আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, ইসরাইল ফিলিস্তিনের গাজায় ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী তাণ্ডব হঠাৎ করে থামাতে বাধ্য হল যুদ্ধ-বিরতি মেনে নেয়ার মাধ্যমে, অথচ এ যুদ্ধে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এমনটি অনুভব করলে তেলআবিব কখনও যুদ্ধ থামাতো না।
গতকাল ইরানের স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী বাসিজ-এর এক সমাবেশে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন। সালামি বলেছেন, ইসরাইলের অক্ষমতা ও ব্যর্থতা আজ স্পষ্ট, তাই ইসরাইল যদি তার ভুলগুলো থেকে শিক্ষা না নেয় এবং আবারও ভুল করে তাহলে সে আরও বড় ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হবে। তিনি বলেছেন, ‘ইসরাইল তার দুর্গগুলো থেকে গাজার খোলা ময়দানে নেমে এসে যুদ্ধ শুরু করে ভুল করেছে, ফলে তাকে এ পর্যন্ত হারাতে হয়েছে ৩০০’রও বেশি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান! শত্রুরা ভেবেছিল শিশু, নারী ও নবজাতক শিশুদের হত্যা করে তারা বিজয়ের পতাকা উড়াবে এবং তাদের কাছে বিজয়ের সংজ্ঞা কেবল এটাই যে প্রতিরক্ষাহীন অসহায় বেসামরিক লোকদের ধ্বংসস্তূপের নিচে সমাধিস্থ করা!’
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে (সুরা হাশর, আয়াত নম্বর ২) ইহুদিরা ভেবেছিল শক্তিশালী দুর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহ থেকে তথা খোদায়ি শাস্তি থেকে রক্ষা করবে কিন্তু তাদের ওপর আল্লাহর শাস্তি এমন দিক থেকে আসল যে দিক থেকে তা আসবে বলে তারা কখনও কল্পনাও করেনি, আল্লাহ তাদের অন্তরে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছেন ফলে তারা নিজ হাতে নিজেদের বাড়িঘর ধ্বংস করছিল এবং মুমিনদের হাতে… এই আয়াতের দিকে ইঙ্গিত করে জেনারেল সালামি আরও বলেছেন, ইসরাইলও তাদের সুরক্ষিত দুর্গগুলোকে পেছনে রেখে ময়দানে নেমে এসেছে ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কোনো প্রাচীর বা ব্যারিকেড না রেখেই এবং তারা সঙ্গে নিয়ে এসেছে ১৬০০ ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান যাতে সেসব নিজ হাতেই ধ্বংস হয়!
কিন্তু যখন ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের কাছাকাছি হল তখন তারা সংকটের মধ্যে পড়ল। তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দেখতে পায় না কিন্তু ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ঠিকই তাদের দেখতে পায় এবং এভাবে ট্যাংক ও অদৃশ্য ভুতের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হল এবং এ পর্যন্ত তারা ৩০০’রও বেশি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস হয়েছে। এ অবস্থায় ইসরাইল বুঝতে পেরেছে যে যুদ্ধ অব্যাহত রাখলে তাদের যুদ্ধের মেশিন নিশ্চিতভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।
জেনারেল সালামি আরও বলেছেন, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলে লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ ইসরাইলকে ব্যস্ত রেখেছে এবং ইসরাইল পশ্চিম তীরেও সংকটের শিকার হয়েছে। ইসরাইলিরা দিনরাত আতঙ্কের মধ্যে কাটাচ্ছে যেমনটি কুরআনে তাদেরকে ভীরু বা ভীত-সন্ত্রস্ত বলা হয়েছে।
জেনারেল সালামি গাজার যুদ্ধকে সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এ যুদ্ধে ইসরাইলের সহযোগী হয়েছে মার্কিন, ফরাসি, ব্রিটিশ ও জার্মান সরকারসহ একদল মুনাফিক শক্তি যে মুনাফিক শক্তিগুলোকে আমরা চিনি, কিন্তু তারা সবাই পরাজিত ও হতাশ হয়েছে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান আরও বলেছেন, ‘গাজার যুদ্ধ প্রমাণ করেছে যে দাম্ভিক শক্তিগুলো ও আমাদের শত্রুরা আমাদের ধারনার চেয়েও অনেক বেশি ধ্বংসের কাছাকাছি। ফিলিস্তিনিরাই যে জয়ী হবে সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত, কারণ এ পর্যন্ত তারাই বিজয়ের ধারায় রয়েছে। ফিলিস্তিনি পিতা বা অভিভাবকরা তাদের শহীদ শিশু সন্তানের লাশ হাতে নিয়ে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে, আর এমন একটি জাতিকে কখনও শত্রুরা হারাতে পারবে না।’
ইরানের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও লেবাননের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহও দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলে আসছেন ফিলিস্তিনিরাই বিজয়ী হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।