লাইফস্টাইল ডেস্ক : লবঙ্গ আমাদের অতিপরিচিত একটি মসলার নাম। রান্নার স্বাদ আনতে এর জুড়ি মেলা ভার। এশিয়া, আফ্রিকা, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে ঝাল এবং মিষ্টিজাতীয় খাবারে এটি ব্যবহার করা হয়। আজ থেকে কয়েক হাজার বছর আগে সিরিয়া, চীন, রোম, আফ্রিকায় এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তবে আধুনিক সময়ে সবার প্রথমে ইন্দোনেশিয়ার মালুকু দ্বীপপুঞ্জে এটি পাওয়া যায়। এরপর এখান থেকে ডাচ্ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত ধরে লবঙ্গ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
চিরসবুজ লবঙ্গগাছের ফুলের কুঁড়িকেই লবঙ্গ বা লং বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium aromaticum। রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশেই এখনও ঔষধি উপাদান হিসেবে এর ব্যবহার করা হয়। লবঙ্গের ভেতর রয়েছে ‘ইউজেনল’ নামের একটি যৌগ, যা এর সুগন্ধের মূল কারণ। এটির ৭২ থেকে ৯০ শতাংশই ইউজেনলে ভরপুর। যৌগটি জীবাণু ও ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। এতে আরও আছে ক্যারিওফিলিন নামে আরেকটি যৌগ যা একধরনের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান।
রান্নাঘরের পরিচিত মসলা লবঙ্গ। রান্নায় আলাদা ঘ্রাণ যোগ করা ছাড়াও এর আরও ব্যবহার রয়েছে। গলাব্যথা, গলা খুশখুশ করা ইত্যাদি সমস্যায় অনেকেই মুখে লবঙ্গ রাখেন। কেউবা পানির সঙ্গে এটি ফুটিয়ে খান। মাথাব্যথায় অনেকে লবঙ্গের তেল ব্যবহার করেন। আবার ত্বকের পরিচর্যায়ও এর ব্যবহার রয়েছে।
শরীরে ভিটামিন ই, সি, ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিডের জোগান দেয় লবঙ্গ। তবে এই গরমে লবঙ্গপানি পান করা কতটা উপযোগী? এর কিছু উপকারিতা আর কিছু সতর্কতা চলুন জেনে নিই।
মাথাব্যথা কমায়
গরমে প্রায়ই অনেকের মাথাব্যথা হয়। ব্যথা কমাতে ওষুধ ও বামের ওপর নির্ভর করতে হয়। এই যন্ত্রণা থেকে কিন্তু সহজে মুক্তি দিতে পারে লবঙ্গ তেল। অন্য কোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে লবঙ্গ তেল ম্যাসেজ করুন। চটজলদি উপকার পাবেন।
হজমের ক্ষমতা বাড়ায়
এই হাঁসফাঁস গরমে খাবার খেলেই বুক জ্বালা, অ্যাসিডিটি লেগেই থাকে। ঠিকঠাক ঘুম না হওয়ার কারণে দেখা দেয় হজমের নানা সমস্যা। খালি পেটে এক টুকরো লবঙ্গ মুখে রাখুন। আরাম পাবেন। হজমের সমস্যাও মিটবে।
ত্বক পরিষ্কার করে
এই গরমে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য কে না ধরে রাখতে চায়। প্রখর রোদে ত্বকে কালো কালো ছোপ পড়ে। এক্ষেত্রে লবঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন। এতে থাকা অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য সূর্যরশ্মি থেকে ত্বককে বাঁচায়।
মশার হাত থেকে বাঁচায়
গরম মানেই লোডশেডিং। সেই সঙ্গে আছে মশার কামড়। এর থেকে রেহাই পেতে ব্যবহার করুন লবঙ্গ তেল। এতে থাকা ইউজেনল যৌগ মশাকে আপনার ধারেকাছে ঘেঁষতে দেবে না। কিংবা একটা লেবু অর্ধেক কেটে তাতে কিছু লবঙ্গ গেঁথে রাখতে পারেন। এতেও মশার উপদ্রব কমবে।
সতর্কতাও আবশ্যক
অনেক গুণাবলি থাকলেও লবঙ্গ খাওয়ার বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। অত্যধিক লবঙ্গপানি খেলে রক্ত পানি হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। এই মাত্রা বেড়ে যাওয়া যেমন ক্ষতিকর, তেমনি কমে যাওয়াও বিপজ্জনক। লবঙ্গ রক্তে শর্করার মাত্রা অনেক কমিয়ে দেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের লবঙ্গ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ অবশ্যই নেয়া উচিত।
গরমে সবাই শরীর ঠান্ডা রাখার উপায় খোঁজেন। লবঙ্গ শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বেশি লবঙ্গ খেলে শরীর গরম হয়ে যায়। তাই, বিশেষ করে গরমে লবঙ্গ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।