লাইফস্টাইল ডেস্ক : চেম্বারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক যখন হাসিমুখে আমাদের হাতে প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন, তখন অজান্তেই মনে খানিকটা আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু প্রেসক্রিপশনের দিকে তাকাতেই হয় চক্ষু ছানাবড়া। সর্বনাশ! কী লিখেছেন ডাক্তার সাহেব? কিছুই তো বোঝা যাচ্ছে না।
ডাক্তারের দুর্বোধ্য হাতের লেখার উত্তর খুঁজতে তাড়াতাড়ি ছুটতে হয় ফার্মেসিতে বসা ওষুধ বিক্রেতার কাছে।
ব্যতিক্রম থাকলেও কমবেশি সবারই রয়েছে এই অভিজ্ঞতা। স্বভাবতই মনে কৌতূহল জাগে, কেন অধিকাংশ ডাক্তারেরই হাতের লেখা এত খারাপ হয়? চলুন, উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক-
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হাতের লেখা তাদেরই অসুন্দর হয়, যাদের মস্তিষ্ক খুব দ্রুত কাজ করে। বুদ্ধিমত্তার দ্রুততার সাথে লেখার গতির তাল মেলাতেই অনেকে হারিয়ে ফেলেন তাদের হাতের লেখার সৌন্দর্য। তবে মস্তিষ্ক দ্রুত কাজ করা সব ব্যক্তিই তো আর ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত নন। তার মানে, ডাক্তারদের হাতের লেখা খারাপ হওয়ার পেছনে আরও কারণ রয়েছে।
ডাক্তারদের হাতের লেখা হওয়ার খারাপ হওয়ার পেছনে অনেকাংশেই দায়ী চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় থাকা জটিল, কটমটে এবং অদ্ভুত সব শব্দ। উচ্চারণ করতে দাঁত ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হওয়া এসব শব্দের সম্পূর্ণ শুদ্ধ বানান রপ্ত করা একপ্রকার অসম্ভবই বলা চলে। তাই, শিক্ষাজীবন থেকেই প্রথম দুই বা তিন অক্ষর ঠিক রেখে বাকিটা টানা অক্ষরেই লিখেন ডাক্তাররা যাতে ভুল ধরা না পড়ে। পরবর্তীতে এটি অভ্যাসে পরিণত হয়।
পাশাপাশি দ্রুতলিখনও ডাক্তারদের হাতের লেখা খারাপ হওয়ার পিছনে অন্যতম একটি কারণ। মেডিকেলের পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীদের খুব কম সময়ে অনেক তথ্য লিখতে হয়। পেশাগত জীবনেও রোগী দেখার সময় ডাক্তারদের বিভিন্ন তথ্য টুকে রাখতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই, তাদের পক্ষে হাতের লেখার সৌন্দর্য রক্ষা করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না।
লম্বা সময় ধরে রোগী দেখার কারণে অধিকাংশ ডাক্তারই অবসাদে ভোগেন। ভাবুন তো, প্রতিদিন শত শত রোগীর হাজারো সমস্যা শোনা, তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সে অনুযায়ী ওষুধ লিখে দেওয়া— নিশ্চয়ই চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। মানসিক অবসাদের কারণে ডাক্তাররা হাতের লেখার দিকে অত মনোযোগ দিতে পারেন না, ফলে হাতের লেখা হয় খারাপ।
মোটা দাগে এই তিনটি কারণই ডাক্তারদের হাতের লেখা খারাপ হওয়ার পিছনে দায়ী। তবে, হাজারো রোগের সমাধান যাদের কাছে মেলে, তাদের হাতের লেখা খারাপ হওয়াতে কী বা আসে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।