জুমবাংলা ডেস্ক : শিল্প চর্চার সূত্রে বিশ্বজুড়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা জাতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইতালিয়ান। বিদেশে উচ্চশিক্ষার অন্যতম আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ভিন্ন সংস্কৃতি ও স্বতন্ত্র আচার-প্রথার জনগোষ্ঠী। সেখানে সব থেকে বেশি বৈচিত্র্য দেখা যায় ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোতে। যেখানে সহপাঠী বা সহকর্মীদের মধ্যে ভাষা থেকে শুরু করে বেশভূষায় থাকে যথেষ্ট ভিন্নতা।
মৌলিকতা ও সৃজনশীলতার সন্নিবেশে শিক্ষালব্ধ পারদর্শিতাকে তারা নিয়ে গেছে শিল্পের পর্যায়ে। আর এ কারণেই উচ্চশিক্ষার জন্য এই অপূর্ব দেশটিকে বেছে নেয় শিল্পানুরাগী শিক্ষার্থীরা।
ইতালিই কেনো বেছে নিবেন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ইতালিতে আছে বিশ্বের প্রাচীনতম সব বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের বিবর্তনে পুরোনো শিক্ষাব্যবস্থার ক্রমাগত উন্নয়নের পটভূমিতে এগুলোয় জমেছে শত বছরের ঐতিহ্য। বর্তমানে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কারিকুলাম ও স্কলারদের অভিজাত ফোরামগুলোতে সুপরিচিত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কিউএস ওয়ার্ল্ড র্যাঙ্কিংয়ে থাকা বিদ্যাপীঠগুলো হলো পলিটেকনিকো ডি মিলানো (১২৩), স্যাপিয়েঞ্জা ইউনিভার্সিটি অব রোম (১৩৪) ও ইউনিভার্সিটি অব বোলোগনা (১৫৪)।
গ্লোবাল পিইও (প্রফেশনাল এমপ্লয়ার অর্গানাইজেশন) সার্ভিসেস ও ফোর্বসের মতে, ইউরোপীয় অর্থনীতিতে তৃতীয় এবং গোটা বিশ্বে নবম বৃহত্তম দেশ ইতালি। সেই সূত্রে ইন্টার্নশিপ, অন দ্য জব ট্রেনিং ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্টের মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে দেশটিতে। চলুন ইতালিতে পড়াশোনার জন্য আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপসহ বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
প্রধান ভাষা ইতালিয়ান হলেও ইংরেজির প্রতি গুরুত্ব থাকায় প্রতিবছরই ভিড় বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের। বিশেষ করে মিলান, রোম ও তুরিন—ইউরোপের প্রধান শিক্ষার্থীবান্ধব শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম।
শিক্ষার পাশাপাশি শেনজেনভুক্ত দেশটির যে ক্ষেত্রটিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ থাকে, তা হলো পর্যটন। ইউএনডব্লিউটিও (ইউনাইটেড নেশনস ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন) অনুসারে, বিশ্ব পর্যটন র্যাঙ্কিংয়ে দেশটির অবস্থান চতুর্থ। এখন পর্যন্ত ইতালিতেই রয়েছে সর্বাধিক সংখ্যক ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট (৫৯)। এগুলোর মধ্যে ৫৩টি সাংস্কৃতিকভাবে স্বীকৃত ও ৬টিতে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিশেষত্ব।
ইতালির জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
• পলিটেকনিকো ডি মিলানো
• স্যাপিয়েঞ্জা ইউনিভার্সিটি অব রোম
• ইউনিভার্সিটি অব বোলোগনা
• ইউনিভার্সিটি অব পাডুয়া
• পলিটেকনিকো ডি তুরিনো
• ইউনিভার্সিটি অব মিলানো
• ইউনিভার্সিটি অব নেপলস ফেদেরিকো-২
• ইউনিভার্সিটি অব পিসা
• ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরেন্স
• ইউনিভার্সিটি অব তুরিনো
আরো জনপ্রিয় কয়েকটি বিষয়বলি
