আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ভিয়েতনাম সফরকে রীতিমতো গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। চীন ও ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। গতবছর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুয়েন ফু চাংকে বিদেশীদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছিল চীন।
এই দুই এশিয় প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক ভালো। দু’দেশের বাণিজ্য বাড়ছে। তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শও এক। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।
ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের দক্ষিণপূর্ব এশিয়া বিশেষজ্ঞ জাছারি আবুজা বলেছেন, ‘শি জিনপিংকে লাল কার্পেট বিছিয়ে অভ্যর্থনা জানাবে ভিয়েতনাম।’
তিনি বলেন, ‘চীন গত বছর নভেম্বরে ভিয়েতনামের নেতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে। এখন তারাও আশা করে, শিকে যথোচিত সম্মান করবে ভিয়েতনাম।’
এই দক্ষিণপূর্ব এশিয়া বিশেষজ্ঞের বক্তব্য, ‘চীন সবসময়ই ভিয়েতনামের সাথে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়। ভিয়েতনামও সমমনোভাবাপন্ন দেশ। তাই ভিয়তনাম চীনের কাছে বাড়তি গুরুত্ব পায়।’
চীনের উদ্বেগের কারণ আছে
আবুজা বলেন, ‘চীন একই সাথে ভিয়েতনামকে নিয়ে কিছুটা অখুশি। কারণ, ভিয়েতনাম এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সঙ্গীদের সাথেও সম্পর্ক ভালো করছে। গত সেপ্টেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভিয়েতনাম সফর করেছেন। তখন ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি, সহযোগিতা ও উন্নয়নের জন্য কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি সই হয়েছে।’
এর ফলে ভিয়েতনাম তাদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে। চীন, ভারত, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানও তাদের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার।
চীনের কক্ষপথে থাকতে চায় না ভিয়েতনাম
চ্যাথাম হাউসের এশিয়া-প্যাসিপিক প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত বিল হেইটন জানিয়েছেন, ‘নিজেদের স্বাধীন সত্তা বজায় রাখতেই ভিয়েতনাম অন্যদের সাথে সম্পর্ক আরো বাড়িয়েছে।’
তার মতে, ‘চীন বিশাল বড় দেশ। কিন্তু ভিয়েতনাম চীনের কক্ষপথে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না। তারা এশিয়ার দেশগুলো ও চীনের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আবার তারাই যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের সাথেও সম্পর্ক ভালো করছে। এভাবেই তারা সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিজেদের স্বাধীন মনোভাব দেখাচ্ছে।’
বাণিজ্যিক সম্পর্ক
চীনের সাথে ২০০৮ সালে ভিয়েতনামের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি হয়েছিল। চীনই হলো ভিয়েতনামের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ২০২১ সালে দু’দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের বাণিজ্যের পরিমাণ একই বছরে ছিল ১১ হাজার কোটি ডলার।
শি ও ভিয়েতনামের নেতাদের মধ্যে আলোচনায় বাণিজ্য খুবই গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন ইউসফ ইশাক ইনস্টিটিউটের গবেষক নুয়েন খাক জিয়াং। তিনি বলেন,শি-এর এই সফরের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব খুব বেশি। আর এই সফরের ফলে দু’দেশের সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হবে।’
তবে তিনি আরো বলেন, ‘চীনের নেতৃত্বাধান রাজনৈতিক উদ্যেগে যোগ দেয়া নিয়ে ভিয়েতনাম খুবই সাবধানে পা ফেলবে। দু’দেশই আর্থিক সহযোগিতার ওপরেই জোর দেবে। ভিয়েতনাম চাইবে, চীন তাদের দেশে আরো বিনিয়োগ করুক।’ সূত্র : ডয়চে ভেলে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।