জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক দরিদ্র মায়ের সন্তান রাজুর দুটো কিডনিই প্রায় অকেজো হয়ে গেছে। তবে একটি কিডনি হলেও বাঁচতে পারে রাজুর জীবন। বরের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে শুনে নববধূ শারমিন বাপের বাড়িতে চলে গেছেন। দুই মাস যাবত স্বামীর বাড়িতে আসছেন না শারমিন। আর ছেলেকে বাঁচাতে আকুতি জানিয়েছেন মা।
এমন ঘটনা ঘটেছে নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পংকরহাটি গ্রামে।
জানা গেছে, অসুস্থ রাজু মিয়া ওই গ্রামের হতদরিদ্র হারুন মিয়া ও রোজিনা আক্তারের পুত্র। ৪ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে ভাইদের মধ্যে রাজু দ্বিতীয়। তারা সবাই কাঠমিস্ত্রি বা বার্নিশের মজুরি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। রাজুর বাবা হারুন মিয়া শারীরিক অক্ষম কোনো কাজ করতে পারেন না। তিন শতাংশের ভিটে-মাটিটুকুতেই দুচালা টিনের ঘরে অতিকষ্ট করে সংসার চলে তাদের।
তবে রংয়ের কাজ করে সংসারের বেশির ভাগ হাল ধরত রাজু একাই। অন্যান্য ১০ জনের মতো সুস্থতার সহিত ভালোভাবেই দিন কাটছিল তার। ছেলের সুখের কথা চিন্তা করে গত ৩০ অক্টোবর পার্শ্ববর্তী পাঁছগয়েশপুর গ্রামের শামীম মিয়ার কন্যা শারমিন আক্তারের (২০) সঙ্গে দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে রাজুর কাবিননামা করে বিয়ে হয়।
পরে ১০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে শারমিনকে রাজু মিয়া তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন। বাড়িতে আনার পর সুখেই কাটছিল তাদের দাম্পত্য জীবন; কিন্তু হঠাৎই রাজু অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে তার দুটো কিডনিই প্রায় অকেজো।
সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালিসিস করতে খরচ লাগে ৬-৭ হাজার টাকা। কিন্তু স্বামীর কিডনি দুটি নষ্ট হওয়ার খবর শুনে নববধূ শারমিন আক্তার একদিনের জন্য বাপের বাড়ি গিয়ে আর আসেনি। এর মধ্যে রাজু মিয়ার পিতা কয়েকবার তাকে আনতে গেলেও শারমিন আসেননি। শারমিনের পিতা-মাতার অভিযোগ রাজুর অসুস্থতার বিষয়টি গোপন রেখে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাকে বিয়ে করানো হয়েছে।
রাজু মিয়া জানান, আমি আমার অসুস্থতার বিষয়ে কোনো টের পায়নি। পরে জানতে পারলাম।
রাজুর বাবা হারুন মিয়া জানান, ছেলের অসুস্থতার বিষয়টি আমরাও জানতাম না। এছাড়া শারমিন এখনো তার ছেলেকে ডিভোর্স দেয়নি।
রাজুর মা রোজিনা আক্তার রাজুর কথা বলতে গিয়ে মানিসকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। এরপরও বলেন, রাজু আমার খুব কর্মঠ ছেলে। কিন্তু অসুস্থতার বিষয়ে তিনি কখনও জানতে পারেনি। একি রোগ হলো, আর চিকিৎসার জন্য এত টাকা কোথায় পাব? আমার ছেলেকে বাঁচাতে চাই।
এদিকে প্রতিদিন কাজ না করলে চলে না সংসার। এ পর্যন্ত গরু বিক্রি করে ও ঋণ করে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচা করা হয়েছে রাজুর চিকিৎসায়। তাই অসুস্থ ছেলেকে বাঁচাতে সরকারের সহযোগিতাসহ সমাজের দয়াবান বিত্তশালীদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন হতভাগা সন্তান রাজু ও তার মা রোজিনা আক্তার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।