চারুকলা, ফ্যাশন ডিজাইন, ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক, হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম, মেডিসিন, কম্পিউটার সায়েন্স, অর্থনীতি, ফিন্যান্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি।
ভাষাগত যোগ্যতা কী লাগবে
ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও ইতালীয় উভয় ভাষায় কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। আর আপনি যদি ইতালীয় ভাষায় পারদর্শী না হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্য ইংরেজি ভাষায় কোর্স পছন্দ করতে হবে। প্রয়োজন হবে ভাষাগত যোগ্যতার । বর্তমানে ইতালিতে ভিসার জন্য IELTS ৬ স্কোর দরকার হয়। অন্যদিকে ইতালিও ভাষার ক্ষেত্রে কমপক্ষে p2 লেবেল ইউরোপাস ভাষার বাস্তব শ্রেণি বিভাগ প্রয়োজন হবে। কারণ b2 লেবেলে পাস করলে ইতালিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনাকে আবার পরীক্ষায় বসতে হবে। কিন্তু আপনি যদি c2 লেবেলে পাস করেন, তাহলে আপনাকে আর কোনো পরীক্ষার জন্য বসে থাকতে হবে না।
আবেদনের উপায়
অন্য শেনজেন দেশগুলোর মতো ইতালিও শিক্ষা ক্ষেত্রে দুই সেমিস্টার পদ্ধতি মেনে চলে। প্রথম ভর্তি মৌসুমটি পরিচিত ফল ইনটেক নামে, যার আবেদন কার্যক্রম শুরু হয় নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে। এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে যাবতীয় আবেদন শেষে কোর্স শুরু হয় সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বা অক্টোবরের শুরুতে। এই সময়টিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সর্বাধিক সংখ্যক কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি হন।
স্প্রিং নামের অপর ইনটেকটিতে আবেদন নেয়া হয় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এগুলোর সময়সীমা থাকে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ভর্তি শেষ করে কোর্স শুরু হয়।
এখানে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য পৃথকভাবে তাদের নিজস্ব ওয়েব পোর্টালে আবেদন করতে হয়। আবেদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, খরচসহ সুনির্দিষ্ট ডেডলাইনগুলো ওয়েবসাইটে বিস্তারিত উল্লেখ থাকে। এখানে খেয়াল রাখা উচিত যে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু একটি বিষয়ে আবেদন জমা দেয়া যায়।
প্রি-এনরোলমেন্ট
ইতালির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির একটি প্রধান বিষয় হলো প্রি-এনরোলমেন্ট। এটি যেকোনো কোর্সের জন্য আবেদন করার পূর্বশর্ত। এর জন্য শিক্ষার্থীকে ইউনিভার্সইটালি পোর্টালে নিবন্ধনের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়।
এ সময় পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় তথ্য ও নির্দেশনা পেতে এর ওয়েবসাইট গবেষণা ও অ্যাডমিশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। অতঃপর নির্বাচিত অধ্যয়ন প্রোগ্রামের জন্য ইউনিভার্সইটালি সাইটে প্রয়োজনীয় সব নথি আপলোড দিতে হবে। এভাবে প্রি-এনরোলমেন্টের অনলাইন আবেদন শেষ করলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার প্রস্তুতির কাজ শুরু করা হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীকে অধ্যয়ন ফি পরিশোধের জরুরি নির্দেশনা দেয়া হবে। সাধারণত শিক্ষাবর্ষজুড়ে তিন কিস্তিতে এই ফি নেয়া হয়। প্রথম কিস্তি নেয়া হয় ভর্তির সময়। পরবর্তী কিস্তিগুলো সুনির্দিষ্ট তারিখ সংশ্লিষ্ট ইউনিভার্সিটি থেকে জানানো হয়।
যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে
