জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে বেধরক পিটুনি, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বরখাস্ত হওয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের ইস্যুতে নানা নাটকীয়তার সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
হারুনের প্রসঙ্গ এবার জাতীয় সংসদে উঠে এলো। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন ও এ সংক্রান্ত সেবা নির্বাচন কমিশনের হাত থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিল, ২০২৩’ বুধবার সংসদে পাশ হয়েছে। এই বিলের আলোচনায় এডিসি হারুনের প্রসঙ্গ উঠে আসে।
সমালোচনার জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘যিনিই অপরাধ করুক শাস্তি কিন্তু পেতে হবে। আপনারা যে পুলিশ অফিসারের কথা বলেছেন তিনিও আইনের ঊর্ধ্বে নন। তাৎক্ষণিক যে ব্যবস্থা সেটা নেওয়া হয়েছে। এখন তার শাস্তির ব্যবস্থাটা… যেহেতু মামলা হয়নি। এখনো কেউ মামলা করেনি। আমাদের তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী তার শাস্তির ব্যবস্থা অবশ্যই হবে।’
গত শনিবার রাতে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে নির্যাতন করেন এডিসি হারুন-অর-রশীদ। আহতরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম।
ভুক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন-অর-রশীদ তাদের থানায় নিয়ে বেদমভাবে পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য মিলে তাদের পেটান।
এডিসি হারুন-অর-রশীদ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে বলেন,‘শনিবার আমি আমার বাবা-মাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক পবিত্র কুমারের কাছে যাই। দুপুর ২টার দিকে আমাদের এডিসি ক্রাইম-১ ফোন করে বলেন, তার বুকে ব্যথা। সেজন্য বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক রশিদ স্যারের সিরিয়াল (অ্যাপয়েন্টমেন্ট) চান। আমি রমনা থানার ওসির মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬টায় সিরিয়ালের ব্যবস্থা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু ব্যস্ততার কারণে চিকিৎসক নির্ধারিত সময়ে এডিসিকে সময় দিতে পারছিলেন না। বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলার জন্য সেখানে যাই। আমি যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে (এডিসি সানজিদা) দেখেন। আমি বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় তখন ডিসি সানজিদার স্বামী মামুন এবং তার সঙ্গে আরও চার-পাঁচজন এসে পেশেন্টের রুমে যান। পরে বাইরে এসে কোনো কথা ছাড়াই মামুন আমার বাম চোখের ওপর একটা ঘুসি মারেন। তখন তার সঙ্গে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরাও আমার ওপর চড়াও হন।’
হারুনকাণ্ডে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দিতে আরও পাঁচ কার্যদিবস অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিল। বুধবার বেলা ১১টার দিকে ডিএমপি কমিশনার সময় বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নির্যাতনের ঘটনার পর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এডিসি হারুনকে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এডিসি সানজিদা আফরিনকে রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে (পিটিসি) বদলি করা হতে পারে। তবে সানজিদাকে রংপুর বদলি করার খবরের সত্যতা নেই বলে জানিয়েছেন ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, বুধবার পর্যন্ত এমন কোনো অর্ডার হয়নি। এডিসির বদলি বিষয়ে কোনো আদেশের কপি পাই নাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।