জুমবাংলা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। নিবন্ধনে পাসের পর তার ছোট বোন সুমি খাতুন বলেছেন, ‘আমার ভাই যে সন্ত্রাসী ছিল না, মেধাবী ছিল এটা তার প্রমাণ। চাকরির প্রথম পরীক্ষাতেই আমার ভাই পাশ করেছে।’
তিনি আরো বলেন, আমি ভাইকে বলতাম যেন বিসিএস-এর চাকরি করে। ভাই কথা দিয়েছিল চেষ্টা করবে। এই পরীক্ষায় পাশ করার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো ভাই বিসিএস পরীক্ষাতেও টিকত। কিন্তু সত্যের জন্য আন্দোলন করার কারণে পুলিশ আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। জড়িতদের বিচার চাই।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) প্রকাশিত ফলাফলে এই তথ্য পাওয়ার পর তার বোন এসব কথা বলেন।
শহীদ আবু সাঈদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় আবু সাঈদের পরীক্ষার রোল নম্বর ছিল ২০১২৫৬২৯৭। বাংলা ও ইংরেজি দুই বিভাগেই শিক্ষক হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
আবু সাঈদের এই ফলাফল যখন ওয়েবসাইটে তখন তিনি নেই। গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনচলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ।
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন জানান, শহীদ আবু সাঈদ যে মেধাবী ছাত্র ছিলেন এই ফলাফলই তার প্রমাণ। চাকরির প্রথম পরীক্ষাতেই তিনি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তবে তিনি সরকারি ভালো চাকরি করে পরিবারে আর্থিক টানাপোড়েন দূর করার স্বপ্ন দেখতেন। চাকরির পরীক্ষায় পাশ করলেও তিনি আমাদের মাঝে নেই। এখন তার হত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করা হলেই তার স্বপ্নপূরণ হবে।
সাঈদের ছোট বোন সুমি খাতুন বলেন, আমার ভাই যে সন্ত্রাসী ছিল না, মেধাবী ছিল এটা তার প্রমাণ। চাকরির প্রথম পরীক্ষাতেই আমার ভাই পাশ করেছে। আমি ভাইকে বলতাম, যেন বিসিএস-এর চাকরি করে। ভাই কথা দিয়েছিল চেষ্টা করবে। এই পরীক্ষায় পাশ করার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো ভাই বিসিএস পরীক্ষাতেও টিকত। কিন্তু সত্যের জন্য আন্দোলন করার কারণে পুলিশ আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। জড়িতদের বিচার চাই আমি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. শওকাত আলী জানান, ‘শহীদ আবু সাঈদ ছিলেন এক্সট্রা অর্ডিনারি মেধাবি। তার বিভাগ এবং অন্য পরীক্ষার ফলাফল তাই প্রমাণ করে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথমবারেই পাশ করার মধ্য দিয়েও সেটা প্রমাণ হলো। সাঈদ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। এখন আমাদের চেষ্টা হলো তার স্বপ্নপূরণে কাজ করা।’
সাঈদ হত্যার ঘটনায় গত ১৮ আগস্ট তার বড় ভাই রমজান আলী মহানগর তাজহাট আমলি আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া আর কেউ গ্রেফতার হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।