বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম বা এবিএস সারাবিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং নিরাপদ ব্রেকিং সিস্টেম হিসেবে গন্য। তবে আমাদের দেশে এবিএস এর বিষয়ে অনেকেই বিস্তারিত জানেন না। এ ব্যাপারে অনেকের রয়েছে কৌতুহল আবার অনেকের বাইকে এবিএস থাকলেও তারা জানেন না এবিএস কাজ করছে কিনা অথবা এবিএস কাজ করছে কিনা তা কীভাবে বোঝা যাবে। এছাড়া ইলেকট্রিক্যালি কন্ট্রল্ড এবিএস বিভিন্ন কারণেই অকার্যকর হতে পারে। তাই যদি জরুরি মুহুর্তে আপনার বাইকের এবিএস ফেইল বা অকার্যকর হয়, তাহলে ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
তাহলে কীভাবে বুঝব এবিএস অ্যাক্টিভ আছে কিনা? আর যদি এবিএস ফেইল করে তারইবা সমাধান কী? আজকে এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম নিয়ে এমন কিছু তথ্য ও পরামর্শ শেয়ার করতে যাচ্ছি যা জানা আপনার জন্য খুবই জরুরি।
প্রথমেই ছোট করে বলে নিচ্ছি, এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম থাকলে আপনি যত জোরেই ব্রেক করুন না কেন, তাতে চাকা লক হবে না। এতে বাইক স্কিড করার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে, সেই সাথে বাইক নিয়ন্ত্রণও সহজ হয়ে যাবে।
এবিএস সিস্টেম কিভাবে কাজ করে জানতে পারলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন আপনার বাইকের এবিএস কাজ করছে কিনা।
মোটরসাইকেলের এবিএস সাধারণত দুই ধরনের হয়- সিঙ্গেল চ্যানেল ও ডুয়াল চ্যানেল। এবিএস সিস্টেমে থাকে একটি প্রেশার পাম্প, একটি রোটর, একটি সিগনাল সেন্সর এবং ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট। চাকায় রোটর ও স্পিড কাউন্টার সেন্সর লাগানো থাকে, যার মাধ্যমে চাকার স্পিড সংক্রান্ত তথ্য কন্ট্রোল ইউনিটে যায়। যখন ব্রেক করা হয় তখন কন্ট্রোল ইউনিট এবিএস পাম্পের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রেশার বা চাপ ঠিক রেখে অতিরিক্ত প্রেশার রিলিজ করে দেয়, এতে চাকা লক হয় না, ব্রেকিংয়ের দূরত্ব কমে আসে এবং নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিত হয়।
এবার আসুন জেনে নেই কীভাবে বুঝবেন যে, এবিএস ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, এবিএস ফেইল করার কারণ এবং সমাধান সম্পর্কে…
যদি আপনার বাইকে এবিএস থাকে তাহলে বাইকের মিটার কনসোল প্যানেলে ABS লেখা একটা হলুদ চিহ্ন দেখতে পাবেন। বাইক ৬-৮ কিলোমিটার অতিক্রম করলে স্বয়ক্রিয়ভাবে নিভে যায়। এই লাইট নিভে যাওয়ার মানে হচ্ছে এবিএস এখন অ্যাক্টিভ। আর যদি দেখেন লাইট জ্বলেই আছে তাহলে বুঝতে হবে এবিএস কাজ করছে না।
এবিএস যদি কাজ না করে, তাহলে হার্ড ব্রেক করলে চাকা লক হয়ে স্কিড করবে। তাই এবিএস লাইট জ্বলে থাকলে প্রথমেই চেক করতে হবে এবিএসের ফিউজ কেটে গেছে কিনা। অনেক সময় কেটে যাওয়া ফিউজ রিপ্লেস করে দিলে এবিএস পুনরায় কাজ শুরু করে।
স্পিড কাউন্টার সেন্সর ঠিকঠাক রিডিং না দিলেও এবিএস ফেইল করতে পারে। কন্ট্রোল ইউনিট অথবা এবিএস মটর/পাম্প নস্ট হলেও এবিএস কাজ করবে না। সেক্ষেত্রে পাম্প রিপ্লেস করতে হবে। এছাড়া বাইক সার্ভিস অথবা চাকার লিক সারানোর সময় অদক্ষ হাতে চাকা খোলা বা লাগানোর সময় অসাবধানতাবশত এবিএস ডিস্ক রোটর বাঁকা হয়ে যায় অথবা সেন্সর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এগুলোও এবিএস ফেইল করার কারণ।
তাই এবিএস সিস্টেম চেকআপ এবং সার্ভিসের কাজটি অবশ্যই অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দিয়ে করাতে হবে। এবিএস ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা তা নজরদারিতে রাখতে হবে। কারণ জরুরি পরিস্থিতিতে এবিএস কাজ না করলে কী হতে পারে সেটা আশা করি ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই।
এবিএস নিয়ে আপনি কী কী সমস্যায় পড়েছেন আর কীভাবে সমাধান করেছেন তা কমেন্টে লিখে জানাতে পারেন। এতে অনেকে উপকৃত হবে।
লেখক: অ্যাডমিন Bike Doctor BD
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।