বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বিশ্ব প্রতিনিয়ত প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে ইন্টারনেটের গতি। ইন্টারনেট ছাড়া এখন তো এক মুহূর্ত কাটানো যেন অসম্ভব। বেশির ভাগ কাজের সঙ্গে এখন জড়িয়ে আছে ইন্টারনেট। তাই ইন্টারনেটের গতি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজ বিশ্বের দ্রুততম মোবাইল ইন্টারনেটের শীর্ষ সাত দেশ নিয়ে আলোচনা করব। এ তালিকায় স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের নাম নেই। তাই শুরুতে বাংলাদেশের অবস্থানটা জানাতে চাই। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান ওলকা স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্সের মতে, ১১১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৯তম। দেশে ডাউনলোড স্পিড মাত্র ২৭.০৮ এমবিপিএস। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ভারত। দেশটির মোবাইল ইন্টারনেটের গতি ১০১.৮০ এমবিপিএস। এবার ইন্টারনেট গতির দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলো নিয়ে জানা যাক।
সংযুক্ত আরব আমিরাত
বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম মোবাইল ইন্টারনেট রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটিতে ডাউনলোড স্পিডের গড় গতি ৩৫৯.৮৫ এমবিপিএস। কিছুদিন আগেও দেশটি দ্বিতীয় স্থানে ছিল। চলতি বছর জুলাই মাসে কাতারকে ছাড়িয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছে দেশটি। তবে আপলোড স্পিড অনেক কম। মাত্র ২০.০৮ এমবিপিএস। এটা শুধু সংযুক্ত আরব আমিরাতেই নয়, বরং সব দেশেরই আপলোড স্পিড কম থাকে। দেশটিতে নেটওয়ার্ক সরবরাহ করে দুবাইভিত্তিক ‘ডু’ এবং আবুধাবিভিত্তিক ‘এতিসালাত’ কোম্পানি। ১৯৭৬ সালে চালু হওয়া এতিসালাতই বিশ্বের সবচেয়ে বড় নেটওয়ার্ক অপারেটর।
কাতার
মাত্র দুই মাস আগেও কাতার ছিল দ্রুততম মোবাইল ইন্টারনেটের শীর্ষ দেশ। কাতারে নেটওয়ার্ক সরবরাহ করে ওরেডু ও ভোডাফোন। ওরেডুর প্রায় ১২ কোটি ১০ লাখের বেশি গ্রাহক রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়াজুড়ে প্রায় ১০টি দেশে কাজ করছে কোম্পানিটি। দেশটিতে ইন্টারনেটের গড় স্পিড ৩৪৩.৮৪ এমবিপিএস। আর আপলোড স্পিড ২৫.৮০ এমবিপিএস।
কুয়েত
কুয়েত বর্তমানে তৃতীয় দ্রুততম মোবাইল ইন্টারনেটের দেশ। এখানে গড় ডাউনলোড স্পিড ২৩২.১২ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ২৩.২৫ এমবিপিএস। দেশটিতে বেশ কয়েকটি মোবাইল ইন্টারনেট সরবরাহকারী রয়েছে। প্রধান তিনটি অপারেটর হলো এসটিসি, জাইন ও ওরেডু। তবে দেশটিতে সবচেয়ে ভালো ৫জি সেবা দিচ্ছে এসটিসি। আর জেইন-এর প্রায় ৫ কোটি ২০ লাখ গ্রাহক রয়েছে বিশ্বের ৭টি দেশে।
দক্ষিণ কোরিয়া
সম্প্রতি ষষ্ঠ স্থান থেকে উন্নতি হয়ে চতুর্থ স্থানে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়া। গড়ে ডাউনলোড স্পিড ১৩৯.৩৮ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ১৫.৮২ এমবিপিএস। দেশটির প্রধান সেবাপ্রদানকারী অপারেটর কেটি, এসকেটি ও এলজিটি। দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ এসকেটির সেবায় সবচেয়ে খুশি। তবে ৫জি সুবিধা ভালো দিচ্ছে কেটি। এসকেটির গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ।
ডেনমার্ক
ওপেনসিগন্যাল, টিডিসি, টেলিনর ও তেলিয়ার মতো বেশ কিছু অপারেটর ডেনমার্কে ইন্টারনেট সেবা সরবরাহ করে। প্রতিটি ওপারেটরের আলাদা আলাদা বৈষিষ্ট্য রয়েছে। মানে ভালো টিডিসি, দামে কম টেলিনর, সবচেয়ে ভালো ডাউনলোড স্পিড তেলিয়ার। তবে দেশটির সবচেয়ে বড় টেলিযোগাযোগ সংস্থা টিডিসি। ডেনমার্কের গড় ডাউনলোড স্পিড ১৩৩.৬৫ এমবিপিএস। আর আপলোড স্পিড ১৮.৮৬ এমবিপিএস।
নরওয়ে
চতুর্থ স্থান থেকে অবনতি হয়ে ষষ্ঠ স্থানে এসেছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী দেশ নরওয়ে। এখানে গড় ডাউনলোডের স্পিড ১৩২.০৭ এমবিএস এবং আপলোড স্পিড ১৮.৯৭ এমবিপিএস। নরওয়ের সেরা তিন ইন্টারনেট সরবরাহকারীর মধ্যে রয়েছে টেলিনর, তেলিয়া ও আইস। সবচেয়ে ভালো ডাউনলোড স্পিড সরবরাহ করে টেলিনর। ৫জি-তে এগিয়ে তেলিয়া এবং দামে কম মানে ভালো ধরনের সরবরাহকারী আইস।
নেদারল্যান্ডস
আজকের তালিকার শেষের দেশ নেদারল্যান্ডস। চীনকে হটিয়ে নবম স্থান থেকে সপ্তমে এসেছে দেশটি। গড় ডাউনলোড স্পিড ১২৮.৮০ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ১৯.২০ এমবিপিএস। দেশটিতে অনেকগুলো ইন্টারনেট সরবরাহকারী থাকলেও আধিপত্য বিস্তার করেছে কেপিএন। কারণ, সবচেয়ে ভালো ৫জি সেবার পাশাপাশি এটির দাম কম। ডাউনলোড স্পিডও কেপিএনের সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ একের মধ্যে সব অফার দিয়ে গ্রাহক বাড়িয়েছে কোম্পানিটি। নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপজুড়ে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ গ্রাহক আছে তাদের। তবে নেদারল্যান্ডসে টি-মোবাইলও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এদের বিশ্বেষত্ব সবচেয়ে ভালো আপলোড স্পিড।
এসব দেশের পাশাপাশি বর্তমানে আরও ৯টি দেশের ডাউনলোড স্পিড ১০০ এমবিপিএসের বেশি। সে দেশগুলো হলো সৌদি আরব (১২৪.৯৭), চীন (১২২.৭৯), বাহারাইন (১১২.৬৫), সিঙ্গাপুর (১০৮.৭৩), বুলগেরিয়া (১০৭.৪৪), যুক্তরাষ্ট্র (১০৫.০৩), মালয়েশিয়া (১০৪.৮০), ফ্রান্স (১০৪.০৩) ও ভারত (১০১.৮০)
সূত্র: স্পিডটেস্ট ডটনেট ও এক্সপ্যাট্রিয়েট ডটকম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।