বিনোদন ডেস্ক : গরমে চারিদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা। তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত জীবন। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় সর্বত্র ভ্যাপসা গরম বিরাজ করছে। মানুষ দাঁড়িয়ে থাকলেও ঘামতে দেখা যাচ্ছে। রোদের তীব্রতা বেশি হওয়ায় খুব অল্পতেই ক্লান্তি ভর করছে মানুষের শরীরে। তীব্র তাপপ্রবাহে তথৈবচ অবস্থা কাটাতে ঘরে ফিরে অনেকেই এসির তলায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউ কেউ বাজারে গিয়ে এয়ার কন্ডিশনার কিনছেন। তাতে প্রাণ জুড়াচ্ছে, ঘুম ভালো হচ্ছে।
হ্যাঁ, বাইরে থেকে আসা ঘর্মাক্ত শরীরে এসি শীতল জলের মতো অনুভূতি দেয়। কিন্তু জানেন কি, এই দুনিয়ায় এখনও কেউ কেউ আছেন, যারা এসি কেনার সামর্থ্য রাখেন কিন্তু পরিবেশের ক্ষতির আশংকায় তা ব্যবহার করেন না? বরং মানুষকে এসি ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করেন। তাদের একজন হলেন বিখ্যাত সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং।
‘একদিন খুব গরম ছিল। ও আমার বাড়িতে এলো, আমি এসি চালালাম। তখন ও বললো, এসি চালাচ্ছো কেন? অনেক বিল উঠবে তো! পরিবেশ নষ্ট হবে না? অবশেষে এসি বন্ধ করে দিলো। তারপর বললো– শ্রীজাতদা, তুমি কি ছোটবেলায় এসিতে মানুষ হয়েছো? তাহলে এখন কেন এসি লাগছে?’
গত বছরের শুরুর দিকে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথাই বলেছিলেন কবি, গীতিকবি শ্রীজাত।
অরিজিতের মুখে এসব কথা শুনে থ হয়ে গেছিলেন ফিল্মমেকার শ্রীজাত। এই স্বনামধন্য গায়কের জীবন-দর্শন সবার চেয়ে যে আলাদা, সেটা শ্রীজাত জানেন বলেই শ্রদ্ধায় মাথানত হয়ে আসে তার। তিনি বলেন, অরিজিৎ সিং-এর জীবনযাপন এতো বেশি সাদামাটা, যা এই স্তরের খ্যাতিলাভের পর বজায় রাখা খুব মুশকিল, প্রায় অসম্ভব বলা চলে। এজন্য আমি বলি– অরিজিৎ সিংকে দেখা যায়, কিন্তু ছোঁয়া যায় না।
এরপর অরিজিতের সঙ্গে তার আরও একটি ঘটনার প্রসঙ্গ টানেন শ্রীজাত। কবি জানান, গানটা (শ্রীজাত পরিচালিত ‘মানবজমিন’ ছবির গান ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না’) গাওয়ার পর আমি ওর কাছে পারিশ্রমিকের কথা জিজ্ঞাসা করি। ও বললো, ‘না, আমি তোমার থেকে পারিশ্রমিক নেব না’। আমি আবার বলি, না নিলে হবে না। এরপর অরিজিতের জবাব– ‘আচ্ছা, এক কাজ করো। তুমি আমাকে ১১ টাকা দিও।
শ্রীজাত বলে চলেন– আমি বললাম, দেখো এই গানের মিউজিক রাইটস যারা কিনছে, তাদের তো কনট্রাক্টে বলা যাবে না যে, অরিজিৎ ১১ টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছে! এরপর অরিজিৎ বললো, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে শ্রীজাতদা। আমি একটা বাচ্চাদের স্কুল চালাই। তাহলে যা দেয়ার তুমি ওদের দিয়ে দাও। পুজোর জামা হয়ে যাবে।
এই হলেন অরিজিৎ। মাটির মানুষ। যিনি নিজের আরামের কথা না ভেবে প্রকৃতি, পরিবেশ নিয়ে ভাবেন। যিনি বিনয়ের অবতার হন পাহাড়ের শীর্ষে উঠেও। যিনি পুজোতে বাচ্চাদের হাসিমুখে থাকার কথা ভাবেন। যিনি চাইলে বিশ-ত্রিশটি গাড়ি কিনতে পারেন, কিন্তু স্কুটিতে চড়ে যাতায়াত করেন। পরিবেশের জন্য সহায়ক হয়, এমন অনেক কিছুই করেন তিনি। যা হয়তো আটপৌরে ভুলে থাকেন আরামপ্রিয় অনেক মানুষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।