জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পর্যায়ক্রমে খোলার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাঁরা জানান, প্রথমে খুলতে পারে স্কুল-কলেজ। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি এ সপ্তাহে খোলা সম্ভব না হয়, তাহলে পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী সপ্তাহে খোলা হতে পারে। যেহেতু কোটা সংস্কার আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক, এ ছাড়া সহিংসতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরে খোলা হতে পারে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার জেরে গত ১৮ জুলাই থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের মতো পাবলিক পরীক্ষাও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতির উন্নয়ন সাপেক্ষে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেই খোলার সিদ্ধান্ত আসবে। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার আদেশ জারি করবে।
যেহেতু কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরে বেশি সহিংসতা হয়েছে।
এর বাইরে বাকি ৬০ জেলার স্কুলগুলো আগে খোলা যায় কি না, সে ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্র জানায়, প্রাথমিক পর্যায়ের স্কুলগুলো সবার আগে খোলার ব্যাপারে আলোচনা রয়েছে। তবে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভায় বৈঠক রয়েছে। সেখানে বা বৈঠক শেষে আলাদাভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।
আমরা দ্রুততম সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চাই। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সূত্র জানায়, আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। এরপর পরীক্ষা আছে আগামী ৪ আগস্ট। ওই দিনের পরীক্ষা গ্রহণের পুরো প্রস্তুতি নিয়েছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। যদি শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা নেওয়া যায়, তাহলে এর পর থেকে স্কুল খুলতে বাধা থাকবে না। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার কথা ছিল আগামীকাল মঙ্গলবার, কিন্তু সহিংসতার কারণে তা পিছিয়ে আগামী ৬ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, যদি ৪ আগস্টের এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাসও শুরু হতে পারে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অগ্রাধিকার হলো আগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ করা। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ও বলেছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া সাপেক্ষে দ্রুততম সময়ে স্কুলগুলো খোলা হবে। কবে নাগাদ খোলা হতে পারে, সে ব্যাপারে এখনো আলোচনা হয়নি।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও বেসরকারিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলে। কিন্তু এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেহেতু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি ছিল, তাই আগেভাগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার সম্ভাবনা নেই।
ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘সরকারের নির্দেশে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধের চিঠি দিয়েছিলাম। তবে এখনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরকার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।