সিপন আহমেদ : ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গণমাধ্যমকে শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে। আর সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে দেয় প্রতিষ্ঠান সেটা হলো মজুরি বোর্ড। এই মজুরি বোর্ড আবার পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করে। অর্থাৎ মজুরি বোর্ড আইন অনুযায়ী, গণমাধ্যমকর্মীরা হলো শ্রমিক, খাটি বাংলায় কামলা।
কিন্তু আপনি যদি সরকারি কর্মচারিদের দিকে লক্ষ্য করেন, তাদের কিন্তু মজুরি হয় না। তাদের বেলায় বেতন কাঠামো। আর এই বেতন কাঠামো ঠিক করে মন্ত্রণালয়। সরকারি কর্মচারি আর গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে পার্থক্য এতটুকু।
বাংলাদেশের সংবিধান যে চারটি খুঁটির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে তার একটি হলো গণমাধ্যম। রাষ্ট্রের আরও তিনটি স্বতন্ত্র খুঁটি রয়েছে নির্বাহী বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ। রাষ্ট্রের এই তিনটি বিভাগ তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কিনা এটা পাহারা দেওয়ার একমাত্র দায়িত্ব গণমাধ্যমের। এজন্য গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের ‘ওয়াচডগ’ বলা হয়।
একটি পত্রিকা অফিসে একাধিক বিভাগ থাকে। যেমন- সম্পাদনা বিভাগ, রিপোর্টিং বিভাগ, ফটোগ্রাফি বিভাগ, কম্পিউটার বিভাগ, এডমিন বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ, ছাপাখানা বিভাগ ও সার্কুলেশন বিভাগ। আমি যেহেতু পত্রিকার মানুষ, কাজেই আমি পত্রিকার বিষয়টিই এখানে আলোচনা করবো।
এই যে এতোগুলা বিভাগ, যেখানে অসংখ্য মানুষ কাজ করে, প্রশ্ন হলো- এদের মধ্যে সাংবাদিক কারা? নাকি পত্রিকা অফিসে কর্মরত সকলেই সাংবাদিক? কেননা, পত্রিকা অফিসের পিয়নও অনেক জায়গায় নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়। দাপট তারাই বেশি দেখায়।
আইন অনুযায়ী, সংবাদ সম্পাদনা ও রিপোর্টিং বিভাগে কর্মরতরা সাংবাদিক হিসেবে পরিগনিত হবেন। তবে ফটোগ্রাফির সঙ্গে জড়িতরা আন্দোলন করলে তাদেরকেও সাংবাদিক হিসেবে গণ্য করা হয়। বর্তমানে সম্পাদনা বিভাগ, রিপোর্টিং বিভাগ ও ফটোগ্রাফি বিভাগে কর্মরত সকলেই সাংবাদিক। বাকিরা জেনারেল স্টাফ। সংবাদপত্রে কর্মরত প্রুফ রিডাররাও নিজেদের সাংবাদিক হিসেবে ঘোষণার দাবি করেছিলেন, কিন্তু সে দাবি বাস্তবায়ন হয়নি।
উল্লেখ, রিপোর্টিং বিভাগের সঙ্গে জেলা-উপজেলা সংবাদদাতারা/প্রতিনিধিরাও যুক্ত।
লেখক- সিনিয়র সাংবাদিক
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।