• অনলাইনে পূরণ করা পূর্ণ আবেদনপত্র
• বৈধ পাসপোর্ট
• বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার নথি
• স্নাতক প্রোগ্রামের জন্য হাইস্কুল ডিপ্লোমা বা সমতুল্য সনদ এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
• স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের জন্য স্নাতকের সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
• ডক্টরাল প্রোগ্রামের জন্য স্নাতকোত্তরের সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
• ভাষার দক্ষতা পরীক্ষার ন্যূনতম স্কোর
• আইইএলটিএসে ৬ বা টোয়েফল আইবিটিতে ৫৯
• মাস্টার্সের জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬ দশমিক ৫ কিংবা টোয়েফল আইবিটি ৭৯
• পিএইচডির জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৭ বা টোয়েফল আইবিটি ৯৬
• অধ্যয়ন ফি পরিশোধের রশিদ: তিন কিস্তির ন্যূনতম এক কিস্তি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি প্রায় ১২০ ও ১৮০ ইউরোর মধ্যে থাকে।
• সিভি
• স্টেটমেন্ট অব পারপাস
• একাধিক মোটিভেশন লেটার
• মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ও স্বাস্থ্যবিমা
• জিম্যাট বা জিআরই পরীক্ষার ফলাফল (মাস্টার্সের জন্য)
• পোর্টফোলিও: সৃজনশীল ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের জন্য
• গবেষণা প্রস্তাব: পিএইচডির জন্য
• যার অধীন গবেষণা করা হচ্ছে, তার সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য এবং শিক্ষার্থীর গবেষণার তত্ত্বাবধান করবেন এই মর্মে একটি সম্মতিপত্র
• প্রাসঙ্গিক পাবলিকেশনের সারাংশ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
• কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ, নির্বাচিত কিছু প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে
• বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্স ও প্রোগ্রাম বিশেষে আরো কিছু দরকারি কাগজ দিতে হতে পারে।
স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন পদ্ধতি
দীর্ঘমেয়াদি অধ্যয়নে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য ইতালির টাইপ-ডি ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। ন্যাশনাল ভিসা নামে পরিচিত এই ভিসায় ৯০ দিনের বেশি ইতালিতে বসবাসের অনুমতি লাভ করা যায়। ভিসার মেয়াদ থাকে নির্বাচিত ফুল-টাইম স্টাডি প্রোগ্রামের পুরো সময়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ইতালি অভিবাসনের গ্লোবাল পার্টনার ভিএফএস (ভিসা ফ্যাসিলিটেশন সার্ভিসেস)-এর মাধ্যমে টাইপ-ডি ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। ডাউনলোডের জন্য আবেদন ফরমটি পাওয়া যাবে এই https://visa.vfsglobal.com/one-pager/italy/bangladesh/english/pdf/visa-d-long-term.pdf লিংকে । এটি পূরণের পর প্রিন্ট করে নিজ হাতে সই করতে হবে এবং তারপর এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নথিপত্রের সংযুক্তিসহ ভিসা আবেদনকেন্দ্রে জমা দিতে হবে।
ভিসার আবেদনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
• সম্পূর্ণরূপে পূরণ করা এবং নিজ হাতে সই করা জাতীয় (টাইপ-ডি) ভিসা আবেদনপত্র।
• সদ্য তোলা ২ কপি রঙিন ছবি।
• ছবিগুলো অবশ্যই আইসিএও (ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন) ফরম্যাটের হতে হবে (আকার ৪ x ৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে তোলা ও সর্বোচ্চ বিগত ছয় মাসের মধ্যে তোলা)।
