জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, সাদা ল্যাংড়া, কালা ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, গোপালভোগ, আম্রপালিসহ আরও নানা প্রজাতির আম উৎপাদন হয়ে আসছে। এসব আমের ভিড়ে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা হাঁড়িভাঙার। সম্প্রতি হাঁড়িভাঙা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এর পরেই এই আমের গুরুত্ব আরও বেড়েছে। চলতি জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম। এবার চাষি ও ব্যবসায়ীরা দেড়শ কোটি টাকা বিক্রির আশা করছেন বলে জানা গেছে।
কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ব হবে। হাঁড়িভাঙার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে বাগানগুলোতে আমের পরিচর্যা চলছে।
এদিকে হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণে গবেষণা জরুরি বলে দাবি করেছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এই আম পরিবহণের জন্য বিশেষ বাস ও ট্রেন সার্ভিস চালু করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে ন্যায্য দাম নিশ্চিতকরণে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। হাঁড়িভাঙা আমের রাজধানীখ্যাত পদাগঞ্জ হাটের রাস্তাঘাটের সংস্কার এবং হাটে আম বিক্রির শেড নির্মাণ, ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ানো, পাবলিক টয়লেট স্থাপন ও বৃষ্টির সময় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হোক।
জানা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার খোঁড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ এলাকাকে বলা হয় হাঁড়িভাঙা আমের রাজধানী। এখন মিঠাপুকুরের রানীপুকুর, আখিরাহাট, রূপসী, সর্দারপাড়া, পাইকারেরহাট, রুকনীগঞ্জ, বড়বালা, বালুয়া মাসিমপুর, লতিবপুর, ময়েনপুরসহ বদরগঞ্জের নাগেরহাট, কুতুবপুর, গোপালপুর, শ্যামপুর ও সদরের পালিচড়া এলাকায় হাঁড়িভাঙা আমের ব্যাপক চাষ হয়েছে। এ ছাড়া রংপুরের পীরগঞ্জ, সদর, পীরগাছা, তারাগঞ্জ, বদরগঞ্জ, কাউনিয়াসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে এ হাঁড়িভাঙা আমের চাষ বিস্তৃত হয়েছে। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় সুস্বাদু হাঁড়িভাঙা আম ইতোমধ্যে জিআই পণ্য স্বীকৃত লাভ করেছেন। জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম অর্থাৎ আগামী ২০ জুন থেকে গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে। এরপরই শুরু হবে হাঁড়িভাঙার আনুষ্ঠানিক বাজারজাত শুরু হবে।
কয়েকজন চাষি বলেন, রংপুর অঞ্চলের মানুষ এখন অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভের আশায় উঁচু-নিচু ও পরিত্যক্ত জমিতে প্রতি বছর হাঁড়িভাঙা আম চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এতে তারা লাভবান হচ্ছেন। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ আম আরও বেশি উৎপাদন হতো বলে তারা জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, চলতি বছর রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৩৫৯ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙার চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ টন। শুরুর দিকে প্রতি কেজি আম ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে আমের আকার ও পরিস্থিতির অনেক সময় দামের কমবেশি হতে পারে। তিনি বলেন, হাঁড়িভাঙা আম সংরক্ষণে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা করছে। তবে কবে নাগাদ গবেষণার ফল পাওয়া যাবে তা নিশ্চিত করে এখনো বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে হাঁড়িভাঙা আমের লাইফলাইন নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে গবেষণামূলক কাজ করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।