বিনোদন ডেস্ক : বলিউডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের প্রভাব কম-বেশি সবার জানা। বলিউডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের নিয়ন্ত্রণ কখনো গোপন বিষয় ছিল না। সিনেমায় বিনিয়োগ তো ছিলই, কাস্টিং নির্বাচন কিংবা সেরা পারফরমারের পুরস্কার কে পাবেন, তা-ও ঠিক হতো আন্ডারওয়ার্ল্ডের ইশারায়। শুধু অর্থলগ্নিই নয়, রাজনীতি ও অন্ধকার জগতেও প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল এই মাফিয়াদের। স্বেচ্ছায় বা জবরদস্তির মুখে মাফিয়া বসদের সঙ্গে বলিউড ডিভার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অনেক মুখরোচক ও রোমাঞ্চকর গল্প সবার মুখে মুখে। এমন কয়েকজন বলিউড ডিভাকে নিয়েই এই আয়োজন, যারা গ্যাংস্টারদের প্রেমে পড়েছিলেন। অবশ্য সেটি প্রেম, নাকি ক্যারিয়ার রক্ষার কৌশল, তা ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে!
মমতা কুলকারনি
১৯৯০ দশকের সেনসেশন ছিলেন মমতা কুলকারনি। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় প্রথম সিনেমা ‘তিরাঙ্গা’। প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করেন। পর্দা কাঁপানো এই অভিনেত্রী আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের দোসর ছোটা রাজনের সঙ্গে ডেট করছিলেন। তবে এ সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। ছোটা রাজন ভারত ছাড়ার পরপরই তাঁদের সম্পর্কের ইতি ঘটে।
মন্দাকিনী
রাজ কাপুর পরিচালিত ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’ সিনেমা দিয়ে ১৯৮৫ সালে অভিনয়ে পা রাখেন মন্দাকিনী। প্রথম সিনেমা দিয়েই দর্শকদের মন জয় করেন। তবে এই খ্যাতি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তাঁর একটি ছবি ভাইরাল হওয়ার পর ক্যারিয়ারের পতন শুরু হয়। ১৯৯৬ সালের ছবি ‘জোরদার; মুক্তির পর ইন্ডাস্ট্রি থেকে অদৃশ্য হয়ে যান এই অভিনেত্রী। বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর ১৯৯০ সালে এক সন্ন্যাসীকে বিয়ে করেন।
মণিকা বেদি
সালমান খান, সুনীল শেঠি ও গোবিন্দের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন মণিকা বেদি। গ্যাংস্টার আবু সালেমের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর আলোচনায় আসেন। ১৯৯৮ সালে দুবাইয়ের একটি শোতে দেখা হয়েছিল তাঁদের। সালেম অবশ্য পরিচয় গোপন করেছিলেন। উদ্যোক্তা পরিচয় দিয়েছিলেন, নামও বলেছিলেন ভিন্ন। মণিকা মুম্বাই ফিরে আসার পরও তাঁদের যোগাযোগ ছিল। ধীরে ধীরে দুজনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একপর্যায়ে খবর রটে, মণিকা বেদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আবু সালেমকে বিয়ে করেছেন।
হিনা কাউসার
প্রখ্যাত পরিচালক কে. আসিফের মেয়ে হিনা কাউসার। ১৯৭০-এর দশকের ভারতীয় অভিনেত্রী। তিনি অনেক সিনেমায় ক্যামিও ছিলেন। ১৯৯১ সালে ভারতীয় গ্যাংস্টার ইকবাল মির্চিকে বিয়ে করার পর হিনা শিরোনামে উঠে আসেন।
সোনা মাস্তান মির্জা
অভিনেত্রী সোনা মাস্তান মির্জা ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে হিন্দি সিনেমায় কাজ করেন। তিনি খুব একটা পরিচিত ছিলেন না, তবে গ্যাংস্টার হাজি মাস্তানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের পর আসেন আলোচনায়। ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন মুম্বাই’ সিনেমাটি হাজি মাস্তানের জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এই সিনেমায় তাঁদের রোমান্স চিত্রিত হয়েছে। জানা যায়, হাজি মাস্তান মধুবালাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি।
জেসমিন ধুনা
‘সরকারি মেহমান’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় জেসমিন ধুনার। ১৯৮৮ সালে ‘বীরানা’ সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর রাতারাতি সেনসেশন হয়ে ওঠেন জেসমিন। গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে এই অভিনেত্রীর সম্পর্ক ছিল বলে গুঞ্জন উঠেছিল। তবে ওই বছর (১৯৮৮) থেকেই জেসমিন বিনোদনজগৎ থেকে অদৃশ্য হয়ে যান।
আনীতা আইয়ুব
পাকিস্তানি অভিনেত্রী আনীতা আইয়ুব ১৯৯৩ সালে বলিউডে পা রাখেন। তাঁর ডেবিউ সিনেমা ছিল ‘পেয়ার কা তারানা’। খুব অল্প সময়ের জন্য বলিউডে কাজ করেছেন তিনি। সিনেমার পাশাপাশি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে মডেলিংও করেন।
মূলত গ্যাংস্টার দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে তাঁর যোগসূত্রের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর আলোচনায় আসেন। এমন খবরও প্রকাশ্যে আসে যে ১৯৯৫ সালে জাভেদ সিদ্দিক নামের এক চলচ্চিত্র নির্মাতা সিনেমায় কাস্ট করতে অস্বীকৃতি জানালে দাউদের লোকেরা তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। এমনকি মুম্বাই বোমা বিস্ফোরণেও আনীতার নাম উঠে আসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।