• প্রতিটি পৃষ্ঠার অনুলিপিসহ বৈধ পাসপোর্টের আসল কপি।
• পাসপোর্টের মেয়াদ শেনজেনভুক্ত যেকোনো দেশে পৌঁছার তারিখ থেকে পরবর্তী অন্তত তিন মাস হতে হবে। পাসপোর্টে কমপক্ষে দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে।
• ইতালির বিশ্ববিদ্যালয় বা এএফএএম ইনস্টিটিউটে (চারুকলা, সংগীত ও নৃত্যকলার প্রতিষ্ঠান) প্রি-এনরোলমেন্টের প্রমাণ (কেবল প্রি-এনরোলমেন্টের জন্য): ভর্তি ও অধ্যয়ন খরচ উল্লেখ করা আবশ্যক।
• ইতালির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির অফার লেটার।
• আবেদনকারীর আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ: ছয় মাস ধরে বাংলাদেশে পরিচালিত যেকোনো ব্যাংক কর্তৃক জারি করা শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
• কেউ স্পনসর করে থাকলে তার আর্থিক সম্পদের প্রমাণ। বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক থেকে দেয়া স্পনসরের গত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
• স্পনসরের সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের প্রমাণ (স্পনসর অবশ্যই রক্তের সম্পর্কের বা বৈবাহিক সূত্রে সম্পর্কিত হবেন)।
• স্কলারশিপ পেয়ে থাকলেও উপরোক্ত আর্থিক সম্পদের প্রমাণ প্রদর্শন করা অপরিহার্য।
• ইংরেজি ভাষা দক্ষতার প্রমাণ স্বরূপ আইইএলটিএস (ন্যূনতম স্কোর ৬) সার্টিফিকেট: প্রশংসাপত্র ইস্যুর তারিখ ভিসার আবেদনের তারিখের আগে দুই বছরের বেশি হওয়া যাবে না।
• ইতালিতে শিক্ষার্থীর বাসস্থানের প্রমাণ।
• অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় বা ভাড়া চুক্তি।
• একজন ইতালির নাগরিক বা দেশটিতে নিয়মিত বসবাসের পারমিটধারী বিদেশি নাগরিকের পক্ষ থেকে রেসিডেন্ট স্টেটমেন্ট। এর সঙ্গে স্টেটমেন্টে সইকারী ব্যক্তির পরিচয়পত্রের সংযুক্তির প্রয়োজন হবে।
• বিমানের অগ্রিম টিকেট বুকিংয়ের নথিপত্র।
• ভ্রমণবিমা: চিকিৎসা ফি, হাসপাতালে ভর্তি, প্রত্যাবাসন খরচসহ সর্বমোট ৩০ হাজার ইউরো।
• বিবাহিত হলে বিবাহের প্রমাণপত্র, তালাকপ্রাপ্ত হলে বিবাহ-বিচ্ছেদের সার্টিফিকেট এবং বিধবা বা বিপত্নীকদের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র।
ভিসা আবেদন জমা ও বায়োমেট্রিক নিবন্ধন
আবেদনের যাবতীয় কাগজপত্র একসঙ্গে করে ভিএফএস-এ যাওয়ার জন্য অনলাইনে কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্টের প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশে ভিএফএস সেন্টারের ঠিকানা-
ঢাকা: নাফি টাওয়ার (৪র্থ ও ৫ম তলা), ৫৩, দক্ষিণ গুলশান অ্যাভিনিউ, গুলশান ১, ঢাকা ১২১২।
চট্টগ্রাম: ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চট্টগ্রাম, (৫ম তলা) ১০২/১০৩ আগ্রাবাদ সি/এ। কমার্স কলেজ রোড, চট্টগ্রাম-৪১০০।
সিলেট: ৪র্থ তলা, নির্ভানা ইন কমপ্লেক্স, রামের দীঘির পাড়, মির্জাজঙ্গল রোড, সিলেট- ৩১০০।
যেকোনো সেন্টারের ক্ষেত্রে সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা একটার মধ্যে উপস্থিত হওয়া জরুরি। ই-মেইলে উল্লেখিত তারিখে প্রার্থীর ছবি তোলা এবং ১০ আঙুলের ছাপ নেয়ার মাধ্যমে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা হবে। এর সঙ্গে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার নেয়া হতে পারে। অবশেষে যাবতীয় কার্যক্রমের পর ভিসা ফিসহ আনুষঙ্গিক খরচ গ্রহণ সাপেক্ষে প্রার্থীকে একটি স্বীকৃতিপত্র বা রশিদ দেয়া হবে।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় ও আনুষঙ্গিক খরচ
