শামসুল আরেফীন : দোয়া বান্দা ও আল্লাহর মাঝে সেতুবন্ধ। দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গভীর হয়। তাই দোয়া করতে হয় সুস্থির মন ও প্রশান্ত মনোযোগ দিয়ে। দোয়া করতে গিয়ে তাড়াহুড়া করা অনুচিত। কাঙ্ক্ষিত বিষয়টি প্রাপ্তির জন্য অস্থির হতে নেই।
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়ে থাকে, যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, ‘আমি দোয়া করলাম। কিন্তু আমার দোয়া কবুল হলো না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৩৪০)
ইমান ছাড়া আমল : ইবাদত গ্রহণের প্রথম শর্ত হলো ইবাদতকারীর মুসলিম হওয়া। কারণ ইসলাম গ্রহণ ছাড়া যতই ভালো কাজ বা ইবাদত করা হোক না কেন, আল্লাহর কাছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে ব্যক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম অন্বেষণ করে, তার কাছ থেকে তা কখনোই কবুল করা হবে না এবং ওই ব্যক্তি আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সূরা : আলে-ইমরান, আয়াত : ৮৫)।
হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল, ইবনু জুদআন জাহেলি যুগে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখত এবং দরিদ্রদের আহার দিত। পরকালে এসব কর্ম তার উপকারে আসবে কি? রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো উপকারে আসবে না। সে তো কোনো দিন এ কথা বলেনি যে, ‘হে আমার রব! কিয়ামতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দিও।’ অর্থাৎ সে আল্লাহর অনুগত হয়নি। তাই তার আমল কোনো কাজে আসবে না। (মুসলিম, হাদিস : ২১৪)।
শিরক করা : আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য ইবাদত করা, তাঁর সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করা কিংবা আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য কোনো কিছু দান ও মানত করা বা জবাই করা ইত্যাদি শিরক। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের (নবিদের) প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে যে, যদি তুমি শিরক কর, তাহলে অবশ্যই তোমার সব আমল নষ্ট হয়ে যাবে এবং তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সূরা : জুমার, আয়াত : ৬৫)।
রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয় আমল : লোক-দেখানো বা প্রদর্শনপ্রিয় ইবাদতকে রিয়া বলা হয়। এটি ইবাদতকে ধ্বংস ও মূল্যহীন করে দেয়। মুসলিম শরিফে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন লোক দেখানো আমলকারীদের বিচারের একটি চিত্র তুলে ধরেছেন, যাতে একজন শহিদ (আল্লাহর পথে জীবন উৎসর্গকারী), একজন কুরআনের শিক্ষক ও একজন দানবীরের আলোচনা এসেছে। যারা খ্যাতি ও সুনামের মোহে জিহাদ, কুরআন শিক্ষা ও দান করত। তারা তাদের আমলের প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হয়। আল্লাহ তাদের বলেন, ‘তোমরা যা চেয়েছ পৃথিবীতে তা পেয়েছ। সুতরাং আজ আমার কাছে তোমাদের কোনো প্রাপ্য নেই।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৫২৭)।
অশুদ্ধ নিয়তের আমল : ইসলামী পরিভাষায় নিয়ত সাধারণত ভালো কাজের ইচ্ছাগুলোকেই বোঝায়। ইমাম বায়দাবি (রহ.) বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর বিধান পালনার্থে কোনো কাজের ইচ্ছা করাকে নিয়ত বলে। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া কেউ যদি কোনো কাজ বা ইবাদত করে তা কবুল হয় না। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আখেরাতের ফসল কামনা করে, আমরা তার জন্য তার ফসল বাড়িয়ে দিই। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার ফসল কামনা করে, আমরা তাকে তা থেকে কিছু দিয়ে থাকি। কিন্তু আখেরাতে তার জন্য কোনো অংশ থাকবে না।’ (সূরা : শুরা, আয়াত : ২০)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।