সোমবার (২৮ জুলাই) রাত থেকে হঠাৎ করেই ফেসবুক টাইমলাইনে চোখে পড়ছে একই ধরনের একটি পোস্ট। পোস্টটি শুরু হয় এভাবে—‘এই মর্মে ঘোষণা করছি…’, যেখানে ব্যবহারকারী জানান যে, তিনি মেটা বা ফেসবুককে নিজের কোনো ব্যক্তিগত ছবি, তথ্য বা কনটেন্ট ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছেন না।
পোস্টটি দেখে অনেকেই ভাবছেন, ফেসবুক কি সত্যিই তাঁদের তথ্য ব্যবহার করছে? এই পোস্ট দিলে কি তা বন্ধ হয়ে যাবে? আসুন, বিষয়টি পরিষ্কার করে জেনে নেওয়া যাক।
মেটার (ফেসবুক) নীতিমালায় কী বলা আছে?
মেটা (Meta) অর্থাৎ ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান তাদের টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, ব্যবহারকারীর তথ্য তাদের কাছে সুরক্ষিত থাকে।
- কোনোরকম অনুমতি ছাড়া কারও নাম, ইমেল বা ফোন নম্বর তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে ভাগ করা হবে না।
- অ্যাকাউন্ট তৈরির সময় আপনি যে শর্তে সম্মতি দেন, সেটিই কার্যকর হয়।
অতএব, ভাইরাল হওয়া পোস্টটি আইনি বা ব্যবহারিক দিক থেকে একেবারেই ভিত্তিহীন।
এই পোস্টের উৎস কোথায়?
এই ধরনের পোস্টের উৎস কোথা থেকে এসেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে এটাই প্রথমবার নয়। এমন ধরনের পোস্ট ২০১2, ২০১৬ ও ২০১৯ সালেও ভাইরাল হয়েছিল। মূলত বছরের কোনো সময় বা নতুন কোনো আপডেট এলেই কিছু ভুয়ো বার্তা ঘুরে ফিরে ভাইরাল হয়।
এমন পোস্ট শেয়ার করে কোনো লাভ হয়?
না। এই পোস্টগুলো ফেসবুক বা মেটার তথ্য নীতিতে কোনো প্রভাব ফেলে না। ফেসবুকের তথ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয় তাদের নির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুযায়ী, এবং আপনি ফেসবুক ব্যবহার করার সময়েই তা মেনে নিচ্ছেন।
এমন পোস্ট শেয়ার করলে:
- কারও তথ্য সুরক্ষা বাড়ে না।
- উল্টো বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
- অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক ছড়ায়।
তাহলে তথ্য ফাঁসের সম্ভাবনা নেই?
সম্পূর্ণভাবে না বললেও, মেটার নিরাপত্তা নীতিমালা বেশ শক্ত। তবে ২০১৮ সালে একটি তথ্য ফাঁসের ঘটনায় মেটা সমালোচনার মুখে পড়ে। সেই সময় মার্ক জুকারবার্গ বিষয়টি নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন। সেই ঘটনার পর থেকেই মেটা তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত করেছে।
কী করা উচিত ব্যবহারকারীদের?
যেহেতু ফেসবুকের শর্তাবলী ইতোমধ্যেই তথ্য ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে, তাই এমন পোস্ট শেয়ার না করাই ভালো। বরং:
- আপনার প্রাইভেসি সেটিংস যাচাই করুন।
- কার সঙ্গে আপনি ছবি, তথ্য বা লোকেশন শেয়ার করছেন, তা দেখে নিন।
- সন্দেহজনক লিংক বা ফেক পোস্ট এড়িয়ে চলুন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হঠাৎ করে ছড়িয়ে পড়া ‘এই মর্মে ঘোষণা করছি…’ টাইপের পোস্টগুলোর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এটি শুধু মাত্র একটি সামাজিক ট্রেন্ড, যা প্রতি বছরই ফিরে আসে।
আপনি যদি সত্যিই নিজের তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হন, তবে ফেসবুকের সেটিংস ঘেঁটে প্রাইভেসি কনট্রোল করুন এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো কিছু শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
ভবিষ্যতে এমন কোনো ভাইরাল পোস্ট দেখলে আগে গুগলে সার্চ করুন বা নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যমে তথ্য যাচাই করুন। সচেতন থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।