মাওলানা নোমান বিল্লাহ : জামাতে নামাজ এত গুরুত্বপূর্ণ যে যুদ্ধক্ষেত্রেও জামাতে নামাজ পড়ার পদ্ধতি বর্ণনা করে কোরআনে আয়াত নাজিল করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাঁধে ভর করে হলেও জামাতে নামাজ পড়তে এসেছিলেন।
তাই প্রত্যেক পুরুষের জন্য ফরজ নামাজ জামাতে আদায় করা ওয়াজিব। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন,
وَ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ
আর তোমরা যথাযথভাবে নামাজ পড় এবং জাকাত দাও আর নামাজিদের সঙ্গে (জামাতে) নামাজ আদায় কর। (সুরা বাকারা ৪৩)
পবিত্র কোরআনের আয়াত থেকে জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব জানা যায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং (হে নবী,) আপনি যখন তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকেন ও তাদের নামাজ পড়ান, তখন (শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলার সময় তার নিয়ম এই যে) মুসলিমদের একটি দল আপনার সঙ্গে দাঁড়াবে এবং নিজেদের অস্ত্র সঙ্গে রাখবে। অতঃপর তারা যখন সেজদা করে নেবে, তখন তারা তোমাদের পেছনে চলে যাবে এবং অন্য দল, যারা এখনো নামাজ পড়েনি, সামনে এসে যাবে এবং তারা আপনার সঙ্গে নামাজ পড়বে। তারাও নিজেদের আত্মরক্ষার উপকরণ ও অস্ত্র সঙ্গে রাখবে। (সুরা নিসা ১০২)।
জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আজান দেওয়া এবং প্রথম কাতারে দাঁড়ানোর মধ্যে যে কী মর্যাদা আছে তা যদি মানুষ জানতে পারত, তাহলে তা পাওয়ার জন্য তারা প্রয়োজনবোধে লটারি করত। দুপুরের নামাজের যে মর্যাদা আছে তা যদি তারা জানতে পারত, তাহলে তারা এটা লাভ করার জন্য প্রতিযোগিতায় লেগে যেত। এশা ও ফজরের নামাজের মধ্যে যে (তাদের জন্য) কী মর্যাদা রয়েছে, তা যদি জানতে পারত, তাহলে তারা হামাগুঁড়ি দিয়ে হলেও এসে নামাজে উপস্থিত হতো।’ (মুসলিম ৮৬৭)
জামাতে নামাজ আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে রসুল (সা.) বলেন, ‘জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়া একাকী নামাজ পড়ার চেয়ে ২৭ গুণ বেশি মর্যাদার।’ (বুখারি ৬৪৫, মুসলিম ৬৪০)
রসুলুল্লাহ (সা.) জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে বিভিন্ন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এক হাদিসে নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আজান শুনল এবং তার কোনো অপারগতা না থাকা সত্ত্বেও জামাতে উপস্থিত হলো না, তার সালাত হবে না। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৭৯৩)
রসুল (সা.) জামাতে অনুপস্থিত ব্যক্তির ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি জারি করেছেন। তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার কথা বলেছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমার প্রাণ যার হাতে, তার কসম করে বলছি। অবশ্যই আমি সংকল্প করেছি, আমি কাঠ সংগ্রহ করার নির্দেশ দেব, তারপর আমি নামাজের হুকুম দেব এবং এ জন্য আজান দেয়া হবে, তারপর আমি এক ব্যক্তিকে হুকুম করব সে লোকদের নামাজ পড়াবে। এরপর আমি ওই লোকদের দিকে যাব, যারা জামাতে হাজির হয়নি। এবং তাদের বাড়িঘর তাদের সামনেই জ্বালিয়ে দেব। (বুখারি ২৪২০)
হাদিসে পুরুষদের জামাতে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে যে জোর দেয়া হয়েছে তাতে কোনো পুরুষের উচিত না, ফরজ নামাজ জামাত ছাড়া আদায় করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।