লাইফস্টাইল ডেস্ক : রোদে বেরোলেই মাথা ঘামছে। চুলের গোড়ায় দীর্ঘ ক্ষণ জমে থাকা ঘামের কারণে মাথার তালুতে চুলকানি, র্যাশও হচ্ছে। গরমে এই সমস্যা কমবেশি সকলেরই হয়। ঘাম জমে আঠালো, রুক্ষ হয়ে যায় চুল। গরমকালে যেমন ত্বকের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন, তেমনই চুলেরও যত্ন নিতে হবে। না হলেই নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। বাইরের ধুলোবালি আর ঘামে ভিজে মাথার ত্বকে ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাকের উৎপাত শুরু হবে। ফলে চুল তো পড়বেই, পাশাপাশি মাথার ত্বকে নানা সংক্রমণজনিত সমস্যাও দেখা দিতে শুরু করবে।
গরমে মাথার ত্বকে কোন কোন জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে পারে?
ম্যালাসেজ়িয়া নামে একধরনের ছত্রাক রয়েছে তার থেকে কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস হতে পারে। এর ফলে মাথার ত্বক খুশকিতে ভরে যাবে, ত্বক থেকে আঁশের মতো ছাল উঠতে শুরু করবে। চুল আঁচড়াতে গেলেই মাথার ত্বকে জ্বালা হবে।
‘ব্যাক্টেরিয়াল স্ক্যাল্প ইনফেকশন’ গরমের সময়ে প্রায়ই হয়। ভাল করে শ্যাম্পু না করলে এবং ভিজে চুল দীর্ঘ সময়ে বেঁধে রাখলে মাথার ত্বকে স্ট্যাফাইলোকক্কাস ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে। ফলে ব্রণ-ফুস্কুড়ি, লালচে র্যাশ দেখা দেয়। মাথার সামনের দিকেও গুটি গুটি র্যাশ বেরোতে থাকে।
গরমে ছোট ছোট পোকার কামড় থেকেও মাথার ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। ঠিকমতো স্নান না করলে বা মাথায় ঘাম বসে থাকলে, এমন পোকার উপদ্রব হয়। এদের কামড়ে মাথার ত্বকে জ্বালা করে।
সমাধানের উপায় কী?
গরমে মাথার তালুতে ঘাম আর ধুলো-ময়লা জমে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। চিরুনি দিয়ে আঁচড়ালেই দেখবেন চুল পড়ছে। তাই এই সময়ে মাথার তালু শুষ্ক রাখা খুব জরুরি। যখনই বাইরে যাবেন তখন আপনার চুল ঢেকে রাখুন। টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার ব্যবহার করা ভাল। ওড়না দিয়েও মাথা ঢেকে রাখতে পারেন।
অন্যের চিরুনি, প্রসাধনী, তেল বা ক্রিম ব্যবহার করবেন না। এর থেকেও ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে।
গরমের সময়ে খুব বেশি জেল বা সিরাম মাথায় ব্যবহার না করাই ভাল।
মাথার ত্বকে অ্যালার্জি না সারলে, ত্বক চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে বা স্টেরয়েড জাতীয় জেল বা ক্রিম ব্যবহার করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
চুলের পরিচর্যা কেমন হবে?
১) এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে যাতে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে, যেমন কিটোনাজ়োল, সেলেনিয়াম সালফাইড, জিঙ্ক পাইরিথিয়োন আছে এমন শ্যাম্পুই ব্যবহার করা ভাল।
২) ঘাম জমে মাথায় গন্ধ হলে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন। তুলোয় করে নিয়ে মাথার তালুতে লাগাতে হবে।
৩) জলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে মাথায় মাখলে, ব্রণ-ফুস্কুড়ির সমস্যা দূর হতে পারে। শ্যাম্পুর সঙ্গে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। এতে অ্যালার্জিজনিত সংক্রমণও দূর হতে পারে।
৪) নারকেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে নিম তেলও মাখতে পারেন মাথায়। ছোট একটি পাত্রে ২-৩ চামচ নিম তেল নিন। তার সঙ্গে আরও ৩-৪ চামচ নারকেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। এ বার হালকা গরম করে ওই তেল মাথায় মালিশ করতে হবে। এতে ছত্রাকের সংক্রমণ দূর হবে।
৫) রোদে বেরোনোর আগে আপনি সানব্লক ক্রিম বা সিরাম চুলে লাগাতে পারেন। সানব্লক স্প্রেও ব্যবহার করতে পারেন ।
৬) মাথার ত্বকে ব্রণের সমস্যা বাড়লে সেখানে মধু ও হলুদ লাগাতে পারেন। কাঁচা হলুদ বেটে তার সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে। ১ ঘণ্টা পরে ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে নিতে হবে।
৭) টি ট্রি অয়েল কার্যকরী হতে পারে। এই তেলের অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। নারকেল তেলে কয়েক ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে মাথার ত্বকের অ্যালার্জির জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে। এতেও উপকার হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।