জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর বাড্ডার টেকপাড়া এলাকায় বোমা তৈরির একটি কারখানা থেকে ৬৫টি হাত বোমাসহ তিনজনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার রাতে র্যাব-৩ এর একটি দল ওই কারখানায় অভিযান চালায়। বোমাগুলো ভয়াবহ বিপদজনক এবং সামনে উপজেলা নির্বাচনসহ অন্যান্য ঘটনায় সেগুলো ব্যবহার করতে তৈরি করা হতে পারে বলে ধারণা করছে র্যাব।
বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে এক সংবাদ বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।
এর আগে বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়ে এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়। পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট পৌঁছলে অভিযান শুরু হয়।
অভিযান শেষে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক ফিরোজ কবীর সাংবাদিকদের বলেন, “আট থেকে দশদিন আগে নারায়ণগঞ্জকেন্দ্রিক একটি গ্রুপ ঢাকা শহরে বোমা তৈরি করছে- এমন খবর পায় র্যাব। এরপরে তাদের কার্যক্রম অনুসরণ করে তথ্য পাওয়া যায়, বুধবার পূর্ব বাড্ডার টেকপাড়া এলাকার একটি বাসায় আধুনিক হাতবোমা তৈরি করছে চক্রটি। সেই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল বাসাটি ঘিরে অভিযান চালায়। এ সময় হাতেনাতে তিনজনকে আটক করা হয় এবং ৬৫টি হাতবোমাসহ বোমা তৈরির বিপুল সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, “আটক তিনজন হলেন- ফাহিম, লিমন ও আকুল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, সজীব নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে দুই থেকে তিন ঘণ্টা কাজের জন্য আসেন। তারা মূলত জুতার কারখানায় কাজ করেন। ২৬ হাজার টাকার চুক্তিতে হাতবোমা বানানোর কাজে আসেন। তাদের দায়িত্ব ছিল বোমাগুলোর তৈরির পর ঘরের ভেতরে রেখে তালা মেরে চাবিটি মাটির নিচে পুতে রাখা। শুধু সজীবই জানবে চাবি রাখার বিষয়টি।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, “বোমাগুলো আজকে (বুধবার) রাতে অনাবিল পরিবহনের বাসে করে গাজীপুর পাঠিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। গাজীপুরে বোমাগুলো কার কাছে যাবে, সেটি জানেন না সজীব। তবে মাসুম নামে একজন সেগুলো বাস থেকে নিয়ে যাবেন সেই তথ্য ছিল তার কাছে।”
ফিরোজ কবীর বলেন, “র্যাব-৩ এর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট উদ্ধারকৃত বোমাগুলো পর্যালোচনা করে বলেছে, সেগুলো সাধারণ ককটেলের মতো নয়, ভয়াবহ বিপদজনক বোমা। এগুলো জর্দার কৌটাতে তৈরি করা হলেও ভেতরে বারুদ, কাচের টুকরো, সাইকেলের বল ও তারকাটাসহ অন্যান্য বিপদজনক বস্তু রয়েছে। সব থেকে বিপদজনক হলো, এটি ট্রিগার মেকানিজমে তৈরি। আর্জেস সেভেনটি-২ গ্রেনেডের মতো সিস্টেম। ট্রিগার চাপলে এটি মাটির ওপরে হাওয়াতে বিস্ফোরিত হয়। প্রায় ৩০ মিটার আশপাশে কোনো ব্যক্তি বা বস্তু ক্ষতির আওতায় পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “জঙ্গিদের কাটআউট সিস্টেমে অর্থাৎ চক্রের একজন অন্যজন সম্পর্কে জানলেও তৃতীয়জন সম্পর্কে জানবে না এমন পদ্ধতিতে বোমাগুলো বানানো হচ্ছিল। আটক তিনজন অর্থের বিনিময়ে বোমা তৈরি করতে এসেছে। তারা আগেও এভাবে টাকার বিনিময়ে বোমা তৈরি করেছে। বোমাগুলো কোথায় ব্যবহার হবে সুনির্দিষ্টভাবে তারা বলতে পারেনি। তবে সামনে উপজেলা নির্বাচনসহ অনেকগুলো ঘটনায় নাশকতা করতে ব্যবহার করতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা এর আগে তিন জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে বোমা তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। এর মধ্যে ডেমরা, সাভার ও বাড্ডাতেও প্রস্তুতি নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বাড্ডাতে সজীব বাসা ভাড়া নিয়েছিল। তার সিগন্যালে পরিত্যাক্ত বাসায় গিয়ে বোমা তৈরির কাজ করছিল তিনজন। এর সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।