লাইফস্টাইল ডেস্ক : মেয়েদের কি শীত বেশি লাগে?
অনেকেই কিন্তু মনে করেন, পুরুষের চেয়ে নারীদের শীত বেশি লাগে। কিন্তু এ বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলছে?
বিজ্ঞান বলছে অন্য কথা।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ পরিচালিত একটি গবেষণা বলছে, শীত অনুভবের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
চলতি বছর পরিচালিত এই গবেষণায় ২৮ জন পুরুষ ও নারীকে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত একটি ঘরে রাখা হয়।
তাদের পোশাক ছিল হালকা—শার্ট, শর্টস বা স্কার্ট এবং মোজা। ঘরের তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পরিবর্তন করা হয়।
অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক তাপমাত্রা, গ্লুকোজ গ্রহণ, পেশির কার্যকলাপ ও ত্বকের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, ঠান্ডা ঘরে নারীদের শরীরের তাপমাত্রা পুরুষদের তুলনায় সামান্য বেশি ছিল। তবে এটি খুবই নগণ্য পার্থক্য।
নারীদের শরীর পুরুষদের তুলনায় সামান্য কম তাপ উৎপন্ন করলেও তাদের শরীরে বেশি চর্বি থাকায় তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা বেশি।
তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে শীতের অনুভূতি এবং শরীর কাঁপার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি।
গবেষকেরা বলেন, নারীদের জন্য আরামদায়ক তাপমাত্রা হলো ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরুষদের জন্য আরামাদায়ক গড় তাপমাত্রার থেকে মাত্র এক ডিগ্রি কম।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের ড. ব্লাঙ্কা ভ্যালডেস বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত ঘরে নারী ও পুরুষের শারীরিক তাপমাত্রার মধ্যে খুব সামান্য পার্থক্য রয়েছে। তবে নারীদের শরীরের চর্বির স্তর তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা শীতে তাদের কিছুটা বাড়তি সুরক্ষা দেয়।’
এতদিন কেন মনে হতো নারীদের বেশি শীত লাগে?
এর আগে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে নারীদের শরীর কম তাপ উৎপন্ন করে, বেশি তাপ হারায়। তাপমাত্রা পরিবর্তনে নারীদের শরীর বেশি সংবেদনশীল।
কিন্তু নতুন গবেষণাগুলো বলছে, এই ধারণাগুলো পুরোপুরি সঠিক নয়। তবে কিছু বিষয় শীতের অনুভূতিকে প্রভাবিত করতে পারে। যেমন: হরমোনের পরিবর্তন, শরীরের গঠন, স্বাস্থ্যগত অবস্থা বা ওষুধের প্রভাব।
গবেষকরা জানান, এটি একটি ছোট আকারের গবেষণা। এখানে সীমিত সংখ্যক অংশগ্রহণকারী ছিল। তাই এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টল্যান্ডের গবেষক ড. জনাথন স্নোডেন মনে করেন, ‘শীতের অনুভূতির পার্থক্য বোঝার ক্ষেত্রে শারীরিক গঠন ছাড়াও হরমোন এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের ভূমিকা রয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে গবেষণাগুলোতে পুরুষদের শারীরবিজ্ঞানকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো দেখাচ্ছে, নারীদের শীত বেশি লাগে—এই ধারণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি খুবই কম।’
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।