জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের বাজারে গত ৯ দিনে ৬ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ববাজারে স্থিতিশীল না হলে শিগগিরই দেশের বাজারেও ফিরছে না স্থিতিশীলতা।
বিশ্ববাজারে দ্রুত ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম। ইতোমধ্যে ছুঁয়েছে রেকর্ড দামও। এর প্রভাবে দেশের বাজারেও রেকর্ড ছুঁয়েছে দাম। তবে বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা কমতির দিকে থাকায় সবশেষ ৬ সমন্বয়ের মধ্যে ৪ বারই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাজুস, যা সমন্বয় করা হয়েছে গত ৯ দিনের ব্যবধানে।
বাজুসের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই দেশের বাজারে ১৩ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৭ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ৬ বার। এর মধ্যে এপ্রিলেই দাম সমন্বয় হয়েছে ৮ বার।
সবশেষ গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) টানা তৃতীয় দিনের মতো স্থানীয় বাজারে এই মূল্যবান ধাতুর দাম কমানো হয়েছে। গত তিন দিনের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমেছে ৫ হাজার ৮৬৮ টাকা। তবে গত ২১ এপ্রিল দেশে ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়িয়েছিল বাজুস। আর গত ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা কমানোর আগে গত ১৮ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংস্থাটি।
স্বর্ণের বাজারে এ অস্থিরতা কেন?
বিশ্ববাজারে ঘণ্টায় ঘণ্টায় স্বর্ণের দাম ওঠানামা করায় দেশের বাজারে ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে বা ২-১ দিনের ব্যবধানে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন। বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ও বাজুস সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন,
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতা ও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার নির্ধারণ নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে বাড়ছে স্বর্ণের দাম।
অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবির বলেন, বিশ্ববাজারে দ্রুত ওঠানামা করছে স্বর্ণের দাম। মূলত ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাবে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের ওঠানামা করছে। তাই দেশের বাজারেও দ্রুত দাম সমন্বয় করতে বাধ্য হচ্ছে বাজুস।
স্বর্ণ পাচার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে মাহফুজ কবির আরও বলেন, দাম সমন্বয় না করলে কমদামি স্বর্ণগুলো পার্শ্ববর্তী যেসব দেশে স্বর্ণের দাম চড়া, সেখানে পাচার হয়ে যেতে পারে।
অস্থিরতা কাটবে কবে?
স্বর্ণের বাজারের এ অস্থিরতায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। তাদের দাবি, মাসভিত্তিক দাম নির্ধারণের। তবে বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিংয়ের চেয়ারম্যান ও বাজুস সহসভাপতি মাসুদুর রহমান এ দাবিকে ভিত্তিহীন দাবি করে জানান,
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতা চলতে থাকলে এবং ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে দিলে স্বর্ণসহ তেল-গ্যাসের দাম বাড়তে থাকবে। তখন দেশের বাজারেও দাম সমন্বয়ের প্রয়োজন হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে দাম স্থিতিশীল না হলে কখনোই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম স্থিতিশীল রাখা সম্ভব নয়। আর বিশ্ববাজারে প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ওঠানামা করে স্বর্ণের দাম। এ জন্য ২৪ ঘণ্টার কম সময় বা ২-১ দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারেও সমন্বয় করা হচ্ছে দাম। এ বিশ্ববাজারে দাম ওঠানামার এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনেও স্থানীয় বাজারে এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৭.৫৫ শতাংশ। আর গত ১৬ মাসে বেড়েছে ৩৫.০৮ শতাংশ বা ৩১ হাজার ১৫ টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।