জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েব সিরিজ কিংবা নাটক-সিনেমায় সফট প‘র্নোগ্রাফির মতো যেসব কন্টেন্ট রয়েছে, সেগুলোতে অশ্লীলতার চেয়ে নারীর প্রতি নির্যাতন বা অপমানসূচক উপাদানই বেশি রয়েছে বলে গবেষণা উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেটে প’র্নোগ্রাফির সহজ বিস্তার এবং নারীর প্রতি সহিংসতা’ শীর্ষক গবেষণায় এই ফলাফল তুলে ধরা হয়। গবেষণাটি করেছে ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’। দেশের আটটি বিভাগের ১৬টি জেলায় ৫১৮ জন বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একদিকে যেমন দেশীয় অনলাইন ও মিডিয়ায় নারীর প্রতি অবমাননাকর, নারীর অশালীন দেহ প্রদর্শন, যৌ’ন আবেদনময় ও প’র্নোগ্রফিক কনটেন্ট বাড়ছে, অপরদিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে কিছু মেয়ে বা নারী ছেলেদের বা পুরুষদের প্রলুব্ধ করে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টাও করছে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শতকরা ৮২ জন (নারী ৪০ ও পুরুষ ৪২) জনমানুষ মনে করে, যেসব প’র্নোগ্রাফি কনটেন্ট দেশীয়ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, সমাজে সেগুলোর প্রভাব ও বিস্তার খুব বেশি। আর এখানে দেশীয় প’র্নোগ্রাফিতে অশ্লীলতার চেয়েও বেশি প্রাধান্য পায় নারীর প্রতি নির্যাতন ও অপমান। এছাড়া সমাজে মেয়েদের প্রতি সহিংস ও নির্যাতনমূলক আচরণ বেড়েছে বলে তারা মনে করেন।
গবেষণায় বলা হয়, স্বাধীনচেতা মেয়েদের খারাপ মনে করেন শতকরা ৮১ জন মানুষ। মেয়েদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য ও বাজে ধারণা রাখেন শতকরা ৩৯ জন নারী ও ৪২ জন পুরুষ।
নারী সম্পর্কে নেটদুনিয়াতে যেসব অবমাননাকর কনটেন্ট প্রচারিত হচ্ছে এবং যারা তা দেখছে বা গ্রহণ করছে, তাদের বক্তব্যের পরিপেক্ষিতে গবেষণায় বলা হয়, বাংলা ভিডিওতে অশ্লীল গল্প বলা, যৌ’নপল্লী থেকে সরাসরি, অশ্লীল খবর ও গল্প, বাংলা ইমোতে ভিডিও সে’ক্স, ওয়েব সিরিজগুলোতে অশ্লীলতা, বাংলা যৌ’ন কামনা উদ্রেককারী ব্লক, বাংলা ইমো ভিডিও সে’ক্স প্রমোশন, রিয়াল অ্যান্ড ভার্চুয়াল সে’ক্স সার্ভিস গ্রুপস ইন ফেসবুক, ইমো সে’ক্স সার্ভিস কাস্টমার ফেসবুক অ্যান্ড অথিনটিকেশন ইত্যাদি মাধ্যমগুলোতে নারীদের প্রতি এই মনোভাব প্রকাশ পায় বেশি।
অনলাইনে নারীর অবমাননাকর যে ইমেজ দেখানো হয়, তা সমাজে প্রচলিত ‘মন্দ মেয়ের’ ইমেজকে আরও শক্তিশালী করে বলে দাবি করা হয় গবেষণাপত্রে। সেখানে বলা হয়, সমাজে ‘ভালো’ ও ‘মন্দ’ মেয়ে আছে, এটা বিশ্বাস করেন শতকরা ৭৯ জন উত্তরদাতা। শতকরা ৫২ জন মানুষ মনে করেন, মেয়েদের মিডিয়ায় সিনেমায় কাজ করা, পুরুষের সঙ্গে রাতের শিফটে কাজ করা বা দূর-দূরান্তে একসঙ্গে ভ্রমণ বা কাজে যাওয়া ঠিক নয়। এরমধ্যে শতকরা ২১ জন নারী ও ৩১ জন পুরুষ।
গবেষণা উপস্থাপন অনুষ্ঠানটি মডারেট করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। বক্তব্য রাখেন প্রফেসার ড. শাহনাজ হুদা, রেহনুমা ই জান্নাত ও সিনিয়র সাংবাদিক নওরোজ ইমতিয়াজ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।