লাইফস্টাইল ডেস্ক : ভাতের পাশাপাশি রুটি আমাদের অন্যতম প্রধান খাবার। অনেকেই অন্তত এক বেলা রুটি খেয়ে থাকেন। বিশেষ করে সকালের নাস্তায় আমাদের রুটি খাওয়ার প্রচলন বেশি। আবার অনেকে রাতের খাবারে ভাত না রেখে রুটি রাখেন।
রুটিতে গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স কম থাকে। তাই এটি রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক রাখতে কাজ করে। রুটি গমের আটা থেকে তৈরি করা হয়। এটি জটিল কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের মূল উৎস।
এ ছাড়া আটায় থাকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ। যা শরীরের জন্য উপকারী। তবে কিছু উপাদান যোগ করে চাইলে রুটির পুষ্টিগুণ বাড়ানো সম্ভব। তাহলে চলুন, জেনে নেওয়া যাক যেসব উপাদান মেশালে রুটি আরো বেশি পুষ্টিকর হবে।
রুটির পুষ্টিগুণ বাড়াতে যা মেশাতে পারেন
হলুদ
হলুদে থাকা কারকিউমিন এর প্রদাহ-বিরোধী ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুবিধার জন্য পরিচিত। প্রতি কাপ ময়দায় এক চা চামচ হলুদ মেশালে রুটি একটি সুন্দর সোনালি আভা ও উষ্ণ, হালকা গন্ধ পাবে। বাত, হজমের সমস্যা, বিষণ্নতা ও অ্যালার্জিতে সাহায্য করার কাজ করবে এই হলুদ। এই রুটি ডাল বা তরকারির সঙ্গে খেতে বেশ ভালোলাগে।
তিসি
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ তিসি আটার সঙ্গে মিশিয়ে রুটি তৈরি করলে মিলবে দারুণ উপকার।
পুষ্টির মান বাড়ানোর জন্য প্রতি কাপ আটায় এক টেবিল চামচ আস্ত বা সামান্য চূর্ণ তিসি যোগ করুন। জার্নাল অব ফুড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষণা অনুসারে, তিসিতে আলফা-লিনোলিক অ্যাসিড (এএলএ) নামক একটি অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা আমাদের শরীর তৈরি করে না। এএলএ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে এবং হার্টে কোলেস্টেরল জমা হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে। তিসিতে থাকা উচ্চ ফাইবার উপাদান পেট ভরিয়ে রাখে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
মেথি দানা
মেথি দানা ভিটামিন এ, সি, কে, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ সমৃদ্ধ। আপনার আটায় এক টেবিল চামচ মেথি দানা মিশিয়ে মাখিয়ে নিন। এতে রুটি সামান্য তিক্ত স্বাদের হতে পারে, কিন্তু এই মসলা শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনবে। মেথি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে, ইনসুলিন উৎপাদন বাড়াতে এবং হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
পালংশাক
শীতের শাক-সবজির মধ্যে অন্যতম হলো পালংশাক। উপকারী এই সবুজ শাক মিশিয়ে নিতে পারেন আটার সঙ্গে। সেজন্য পালংশাক ব্লেন্ডারে পেস্ট করে তা আটার সঙ্গে মাখিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আলাদা করে আর পানি মেশানোর প্রয়োজন পড়বে না। পালংশাকে থাকে মিনারেল, ভিটামিন, ফাইটো নিউট্রিয়েন্টসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান। যা রুটিকে আরো পুষ্টিকর করে তোলে।
ঘি
রুটি তৈরির সময় ঘি মিশিয়ে নিলে উপকার পাবেন। চাইলে রুটি বানানোর পরও এর সঙ্গে ঘি মিশিয়ে নিতে পারেন। এর ফলে রুটি নরম থাকবে অনেক সময়। আবার ঘিয়ে থাকা বিভিন্ন খনিজ উপাদান ও স্যাচুরেটেড ফ্যাটও শরীরের উপকার করবে। এগুলো মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। রুটিতে ঘি মাখিয়ে খেলে তা গ্লুটেন ও ফাইবার হজম করা সহজ করে। ঘি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন এ, ডি, ই, এবং কে-এর উৎস।
ড্রাইফ্রুটস পাউডার
ড্রাইফ্রুটস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আপনি আপনার রুটির সঙ্গে বাড়তি পুষ্টি যোগ করতে চাইলে মিশিয়ে নিতে পারেন এর পাউডার। রুটি তৈরির সময় এক কাপ আটার সঙ্গে ১ থেকে ২ টেবিল চামচ ড্রাইফ্রুটস পাউডার মিশিয়ে নিন। সকালের নাস্তায় এভাবে তৈরি করা রুটি খেলে তা সারাদিন আপনাকে সতেজ ও শক্তিশালী রাখতে কাজ করবে। তবে সবদিন একইভাবে রুটি তৈরি না করে, একেকদিন একেকভাবে তৈরি করে খেতে পারেন। এতে স্বাদ ও পুষ্টি দুটিই পাওয়া যাবে।
মসলা
রুটির সাধারণ স্বাদে পরিবর্তন আনতে চাইলে এর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মসলা মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে স্বাদ তো বদলাবেই, সেইসঙ্গে যোগ হবে বাড়তি পুষ্টিও। রুটি তৈরির আটার সঙ্গে আমচুর পাউডার, ভাজা মসলা, লবণ, গোলমরিচ গুঁড়া ইত্যাদি পরিমাণমতো মিশিয়ে নিতে পারেন। এভাবে তৈরি করলে সবাই তা খেতেও বেশ পছন্দ করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।