জুমবাংলা ডেস্ক : মোটরসাইকেলসহ কোনো ধরনের যানবাহনই বিমা ছাড়া রাস্তায় চলতে পারবে না। এ–সংক্রান্ত সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮–এর সংশোধনের কাজ চলছে চার মাস ধরে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উদ্যোগের পর আইন সংশোধনের মূল দায়িত্ব এখন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের। বিভাগটি ইতিমধ্যে আইন সংশোধনের খসড়া তৈরি করেছে।
জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনের আগে এ আইন সংশোধনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে না বলে উভয় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলে আসছিল। তবে বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, ‘খসড়া তৈরি আছে। সব গোছানো শেষ। এটা এখন মন্ত্রিসভার বৈঠকে যাবে।’ কবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠতে পারে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেকোনো দিন পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভা থেকে পাস হয়ে এলে পরীক্ষার-নিরীক্ষার জন্য তা যাবে আইন মন্ত্রণালয়ে।’
আইন সংশোধন হলে মোটরসাইকেল, যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত ও অফিশিয়াল গাড়ি, ট্রাকসহ কোনো ধরনের যানবাহনই বিমা ছাড়া সড়কে চলাচল করতে পারবে না। চলাচল করলে জরিমানা গুনতে হবে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। মামলাও করতে পারবে পুলিশ। যান চলাচলে আগেও বিমা করা বাধ্যতামূলক ছিল। ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইন করে তা তুলে দেওয়া হয়।
কেন আইন সংশোধন হচ্ছে-
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় বিমা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিমা ছাড়া যানবাহন চলাচল করতে না পারে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী ওই দিন বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে দেখব যে যথাযথ বিমা ছাড়া সড়কে কোনো যানবাহন যেন না চলে।’ প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকেই আইন সংশোধনের ভিত্তি হিসেবে নেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫৬ লাখ ৬১ হাজার ৪১৮টি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানায়, বিমা করা বাধ্যতামূলক না থাকায় এগুলো থেকে প্রতিবছর কর ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাবদ ৮৪৯ কোটি টাকা ও স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ২৮ কোটি টাকা অর্থাৎ ৮৭৮ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত থাকছে সরকার।
বিদ্যমান আইনে শাস্তি নিয়ে বিভ্রান্তি-
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সড়ক পরিবহন আইনে যানবাহনের যাত্রীর জন্য বিমা করাকে বাধ্যতামূলকের পরিবর্তে ঐচ্ছিক করা হয়েছে। আইনের আরেক উপধারায় ‘যথানিয়মে বিমা করবেন’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে তা লঙ্ঘন করলে কোনো শাস্তির বিধান রাখা হয়নি।
যদিও বিদ্যমান আইনের ৯৮ নম্বর ধারায় শাস্তির বিধানের কথা বলা আছে। কিন্তু এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। বিভ্রান্তি দূর করতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্র জারি করে বলেছে, আইনের তিনটি উপধারা অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষের ঝুঁকি বিমা বাধ্যতামূলক নয় এবং কেউ কোনো ধারা লঙ্ঘন করলে মোটরযান বা মোটরযানের মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার সুযোগ নেই। পুলিশের মহাপরিদর্শককেও (আইজিপি) বিষয়টি জানিয়েছে বিআরটিএ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।