মুফতি আবদুল্লাহ তামিম : তীব্র তাপদাহ দেশজুড়ে। গরমে খুবই কষ্টে দিন পার করছে মানুষ। গরম নাকি সবে শুরু। এবার প্রচণ্ড গরম পড়বে। গরম আসলে কোথা থেকে আসে। নবীজি এ বিষয়ে কী বলেছেন?
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব, আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। মহান আল্লাহ তখন তাকে দুটি নিঃশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন।
একটি নিঃশ্বাস শীতকালে, আরেকটি গ্রীষ্মকালে। শীত ও গ্রীষ্মের ব্যাপারে হাদিসের ব্যাখ্যা হলো, শীত ও গ্রীষ্মের তীব্রতা আসে জাহান্নামের নিঃশ্বাস থেকেই। এ কারণেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো। (বুখারি ৩২৬০)
আরবের মরু এলাকায় উত্তপ্ত বালু ও মরুঝড়ের কারণে সেখানে ভীষণ গরম দেখা দিত। তাই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোহরের নামাজ কিছুটা বিলম্বে আদায় করতেন। এ জন্য গরম বেশি পড়লে জোহরের নামাজ দেরিতে পড়া সুন্নত।
হযরত আবু জার রা. বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। একসময় মুয়াজ্জিন জোহরের আজান দিতে চেয়েছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মুয়াজ্জিন আজান দিতে চাইলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (পুনরায়) বলেন, গরম কমতে দাও।
এভাবে তিনি (নামাজ আদায়ে) এত বিলম্ব করলেন যে আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচণ্ড হলে উত্তাপ কমার পর নামাজ আদায় করো। (বুখারি ৫৩৯)।
সুতরাং গরমের তীব্রতা জাহান্নামের তীব্রতার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই তীব্র গরমে জাহান্নামের কথা স্মরণ করে আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া। ফরজ ইবাদতগুলো সঠিকভাবে আদায় করা।
কোরআনে জান্নাতের কথা বলা হয়েছে, আল্লাহ বলেন, সেখানে তারা হেলান দিয়ে আসীন থাকবে সুসজ্জিত আসনে, তারা সেখানে খুব গরম অথবা খুব শীত দেখবে না। (সুরাতুত দাহর ১৩)
তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে নামাজ আদায়
তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহর দরবারে বৃষ্টি কামনা করে নামাজ পড়া ও দোয়া করা সুন্নত। ইসলামি পরিভাষায় এই দোয়ার নাম ‘ইসতিসকা’ বা সিক্তকরণের দোয়া এবং নামাজের নাম ‘সালাতুল ইসতিসকা’ বা ‘বৃষ্টি কামনায় নামাজ’। বস্তুত যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা নানা প্রতিকূলতায় গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ অন্তরে তওবা-ইস্তেগফার করতে হয়।
কেউ অন্যের হক বা অধিকার নষ্ট করলে তা ফেরত দিয়ে দোয়া করতে হয়। তবেই আল্লাহ তাআলা মানুষের মনোকামনা পূরণ করেন। বৃষ্টি দিয়ে জমিন সিক্ত করেন। এ নামাজ মাঠে গিয়ে আদায় করতে হয়। মাঠে যাওয়ার আগে ও পরে সবাই তওবা করতে হয়।
তওবা করলে আল্লাহ তাআলা রমহতের বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তখন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, বললাম, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য অজস্র বৃষ্টিধারা প্রবাহিত করবেন, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি দ্বারা সাহায্য করবেন। (সুরা নুহ ১০-১২)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।