জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসির) ড্রাইভার ছিলেন আবেদ আলী। দেশজুড়ে নামটি এখন বহুল আলোচিত। কারণ তিনি লাখ-লাখ টাকার বিনিময়ে বিসিএসসহ অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করে হয়েছেন কোটি-কোটি টাকার মালিক। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের (চ্যানেল-২৪) অনুসন্ধানে বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সামনে এসেছে।
যার সঙ্গে জড়িত পিএসসির চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও পিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জন। যাদের গতকাল গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে পিএসসির সাবেক ড্রাইভার আবেদ আলীর নামটি আসার সঙ্গেই স্যোসাশ মিডিয়ায় ‘তিনি করা ড্রাইভার ছিলেন’ তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। অনেকেই তাকে পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকের ড্রাইভার বলে অ্যাখা দেন। কিন্তু আবেদ আলী মোহাম্মদ সাদিকের ড্রাইভার ছিলেন না। তাহলে তিনি কার ড্রাইভার ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
এদিকে আবেদ আলী পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিকের ড্রাইভার ছিলেন বলে স্যোশাল মিডিয়ায় অনেকেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন। বিষয়টি সামনে আসলে মোহাম্মদ সাদিক গণমাধ্যমে বলেন, ‘সারা দেশে আলোচিত সৈয়দ আবেদ আলী আমার গাড়ি চালক ছিলেন না। আবু বকর সিদ্দিক নামে একজন আমার গাড়ি চালক ছিলেন। আবেদ আলীকে আমি চিনি না, তাকে কখনো দেখিনি। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদানের আগে পিএসসির সদস্য ছিলাম। আমি যোগদানের আগে ওই লোকের (আবেদ আলী) চাকরি গেছে বলে শুনেছি। ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ও এটিএম আহমেদুল হক চৌধুরী যখন পিএসসি চেয়ারম্যান ছিলেন তখন আবেদ পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়ি চালক ছিলেন। ইকরাম আহমদ যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন আবেদ বরখাস্ত হন। পরে তাকে চাকরিচ্যুতও করা হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রফেসর ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ছিলেন সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) নিয়োগপ্রাপ্ত অষ্টম চেয়ারম্যান। ২০০২ সালের ৯ মে তিনি পিএসসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন এবং ২০০৭ সালের ৭ মে পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
১৯৯৭ সালের দিকে রাজধানী ঢাকার ইন্দিরা রোডের পশ্চিম রাজাবাজার এলাকার একটি ব্যাচেলর মেসে থাকতেন আবেদ আলী। ওই মেসেই আবেদ আলীর পরিচয় হয় সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর এলাকার শাহিন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। শাহিনের মামা মেজবাহ চাকরি করতেন সচিবালয়ে। শাহিনের মাধ্যমেই পিএসসিতে গাড়িচালক হিসেবে চাকরি হয় তার।
প্রফেসর ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম যখন পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন, ততদিনে সৈয়দ আবেদ আলী প্রমোশন লাভ করে পিএসসির চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক হন। মূলত জিনাতুল নেসার ড্রাইভার ছিলেন আবেদ আলী। আর সে সময় থেকেই মূলত সৈয়দ আবেদ আলী প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দীর্ঘসময় ধরে তিনি একটি চক্রের সঙ্গে প্রশ্নফাঁস করে আসছিলেন। তবে ওই সময়ে তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন।
এদিকে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ প্রসঙ্গে পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেছেন, যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ হলে পিএসসি সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। এক্ষেত্রে আমরা কাউকে ছাড় দেব না। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্মসচিব আব্দুল আলীম খানকে। টিভিতে প্রচারিত প্রতিবেদনটি তদন্ত কমিটিকে দেওয়া হয়েছে। তারা সবটা নিয়েই তদন্ত করবে।
প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির হাতে পিএসসির দুই উপপরিচালক, এক সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। জড়িত অন্যদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে বলে সিআইডি জানিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।