আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশের প্রতিবেশী হয়েও নাগরিকদের ধরে রাখতে পারছে না কানাডা। এত এত সুযোগ-সুবিধা, তারপরও নিজ দেশে মন টিকছে না কানাডীয়দের।
উন্নত জীবনের জন্য মানুষ যখন কানাডায় যেতে চাইছে, তখন সেই দেশটির নাগরিকরা পাড়ি জমাচ্ছেন অন্য দেশে- মহাদেশে।
স্বপ্নের দেশ কানাডা। শিল্পোন্নত দেশটিতে পাড়ি জমানো অনেকেরই স্বপ্ন। কিন্তু এখন কানাডায় থাকাটাই না কি দুঃস্বপ্নের মতো। তাই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন নাগরিকরাই। উন্নত জীবনের আশায় কানাডায় আশ্রয় নেওয়া অভিবাসীরাও দেশ ছাড়ছে দলে দলে।
নতুন এক গবেষণায় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছে পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিস- টিক্সস কানাডা। দেশটিতে অভিবাসী হয়ে আসা ব্যক্তিদের ১৫ শতাংশেরও বেশি ২০ বছরের মধ্যেই কানাডা ছেড়ে গেছে। ১৯৮২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই ৩৫ বছর ধরে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে স্ট্যাটিস-টিক্সস কানাডা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সুনির্দিষ্ট করে কারা এবং কেনই বা তারা দেশ ছাড়ছেন। জানা গেছে, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, হংকং ও লেবাননের মতো দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের ২৫ শতাংশেরও বেশি কানাডায় ঢোকার ২০ বছরের মধ্যে নিজ দেশে ফেরত গেছেন।
মাতৃভূমিতে ভ্রমণ, চাকরি ও পড়াশোনার সুযোগ বাড়ায় তারা কানাডায় আর থাকতে চাইছেন না। অবশ্য কানাডা ছাড়ার পেছনে অন্য আরও কারণ রয়েছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, কানাডায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া। অনেক অভিবাসীর কাছে কানাডা একটি থ্রি স্টার হোটেল। কিন্তু খরচ ফাইভ স্টার হোটেলের মতো।
এ ছাড়া শ্রমবাজারে একীভূত হতে না পারা, নিজ দেশে স্বজনের মৃত্যু, প্রতিকূল আবহাওয়া, ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ না খাওয়াতে পারার মতো বিষয়গুলোর কারণে উত্তর আমেরিকা ছাড়ছে অনেকে।
কানাডায় প্রতি বছর গড়ে ২ থেকে ৩ লাখ অভিবাসী প্রবেশ করেন। ২০২১ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ অন্য দেশে জন্ম নিয়েছে। তবে ২০২২ সালে কানাডায় রেকর্ড পরিমাণ মানুষ প্রবেশ করে, যা ১৯৫৭ সালের পর সর্বোচ্চ। এই ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে সামনের দশকগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কানাডাকে অভিবাসীদের ওপর নির্ভর করতে হবে।
স্ট্যাটিস-টিক্সস কানাডার হিসাব বলছে, ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ কানাডীয় অন্য দেশে বাস করছেন। নিয়ম মেনে তারা কর দিলেও প্রাদেশিক নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন না। আবার স্বাস্থ্যসেবার মতো সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হন।
এখন এই কানাডীয়দের কীভাবে দেশের স্বার্থে কাজে লাগানো যায়, সেই সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।