জুমবাংলা ডেস্ক : পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বা আইজিপি বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সাভানা রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসন। এখন থেকে এই সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রশাসনই পালন করবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেছেন, আদালত ক্রোকাদেশ দিয়েছে। তার অংশ হিসেবে আজ আমরা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় নিয়ে এসেছি। অর্থাৎ ওই সম্পত্তি আমরা আমাদের হেফাজতে নিলাম। এখন এর মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ সরকারি হেফাজতে।
২০২২ সালের ত্রিশে সেপ্টেম্বর আইজিপির পদ থেকে অবসরে গিয়েছিলেন বেনজীর আহমেদ। পরে সম্প্রতি একটি পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যাপক সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করে রিপোর্ট প্রকাশ করলে তা নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় হয়।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, প্রায় ছয়শ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা সাভানা রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কের সব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং এ থেকে যা আয় হবে সেটি সরাসরি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে। পরবর্তীতে আদালত যেভাবে আদেশ দেবে এ সম্পদের ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা সেভাবেই হবে।
এর আগে শুক্রবার রাতেই পার্কের প্রধান গেইটের সামনে মাইকিং করে জেলা প্রশাসন ও দুদক যৌথভাবে সম্পদটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। পরে তারা পার্কে প্রবেশ করে এর নিয়ন্ত্রণ বুঝে নেয়।
শনিবার সকাল থেকে এটি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের নিয়ন্ত্রণে ও হেফাজতে আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ওই পার্কের ভেতরে জমি, পুকুরসহ আরও যেসব স্থাপনা আছে সেগুলোর ব্যবস্থাপনাও আদালতের আদেশের ভিত্তিতে হবে বল জানিয়েছেন তিনি।
তবে আদালতের নির্দেশে রাষ্ট্র যখন কোন সম্পদ জব্দ করে তার কী হয় বা এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আইন কী বলে, এমন প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেছেন, আদালত জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে, সে কারণে পরবর্তী অন্য কোন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই সম্পদ জব্দ অবস্থাতেই থাকবে।
তিনি আরও বলেছেন, জব্দ সম্পত্তিতে কিছু করতে হলে আদালতের অনুমতির দরকার হয়। আদালত একটি আদেশ দিয়েছে। সে অনুযায়ী এগুলোর কার্যক্রম চলবে। জব্দ হওয়া সম্পত্তি থেকে যা আয় হবে সেটি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে।
আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত আদালত বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের যে সব সম্পদ জব্দ বা ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তার মধ্যে আছে ঢাকার গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট, ৩৩টি ব্যাংক হিসেব, তিনটি শেয়ার ব্যবসার বিও অ্যাকাউন্ট, প্রায় ৬২১ বিঘা জমি, উনিশটি কোম্পানির শেয়ার এবং ত্রিশ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র।
এছাড়া তদন্তকারীরা ঢাকা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও কক্সবাজারে বেনজীর আহমেদ এবং তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের মালিকানাধীন জমির সন্ধান পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১১২ একর জমি তার নিজ জেলা গোপালগঞ্জে।
পাশাপাশি বেনজীর আহমেদ বা তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে সম্পদ আছে কি না, তা জানতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছে দুদক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।