আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবে নতুন নতুন স্টার্টআপগুলো বদলে দিচ্ছে সেখানকার ব্যবসার চিত্র৷ এগুলো অর্থনীতিটিকে জ্বালানি তেলের মোড়ক থেকে বেরিয়ে নতুন ব্র্যান্ডিংয়ের যেমন সুযোগ দিচ্ছে, তেমনি তৈরি করছে কাজের সুযোগ৷
এই মুহূর্তে সৌদি অর্থনীতিকে এর নিত্য নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ এবং এগুলোর নারী উদ্যোক্তাদের ছাড়া ভাবাই যায় না৷ কিন্তু এক দশক আগেও তা ভাবাই যেত না৷
এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রিয়াদ ভিত্তিক নারী উদ্যোক্তা মাহা শিরাহ বলেন ‘স্টার্ট আপ কোম্পানির জন্য বলতে গেলে কোনো পরিবেশই ছিল না৷’
তিনি রিয়াদের প্রথম নারী উদ্যোক্তাদের একজন৷ নারীদের জন্য ব্যবসায়িক উদ্যোগ নেয়া আরো কঠিন ছিল৷ ২০১৪ সালে শিরাহ প্রথম শুধু নারীদের জন্য কর্মস্থল তৈরি করেন৷
তখনো বিভিন্ন শিল্পে নারীদের অংশগ্রহনের ব্যাপারে বিধিনিষেধ যথেষ্ট কড়া ছিল৷ দশ বছর পর সৌদি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নারীদের জন্য কর্মস্থলের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে৷ সেখানে নেতৃত্বে আছেন নারী উদ্যোক্তারা৷
২০২১-২০২২ সালের সৌদি আরবের নারী বিষয়ক এক প্রতিবেদন বলছে, ৯৫ ভাগ সৌদি নারী উদ্যোক্তা হতে চান৷
শিরাহ বলেন, ‘আমার মনে আছে, ২০১৭ সালের আগে স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উদ্যোক্তা বিষয়ক কোর্স খুবই কম ছিল৷’
তিনি বলেন, ব্যবসা হয় আগে শুধু ধনীদের বিষয় ছিল, অথবা এটি নিয়ে একটি ভ্রান্ত ধারণা ছিল৷
সরকারের কিছু উদ্যোগের কারণে এখন নারীরা বা যে কেউ ভালো একটা আইডিয়া নিয়ে উদ্যোক্তা হতে পারবেন৷ যেমন, এই মার্চেই দেশটির টেক সামিট লিপ২৪-এ প্রায় বারো শ’ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগের রেকর্ড হয়েছে৷ শিরাহ মনে করেন, সৌদি আরবের এই খাতটি বড় হচ্ছে৷
আরেক সৌদি উদ্যোক্তা মারিয়াম মোসাল্লির এনজিও ‘আন্ডার দ্য আবায়া’ নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করেন৷ তিনি বলেন, উদ্যোগগুলোকে পরামর্শ দেয়াও নতুন উদ্যোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ২০২৪ সালে তিনি সি-সুইট অ্যাডভাইজরি প্রতিষ্ঠা করেন৷ এটি একটি ব্যবসা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান৷ নারী নেতৃত্বাধীন আরো কয়েকটি উদ্যোগেও তার বিনিয়োগ আছে৷
‘‘একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে আমি জানি আমাদের সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আসে,” ডয়চে ভেলেকে বলেন তিনি৷
জার্মান সেন্টার ফর অ্যাপ্লায়েড রিসার্চের জ্যেষ্ঠ গবেষক সেবাস্টিয়ান সন্স এ বিষয়ে বলেন, ‘বহু বছর ধরে সৌদি উদ্যোক্তরা ব্যর্থ হবার ভয় পেতেন৷ এটা এখন বদলাচ্ছে৷ কারণ অনেক তরুণ বুঝতে পেরেছেন, ব্যর্থতা ব্যবসা উদ্যোগের অংশ৷’
এদিকে, সৌদি সরকারও নতুন উদ্যোগগুলোকে অনুপ্রাণিত করছে৷
সন্স বলেন, ‘মূল কথা হলো অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনা৷ কারণ সরকারি খাত চাহিদামতো চাকরির যোগান দিতে পারছে না৷ তাই ব্যক্তিখাতকে মজবুত করা দরকার৷’
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ক্ষমতা ধরে রাখার একটা কৌশল বলেও মনে করেন তিনি৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।