স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অব্যাহতি দিয়ে ওপেনার তামিম ইকবালকে বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্ত করতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ক্রিকেট সাপোর্ট গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাসেল আল মামুন এ নোটিশ পাঠান।
এই নোটিশে বলা হয়েছে, হাথুরুসিংহে একজন অযোগ্য কোচ; যে কিনা নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। তার ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা মাত্র ৩৫টি। গড় ছিল মাত্র ২০ দশমিক ৯০। বাংলাদেশের কোচ হওয়ার আগে অন্য কোনো দেশের পূর্ণাঙ্গ কোচ হওয়ার অভিজ্ঞতাও ছিল না তার। তাকে বাংলাদেশের হেড কোচ করা হয়েছে হয়তো কোনো মহলের কমিশনের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এবং দেশের ক্রিকেটকে শেষ করার জন্য। কারণ, উনি কোচ হওয়ার পর থেকেই সিনিয়র প্লেয়ারদের ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। যে পঞ্চপাণ্ডবের হাত ধরে দেশের ওডিআই র্যাঙ্কিং পাঁচ নম্বরে ছিল, সেই পঞ্চপাণ্ডবকে দল থেকে বাদ দেওয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই বছরে তার নেতৃত্বে পাঁচটি ওডিআই সিরিজে আয়ারল্যান্ড ছাড়া বাকি সব সিরিজেই বাংলাদেশ পরাজিত হয়েছে। সর্বশেষ ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের কাছে ঘরের মাটিতে পরাজিত হয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, আমার ক্লায়েন্ট মনে করেন যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ও ম্যাচ সংখ্যায় দ্বিতীয় সেরা অভিজ্ঞ খেলোয়াড় তামিম ইকবাল। তার জায়গা হলো না বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে; এটি একটি ষড়যন্ত্র। এশিয়া কাপে ভরাডুবি হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে ওপেনিং। নতুন প্লেয়ার তানজিম তামিমকে এই বড় মঞ্চে ওঠানো ঠিক হবে না; বরং অভিজ্ঞ তামিম ইকবালই ঠিক। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তামিমের টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি রয়েছে। তামিম ইকবাল বাংলাদেশের ওয়ানডে ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি ১৪টি সেঞ্চুরির মালিক। লর্ডসের অনার বোর্ডে একমাত্র বাংলাদেশি সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে তামিম ইকবালের নাম আছে। ঘরের মাটিতে তার গড় ৩৭, ঘরের বাইরে ৩৫-এর মতো। দুই জায়গায়ই সমান সাতটি করে সেঞ্চুরি আছে তামিমের। সুতরাং আনফিট অজুহাতে অভিজ্ঞ তামিমকে দলে না রাখা কোচ ও অধিনায়কের ব্যক্তিগত আক্রোশই দায়ী।
নোটিশে উল্লেখ্য করা হয়, নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও কিন্তু পরিপূর্ণ ফিট নন, তারপরও তাকে দলে রাখা হয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচ খেলবেন না। পরবর্তী ম্যাচগুলো খেলবেন। অন্য দেশে অভিজ্ঞতার দাম দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের দেশে নয় কেন? এসব বিষয় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য চরম মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ অবস্থায় হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তামিম ইকবালকে জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত করে বিশ্বকাপে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিনভর নাটকীয়তা শেষে তামিম ইকবালকে ছাড়াই বাংলাদেশের ওয়ানডে বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়। এদিন রাত ৮টা ১৬ মিনিটে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিও পোস্ট করে ১৫ সদস্যের এই স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়। এ সময় টাইগারদের বিশ্বকাপ জার্সিও উন্মোচন করা হয়।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার আগেরদিন রাত থেকেই নানান গুঞ্জন চাউর হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। গুঞ্জন ওঠে, বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচ খেলতে চান তামিম। তবে তামিমের ঘনিষ্ঠ সূত্রের মন্তব্য, এমন কিছুই তামিম বলেননি। নির্বাচকরাও অকপটে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আকস্মিকভাবে লাল-সবুজের এই ওপেনারের বাদপড়ার পর নানান প্রশ্নের উত্থান হয়েছে। যদিও দাবি করা হচ্ছে, ফিটনেস ইস্যুতে বাদ পড়েছেন তামিম। আর টিম ম্যানেজমেন্টও এই ওপেনারকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি।
নানান গুঞ্জনের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন তামিম। সেখানে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে নানান প্রশ্নোত্তর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
ফেসবুকে তামিম ইকবাল লিখেছেন, আজকে বাংলাদেশ জাতীয় দল ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পর একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আমি সবাইকে বিগত কয়েক দিনের ঘটে যাওয়া ব্যাপারে কিছু কথা বলব।
তিনি আরও লিখেছেন, গত কয়েক দিন অনেক কথাই গণ মাধ্যমগুলোতে এসেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ দলের এবং আমার ভক্ত-সমর্থক সবারই পরিষ্কার ভাবে সব কিছু জানার অধিকার রাখে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।