ধর্ম ডেস্ক : ব্যবসাকে দুটি ভাগে করা যায়। এক. হালাল জিনিসের ব্যবসা। দুই. হারাম জিনিসের ব্যবসা। যে ব্যবসার মধ্যে শঠতা, প্রতারণা, কপটতা, অবিশ্বস্ততা, ধোঁকা ও সুদি কারবার প্রভৃতি অসচ্চরিত্রের কোনো স্থান নেই, ইসলামে সেগুলো হালাল।
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা ২৭৫)। হে ইমানদাররা, তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কর না। তবে তোমাদের পরস্পরের সম্মতিতে ব্যবসা করা বৈধ (সুরা নিসা ২৯)
ব্যবসার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী কেয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিকিন ও শহীদের সাথে থাকবে।’ (তিরমিজি ১২০৯)
হালাল উপায়ে ব্যবসা করলে আল্লাহ তাআলা তাতে বরকত দেন। আর যে ব্যক্তি হারাম উপায়ে উপার্জন করবে তার দোয়া কবুল হবে না।
ব্যবসা করতে যেসব বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে
ব্যবসার ব্যস্ততা যাতে বান্দাকে মহান আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ব্যবসাকে ইবাদত গণ্য করা হবে যদি কেউ এই নিয়ত করে যে, আমি রিজিকের সন্ধান করছি যাতে আমি নিজের জন্য, পরিবারের জন্য ও সমাজের জন্য ব্যয় করতে পারি; প্রয়োজনে আল্লাহ তাআলার জন্য খরচ করতে পারি।
ব্যবসা হতে হবে সব ধরনের লোক ঠকানো বা প্রতারণামুক্ত। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনরা, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এরূপ করে (গাফেল হয়) তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। (সুরা মুনাফিকুন ৯)
আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেন, ‘সেসব লোক যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ, নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিগুলো উলটে যাবে’। (সুরা নুর ৩৭)
ব্যবসায় প্রতারণা নিষিদ্ধ করেছেন আল্লাহ তাআলা। তিনি বলেন, ‘দুর্ভোগ তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়। যারা মানুষের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন লোকদের মেপে দেয়, তখন কম দেয়। তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে। (সুরা মুতফফিফিন ১-৩)
কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়িক পণ্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। যার কারণে ভোক্তা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং সমাজে দুর্ভোগ ও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। প্রিয়নবী (সা.) এমন শ্রেণির ব্যবসায়ীদের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করেছেন। তিনি তাদের অভিশাপ দিয়ে বলেন,
ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহকারী রিজিকপ্রাপ্ত আর মজুত করে সংকট সৃষ্টিকারী অভিশপ্ত (বুখারি)। তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি মূল্যবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চল্লিশ দিন পর্যন্ত খাদ্যশস্য মজুত করে রাখে, সে আল্লাহ থেকে নিঃসম্পর্ক হয়ে যায় এবং আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন (মিশকাত)।
হালাল উপায়ে ব্যবসা করলে যেমন দুনিয়া ও আখেরাতে লাভ রয়েছে তেমনই মানসিক ও আত্মিক প্রশান্তি পাওয়া যায়। যারা হারাম উপায়ে ব্যবসা করে তাদের যেমন কঠোর শাস্তি রয়েছে তেমনই দুনিয়ায় পোহাতে হয় নানান দুর্ভোগ। এ জন্য সর্বদা হালাল উপায়ে ব্যবসা করতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।