লাইফস্টাইল ডেস্ক : প্রকৃতির রাজ্যে খাদ্য-খাদকের মধ্যে ভারাসাম্য থাকে বলেই টিকে আছে প্রাণিজগৎ। প্রতিটা প্রাণীরই আছে নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। যা তারা যুগ যুগ ধরে বয়ে চলেছে জিনের ভেতরে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
সাপ ও বিড়াল—দুই ধরনের প্রাণীরই নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আছে।
পরস্পর পরস্পরের খাদ্য তালিকায় থাকুক আর না থাকুক—মাঝে মাঝে এদের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে একটা আকর্ষণীয় ব্যাপার দেখা যায়। সেটা হলো ক্ষিপ্রতার প্রদর্শনী।
সাপ যখন ছোবল দেয়, সেটা করে খুব ক্ষিপ্রতার সঙ্গে।
কিন্তু বিড়ালের সঙ্গে এই ক্ষিপ্রতায় জয়ী হতে পারে না সাপ।
বিড়াল প্রকৃতিগতভাবে খুবই চটপটে এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন। বিড়াল সাপ দেখলে খুব দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং সাপের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়। বিড়ালের দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং তৎপরতা তাকে সাপের ছোবল থেকে নিরাপদ রাখে।
সাপ যে গতিতে ছোবল দেয়, বিড়ালের রিফ্লেকশন ক্ষমতা তার চেয়ে বেশি। সাপের দ্রুতগতিতে নিজের শরীরকে ছোবলের আওতা থেকে সরিয়ে নেয়। শুধু তা-ই নয়, এর সময়ের মধ্যেই সাপের মুখে পাল্টা চড় বসিয়ে দিতে পারে বিড়াল।
বিড়াল আসলে প্রাকৃতিকভাবে শিকারি প্রাণী। প্রাকৃতিক দক্ষতার অংশ হিসেবেই সে বিপদের আগাম সংকেত বুঝতে পারে।
সাপের মুভমেন্ট বা শরীরের ভাষা দেখেই বিড়াল আগাম সতর্ক হতে পারে এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে সাপের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে সক্ষম হয়।
ছোবল দেওয়ার জন্য সাপকে বিষদাঁতের ওপর নির্ভর করতে হয়। সাপ তার বিষদাঁত বের করে আক্রমণ করতে গেলে সামনে থাকা প্রাণীটির নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকতে হয়। কিন্তু বিড়াল সহজেই দূরত্ব বজায় রেখে সাপকে ধোঁকা দিতে পারে এবং সাপের আক্রমণ ব্যর্থ করে দেয়।
বিড়াল সহজেই সাপের চারপাশে ঘুরে ঘুরে সাপকে পরখ করতে পারে। সে সাপের মাথা বা দেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ লক্ষ্য করে আক্রমণ করে। ফলে সাপ আক্রমণ করার সুযোগ না পায়। এই কৌশলে বিড়াল সাপকে চাপে রাখে।
বিড়ালের ধারালো নখ এবং শক্তিশালী দাঁত সাপের জন্য বড় হুমকি। বিড়াল থাবা মেরে সাপকে আঘাত করে। এই আঘাতের জবাব সাপের কাছে নেই।
বিড়ালের ঘ্রাণশক্তি ও খুব প্রখর। এটা তাকে বিপদের আশঙ্কা সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। সাপের উপস্থিতি টের পেলেই বিড়াল দ্রুত তার অবস্থান পরিবর্তন করে এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখে। এতে সাপ বিড়ালকে সহজে আক্রমণ করতে পারে না।
বিড়াল কখনো সাপকে সরাসরি আক্রমণ করে না। বরং কৌশলে ধীরে ধীরে সাপকে বিভ্রান্ত করে এবং একটি সুবিধাজনক সময়ে আক্রমণ করে। এই সময় সাপ চমকে যায় ও ভড়কে যায়।
প্রকৃতিতে সাপ ও বিড়াল একে অপরের প্রতি স্বাভাবিকভাবেই সতর্কভাবে এড়িয়ে চলে। সাপ বিড়ালকে বিপজ্জনক মনে করে।কারণ বিড়ালের কৌশলগত দক্ষতা ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাকে সাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম।
অন্যদিকে সাপের বিষও বিড়ালের জন্য প্রাণসংহারি হতে পারে। তাই সাধারণত এই দুই প্রাণী পরস্পরকে এড়িয়ে চলে।
সূত্র : বিবিসি নেচার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।