মোহাম্মদ আসিফ : ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন মূলত ইন্টারনেট ও ডিভাইসের মধ্যে নিরাপদ যোগাযোগ পথ তৈরি করে থাকে। ফলে ওয়েবসাইট ভিজিট থেকে শুরু করে কনটেন্ট স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার (আইএসপি), হ্যাকার ও সরকারি নজরদারি থেকেও সুরক্ষিত থাকা যায়। প্রযুক্তি বিশারদদের মতে, এটি অনলাইন কার্যক্রমের সুরক্ষা নিশ্চিতে অদৃশ্য একটি চাদর।
কিন্তু স্মার্টফোনে কেন ভিপিএন ব্যবহার জরুরি বা প্রয়োজন সেটি নিয়ে ব্যবহারকারীরা দ্বিধায় রয়েছেন। যে কারণে প্রযুক্তি বিশারদরা ভিপিএন ব্যবহারে বেশ কিছু সুবিধার কথা জানিয়েছেন।
জিও ব্লকিং বন্ধ করা: এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে অনেক সময় পছন্দের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যায় না। মূলত জিও ফেন্সিংয়ের কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে। এটি এমন একটি পদ্ধতি বা সিস্টেম যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য কোনো সার্ভিস বা ওয়েবসাইটে প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এসব ক্ষেত্রে ভিপিএন সহায়ক। এর মাধ্যমে ঠিকানা পরিবর্তনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা কনটেন্টে প্রবেশ করা যায়।
পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা: বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, ক্যাফেটেরিয়াসহ, বিমানবন্দরে ফ্রি ওয়াই-ফাই থাকে। তবে এসব নেটওয়ার্কে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি রয়েছে। হ্যাকাররা সহজেই এসব নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত হামলা থেকে সুরক্ষা দেয় ভিপিএন।
ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বৃদ্ধি: ট্র্যাকিংয়ের কারণে বর্তমানে অনলাইনে কোনো কিছু সার্চ করলে সে-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। এদিক থেকে অনলাইনে ব্যবহারকারীর আইপি ঠিকানা সুরক্ষিত রাখে ভিপিএন।
সংবেদনশীল তথ্যের সুরক্ষা: রিমোট ওয়ার্ক থেকে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে প্রবেশ করা বা ব্যক্তিগত তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ভিপিএন আলাদা নিরাপত্তা স্তর তৈরি করে থাকে। ভিপিএন সব তথ্যকে এনক্রিপ্টেড রাখে। ফলে তথ্য চুরি বা অনধিকার প্রবেশের মতো ঘটনা থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়।
নতুন উদ্ভাবনের বিষয়ে জানা: প্রযুক্তি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। তবে অনেক সময় অঞ্চলভেদে উন্নত টুল বা পরিষেবা পেতে দেরি হয়। এক্ষেত্রে ভিপিএন সহায়ক। এর মাধ্যমে যে অঞ্চলে প্রযুক্তি বা পরিষেবা এসেছে, সেখানে যুক্ত হয়ে বেটা ভার্সন ব্যবহার করা যাবে।
কনটেন্ট স্ট্রিমিংয়ে সহায়তা: গেমসহ বিভিন্ন কনটেন্টের জন্য স্ট্রিমিং সাইটগুলো অঞ্চলভেদে আলাদা ফিচার দিয়ে থাকে। এদিক থেকে ভিপিএনের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে স্ট্রিমিং পরিষেবায় বিভিন্ন ফিচার ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে থাকে।
বাজারে থাকা সব ভিপিএনই যে ভালো পরিষেবা দেবে তা নয়। ব্যক্তিভেদে ভিপিএন বাছাই নির্ভর করে। এজন্য ভিপিএনের নিরাপত্তা ফিচার, গোপনীয়তা নীতিমালা, সার্ভার নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেটের গতি ও সক্ষমতা এবং ব্যবহারকারীর জন্য কতটা সহায়ক এসব বিষয়ও নির্ভর করে। প্রশ্ন রয়েছে ভিপিএন ব্যবহার করা কি আসলেই সহায়ক। এদিক থেকেও প্রযুক্তিবিদরা বেশকিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে ফিচার, সার্ভার, নেটওয়ার্কের গতি, তথ্যের নিরাপত্তার মতো বিষয় রয়েছে।
ফ্রি ভিপিএনে সব ফিচার থাকে না। নির্দিষ্ট কিছু সার্ভার ও গতিও সীমিত থাকে। এমনকি তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কাও থাকে বলে সতর্ক করেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে পেইড সফটওয়্যার ব্যবহারের কথাও জানিয়েছেন তারা। এ ভার্সনে নেটওয়ার্ক সার্ভার থেকে শুরু করে, ইন্টারনেটের গতি বেশি থাকে। এছাড়াও ব্রাউজিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্যও সুরক্ষিত থাকে।
ভিপিএন ব্যবহার করলেই যে শতভাগ নিরাপদ থাকা যাবে বিষয়টি তা নয়। এটি ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ও সুরক্ষার স্তর বাড়িয়ে থাকে। প্রযুক্তি বিশারদদের মতে, অবস্থান, পরিস্থিতি ও ব্যক্তিভেদে ভিপিএনের ব্যবহার নির্ভর করে। এ কারণে ভিপিএন পছন্দের ক্ষেত্রে কোম্পানির পরিচিতি, অবস্থান, ফিচার ও সুরক্ষা স্তরের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন। গিজচায়না অবলম্বনে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।