জুমবাংলা ডেস্ক : পদ্মা সেতুতেই গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা আক্তার রেনুকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেন তার পরিবার। ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশার সেই সেতুরই উদ্বোধন হতে বাকি পাঁচ দিন।
তিন বছর আগে পদ্মা সেতু বানাতে শিশুদের কাটা মাথা লাগবে, এমন গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিলো গোটা দেশ জুড়েই। যা আলোড়ন তুলেছিলো গোটা দেশজুড়ে।
সে সময় রেনুকে ছেলে ধরা সাজিয়ে সরকার মাথা নিতে পাঠিয়েছে এমনটা রটিয়ে হত্যা করা হয়। সেদিন রেনু সন্তানদের ভর্তির খোঁজ নিতে প্রধান শিক্ষকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
পদ্মা সেতু কারোর কাছে সাহসের প্রতীক, কারো মনে জাগায় সম্ভাবনা, কেউ স্বপ্ন বুনছেন সহজে নিরাপদে যাতায়াতের। আর দেশের কাছে যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আত্মমর্যাদার প্রতীক।
তবে, পদ্মা পাড়ের মানুষ না হয়েও পদ্মা সেতু বড় আপনার হয়ে আবেগতাড়িত করছে ঢাকার একটি পরিবারের কয়েকজন মানুষকে।
পদ্মা সেতুর কোনো অংশ না হয়েও তারা হারিয়েছেন তাদের পরিবারের আপন মানুষটিকে। মা হারা হয়েছেন দুই সন্তান তাহসিন আল মাহির (১৩) ও তাসমিম মাহিরা তুবা (৭)।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরের মাস, জুলাইয়ের ১৯ তারিখ গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা আক্তার রেনু হত্যার তিন বছর হবে।
মামলায় আসামিরা যে জবানবন্দী দিয়েছে বা নিজেদের করা খোঁজ খবরে রেনুর পরিবার এখন জানে, গুজবের রাজনীতির জন্য সেদিন তাদের পরিবারে বড় বিপর্যয় নেমে এসেছিল।
বাবা দায়িত্ব না নিলেও রেনু একাই দুই সন্তানকে বড় করবে বলে সেদিন স্কুল ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়েছিল লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের তাসলিমা বেগম রেনু।
সেই দুই সন্তান এখন বড় হচ্ছে দুই ভাগে। ভাই স্কুলের হোস্টেলে। আর ছোট বোনের কাছে খালামনিই এখন মা, আর মা কথা না বলা গোল চাঁদ।
খালার কাছে থাকা তুবা এখন পড়ালেখা করছে প্রথম শ্রেণিতে। আর মাহিরকে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মাইলস্টোন স্কুলে। সেখানে হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করছে সে।
তসলিমা বেগম রেনুকে হারানোর পর টুকটাক আর্থিক সাহায্য পেলেও দিন গড়ানোর সাথে সাথে বাড়ছে অনিশ্চয়তাও।
তরতাজা মেয়েটি লাশ হয়ে ফেরার পর থেকে রেনুর মা ছবুরা খাতুন হারিয়েছেন মানসিক ভারসাম্য। সেই থেকে বিছানায় নিশ্চল হয়ে পড়ে আছেন।
সব মিলিয়ে রেনুর পরিবার নিজেদের মনে করেন গুজব রাজনীতির নিষ্ঠুর বলি আর রাজনীতির অর্জন পদ্মা সেতু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।