বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জগতে দিন দিন প্রতিযোগিতা বাড়ছে। এ জন্য কিছুদিন পরপরই নিজেদের চ্যাটবটে নতুন প্রযুক্তি ও সুবিধা যুক্ত করছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। চ্যাটবট নিয়ে চলা এই প্রতিযোগিতায় সম্প্রতি বেশ আলোড়ন তুলেছে ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান এক্সএআইয়ের তৈরি গ্রোক চ্যাটবট।
দীর্ঘদিন ওপেনএআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। তবে সম্প্রতি রিয়েল টাইম তথ্য অনুসন্ধান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্লেষণের ক্ষমতা যুক্ত করায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে গ্রোক চ্যাটবট।
চ্যাটজিপিটি ও গ্রোক চ্যাটবটের কাজের সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা দেখে নেওয়া যাক—
ব্যতিক্রমী উত্তর
চ্যাটজিপিটিসহ বেশির ভাগ এআই চ্যাটবট নিরপেক্ষ ও সংযত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে গ্রোক চ্যাটবটের কাজের ধরন একটু আলাদা। নির্মাতারা চ্যাটবটটিকে এমনভাবে তৈরি করেছেন, যাতে এটি অনেক সময় প্রচলিত ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে ব্যতিক্রমী উত্তর দেয়। কখনো রসিকতা করে, কখনো প্রচলিত চিন্তাধারাকে চ্যালেঞ্জ করে ব্যবহারকারীদের চমকে দেয়।
রসবোধ
চ্যাটজিপিটি চ্যাটবটের উত্তর সাধারণত তথ্যনির্ভর হয়ে থাকে; কিন্তু গ্রোক এ ক্ষেত্রে বেশ ব্যতিক্রম। এটি প্রশ্নের ভিত্তিতে তীক্ষ্ণ ও বুদ্ধিদীপ্ত কৌতুক করতে পারে। এমনকি গ্রোকের একটি ‘ফান মোড’ রয়েছে, যা চালু করলে ব্যবহারকারীদের হাস্যরসাত্মক ও রসিকতাপূর্ণ উত্তর দিয়ে থাকে গ্রোক চ্যাটবট।
রিয়েল টাইম তথ্য অনুসন্ধান
চ্যাটজিপিটির বেশির ভাগ সংস্করণ নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা তথ্যের ভিত্তিতে উত্তর দেয়; কিন্তু গ্রোক সরাসরি রিয়েল টাইম ওয়েব সার্চ করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এটি এক্সের (সাবেক টুইটার) নির্দিষ্ট প্রোফাইল, পোস্ট ও লিংকের তথ্য বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। ফলে ব্যবহারকারীরা যেকোনো সময় নির্দিষ্ট বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সর্বশেষ তথ্য জানতে পারেন, যা চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে জানা সম্ভব নয়।
জ্ঞানের পরিধি
চ্যাটজিপিটির জ্ঞানের পরিধি নির্দিষ্ট। যার কারণে এটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ব্যবহারকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। তবে গ্রোক প্রতিনিয়ত নতুন তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। তাই এটি বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক গবেষণা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, খেলাধুলা ও অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য জানাতে পারে।
জটিল সমস্যার দ্রুত সমাধান
সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি তুলনামূলক দ্রুত হলেও, জটিল বিশ্লেষণমূলক সমস্যা বা গবেষণাধর্মী প্রশ্নের ক্ষেত্রে গ্রোক বেশি কার্যকর। গ্রোকের জটিল গাণিতিক বিশ্লেষণ ও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রয়েছে।
যে ক্ষেত্রে পিছিয়ে গ্রোক
বেশ কিছু ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির চেয়ে এগিয়ে থাকলেও গ্রোক চ্যাটবটের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো চ্যাটবটটি বেশি দিন আগের তথ্য নির্ভুলভাবে জানাতে পারে না। তাই ২০২৩ সালের আগের তথ্যের ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি তুলনামূলক নির্ভরযোগ্য। ফলে ইতিহাস, গবেষণা বা অতীতের তথ্য জানার ক্ষেত্রে গ্রোক চ্যাটবটের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে চ্যাটজিপিটি।
সূত্র : ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।