স্টাডি ভিসা প্রস্তুত হতে সাধারণত ন্যূনতম ২১ কর্মদিবস প্রয়োজন হয়। তবে কাগজপত্র যাচাইসহ নানা কারণে ভিসা হাতে পাওয়ার সময়টি আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।
ইতালির ভিএফএসের ওয়েবসাইট অনুসারে, টাইপ-ডি ভিসা ফি ৫০ ইউরো। ভিএফএস গ্লোবাল সার্ভিস চার্জ বাবদ রাখা হয় ৩৮ ইউরো। সঙ্গে অতিরিক্ত ব্যাংক ড্রাফট ২৭০ টাকা।
পড়াশোনা সম্ভাব্য খরচ
বিষয়, প্রোগ্রামের স্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে ইতালির অধ্যয়ন খরচে যথেষ্ট ভিন্নতা রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভিন্ন মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাজেটের তারতম্য নির্ধারণ করে দেয়। লিপস্কলারের তথ্যানুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক অধ্যয়ন খরচ ৯০০ থেকে ৪ হাজার ইউরো। অন্যদিকে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোর্স মূল্য প্রতিবছর গড়ে ৬ থেকে ২০ হাজার ইউরো।
ইতালিতে স্কলারশিপ
শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার জন্য ব্যয়বহুল শহরগুলোতেই থাকতে হয়। এ ক্ষেত্রে সামগ্রিক খরচের চাপ সামলানোতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে স্কলারশিপ। লিপস্কলারের মতে, ইতালির সর্বোচ্চ পর্যায়ের স্কলারশিপগুলো নিম্নরূপ-
১. ইতালির পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রণালয়ের গভর্নমেন্ট স্কলারশিপে স্নাতক, মাস্টার্স বা পিএইচডির জন্য প্রতিবছর ৯ হাজার ইউরো মেলে।
২. ইউনিভার্সিটি অব বোলোগনার ইন্টারন্যাশনাল ট্যালেন্টস অ্যাট ইউনিবো স্কলারশিপ দেয় ৪ হাজার ৫০০ ইউরো এবং সম্পূর্ণ পড়াশোনার ফি মওকুফ।
৩. ইউনিভার্সিটি অব মিলানো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিলেন্স স্কলারশিপ প্রোগ্রাম শুধু মাস্টার্সের জন্য। এ বৃত্তিতে মেলে প্রতিবছর সর্বমোট আট হাজার ইউরো।
৪. স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব পাডুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাডুয়া ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স স্কলারশিপ। এটিও প্রতিবছর বরাদ্দ দেয় আট হাজার ইউরো।
খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ
ইতালিতে খণ্ডকালীন চাকরির জন্য স্টুডেন্ট ভিসার পাশাপাশি প্রয়োজন হবে রেসিডেন্ট ওয়ার্ক পারমিট। এই পারমিট সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা বা বছরে ১ হাজার ৪০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ দেয়। তবে এই অনুমতি দিয়ে ব্যবসা করা যাবে না। খণ্ডকালীন চাকরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে ‘১৫০ ওরে’। ‘ওরে’ হচ্ছে ইতালীয় শব্দ, যার অর্থ ঘণ্টা। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে মূলত নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাধারণত প্রশাসনিক বিভাগে) সর্বোচ্চ ১৫০ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। ঘণ্টাপ্রতি গড় মজুরিসহ জনপ্রিয় কয়েকটি চাকরির তালিকা হলো: ক্যাশিয়ার ১১ ইউরো, প্যাকেজ হ্যান্ডলার ১১ ইউরো, ওয়েটার ১০ ইউরো, কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট ১৫ ইউরো, ডেলিভারি বয় ১৭ ইউরো, রিসেপশনিস্ট ১২ ইউরো ও স্টুডেন্ট কোলাবোরেটরে ১৪ ইউরো। ইতালির সবচেয়ে ধনী শহর হিসেবে মিলানের বাজারে চাকরির মজুরি তুলনামূলকভাবে বেশি। দ্বিতীয় পর্যায়ের রয়েছে রোম আর সবচেয়ে কম মজুরি পিসাতে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।