বিনোদন ডেস্ক : কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ প্রয়াত। একাধারে তিনি ছিলেন সংগীতশিল্পী, শিক্ষক ও সুরকার। শ্রোতারা তাঁর দরাজ গলার সুরে বুঁদ হতেন হরহামেশা। বুধবার (১৩ মার্চ) এই জনপ্রিয় শিল্পী পাড়ি জমিয়েছেন পরলোকে। নিজ বাসার একটি কক্ষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়।
১৯৭৩ সালে বাবা-মায়ের ইচ্ছায় বুয়েটে ভর্তি হয়েছিলেন সাদি মহম্মদ। তবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মন বসাতে পারেননি এই সংগীতশিল্পী। ১৯৭৫ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াকালে গানের টানে স্কলারশিপ নিয়ে সংগীত নিয়ে পড়তে চলে যান শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতী থেকে রবীন্দ্রসংগীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি। সেই থেকে গানের জগতে পথচলা শুরু।
রবীন্দ্রসংগীতে সাদির মূল পরিচিতি গড়ে উঠলেও আধুনিক গানেও তিনি সমান গুরুত্বপূর্ণ। অসংখ্য রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে তাঁর কণ্ঠে। সঙ্গে আধুনিক গানও। এ ছাড়াও তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।
একাধিক সাক্ষাৎকারে জানা যায়, বর্ষা ও বসন্তের গান ভীষণ প্রিয় ছিল সাদি মহম্মদের। সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র, উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেনের সিনেমা ছাড়াও হলিউডের ‘দ্য বাইসাইকেল থিভস’, ‘রোমান হলিডে’ ছিল তাঁর পছন্দের তালিকায়। এ ছাড়া বই পড়তে ভালোবাসতেন। তাঁর প্রিয় লেখকদের মধ্যে একজন ছিলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার পেয়েছেন সাদি মহম্মদ। তাঁর ভাই শিবলী মোহাম্মদ বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী।
জানা যায়, নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সাদি। মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ মারা যাওয়ার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। মা হারানোর বেদনা কোনোভাবেই কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। এভাবেই চলছিল।
বুধবার (১৩ মার্চ) তিনি রোজা রাখেন, ইফতারও করেন। এমনকি সন্ধ্যার পর নিজের রুমে গিয়ে তানপুরা নিয়ে সংগীতচর্চাও করেন। পরবিারের ধারণা, এরপরই হয়তো তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।