ক্যাপ্টেন, অফফর্মের কারণে ২০২২ বিশ্বকাপে দল থেকেই বাদ। আর এবারের বিশ্বকাপে তিনিই মহানায়ক এবং ত্রাণকর্তা। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এখন এক স্মৃতিময় ও গর্ব করে বলা গল্পের নায়ক মাহমুদউল্লাহ। সবাই হয়তো মনে মনে এখন এটাই বলে একদিন গল্প করে বলবো ‘আমাদের একজন মাহমুদউল্লাহ আছে’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।